বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:৪৬:১৪

নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত, ধানের শীষের কে?

নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত, ধানের শীষের কে?

শাহ্‌ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোন খুরশিদ জাহান হকের দিনাজপুর-৩ আসনটি। দিনাজপুর সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জেলার রাজনীতির মেরুদণ্ড। আগামী নির্বাচনে কে হচ্ছেন কোন্‌ দলের প্রার্থী তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

অবশ্য স্থানীয় পর্যায়ে গুঞ্জন রয়েছে, প্রয়াত বড় বোনের নির্বাচনী এলাকা দিনাজপুর-৩ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দু’বার এই আসন থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন তার বড় বোন বেগম খুরশিদ জাহান হক। তিনি ২০০৬ সালে মারা যান। বোনের আসনে খালেদা জিয়ার প্রার্থী হওয়া নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও দলের শীর্ষ নেতারা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না।

দিনাজপুরের ছয়টি আসনের অর্ধেকই বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। গত দশম নির্বাচনে তারা অংশ না নেয়ায় সবক’টি আসন এখন আওয়ামী লীগের দখলে। তারপরও জেলার আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দিনাজপুর-৩। বর্তমানে এ আসনে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি পর পর দু’বার নির্বাচিত হয়েছেন।

আগামী নির্বাচনেও তার এ আসন থেকেই দলীয়ভাবে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সংবিধান প্রণেতা সাবেক এমপি মরহুম এম আব্দুর রহিমের ছেলে তিনি। এলাকায় উন্নয়নের দিক দিয়ে ইকবালুর রহিমের সুনাম রয়েছে।

দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এসব কারণে তার বিকল্প নেই এ আসনে। এমনটাই মনে করছেন দলের হাইকমান্ড। তবে অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বজলুল হক, যুগ্ম সম্পাদক মীর্জা আশফাক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেলও এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন।

খুরশিদ জাহান হকের মৃত্যুর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে নির্বাচন করেন বেগম খুরশিদ জাহান হক চকলেট। বিএনপি ও জোটের এই দুই প্রার্থীই মারা গেছেন।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, দুই নেতার মৃত্যুর কারণে আগামী নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থী না হলে এখানে জয়ের সম্ভাবনা কম। তাই তারা চাচ্ছেন খালেদা জিয়া এই আসন থেকে প্রার্থী হোন।

চেয়ারপারসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী একজন সর্বোচ্চ তিনটি আসন থেকে নির্বাচন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ফেনী-১ ও বগুড়ার যে কোনো একটি অথবা দু’টি থেকে নির্বাচন করার সম্ভাবনা বেশি খালেদা জিয়ার। তাই দিনাজপুর থেকে নির্বাচন করার সম্ভাবনা নেই তার।

তবে বিকল্প হিসেবে সাবেক মন্ত্রী মরহুম বেগম খুরশিদ জাহান হকের বড় ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক ডন এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের নাম শোনা যাচ্ছে।

দিনাজপুর থেকে বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন করলে সেটা ইতিবাচক হবে বলেই মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের যদিও এখনো অনেক দিন বাকি। তারপরও আলোচনায় নির্বাচন। আর বেগম খালেদা জিয়া প্রতি নির্বাচনেই একাধিক আসন থেকে নির্বাচন করেন। সামনের দিনেও হয়তো করবেন। সে ক্ষেত্রে নেতাকর্মীরা হয়তো প্রত্যাশা করেন তিনি দিনাজপুর থেকে নির্বাচন করুন। এমন সিদ্ধান্ত হলে সেটা অবশ্যই খুশির খবর।’

মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দিনাজপুর থেকে খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন কি-না সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।’

এদিকে বর্তমান জোট সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা জাপা’র সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শফি রুবেল। গত নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু পরে প্রত্যাহার করে নেন তার মনোনয়ন। এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে