রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:২৯:১৪

মা পরকীয়ায় জড়িত, ছেলের অভিযোগ অস্বীকার করে যা বললেন মা

মা পরকীয়ায় জড়িত, ছেলের অভিযোগ অস্বীকার করে যা বললেন মা

বগুড়া থেকে : শিক্ষিকা মা পরকীয়ায় জড়িত। সতর্ক করার কারণে ছেলে-বাবাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে- গত ২১ নভেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেছিলেন ওই শিক্ষিকার ছেলে মো: সিহাব।

সেদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তার ছেলে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়েছে দাবি করে রোববার বিকালে বগুড়া প্রেসক্লাবে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মা সাফিয়া সুলতানা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শীতলাই দাখিল মাদ্রাসার এই শিক্ষিকা বলেন, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করে সমাজের মানুষের চোখে দোষী সাব্যস্ত করতেই এমন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি একজন শিক্ষক। ২২ বছর আগে ফাঁপোর গ্রামের আব্দুল খালেকের সাথে আমার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে আমাদের একটি ছেলে রয়েছে। যার বয়স ১৮ বছর। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্নভাবে আমি স্বামী দ্বারা নির্যাতনের শিকার। কারণে-অকারণে স্বামী আমাকে মারপিট করতো। তারপরও ধৈর্য ধারণ করে সংসার করে আসছিলাম।

শিক্ষিকা বলেন, খালেক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সুদের উপর টাকা ধার নিয়ে আত্মগোপন করে থাকতো পাওনাদারদের ভয়ে। তখন লোকজন এসে খালেককে না পেয়ে আমাকে টাকার জন্য চাপ দিতো। কখনো কখনো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো তারা। খালেক ৪৭ শতক জমি লিখে দিয়ে সে আমার নামে ৫ লাখ টাকার সিসি ঋণ গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, আমি সেই ঋণ শোধ করার জন্য জমিটি বিক্রি করেছি। এছাড়া আরো ৩ লাখ টাকার অন্য পাওনাদাররা তার অনুপস্থিতিতে আমার উপর চাপ দিত। আবার এসব বিষয়ে বললে খালেক আমার উপর নির্যাতন করতো। এসব সইতে না পেরে ৬/ ৭ বছর আগে তাকে আমি ডিভোর্স দেয়। পরে খালেক আবারো আমার সাথে যোগাযোগ করে আগের ভুল শুধরে নিয়ে সংসার করতে চায়।

সাফিয়া সুলতানা বলেন, পাওনাদরদের টাকা পরিশোধসহ সে ভালোভাবে জীবনযাপন করবে মর্মে আমি তার সাথে আবারো সংসার করতে রাজি হই। আবার সংসারে আসার পর খালেক তার আগের আচরণ শুরু করে। বিভিন্নভাবে সে প্রতারণা করতে থাকে এবং আমাকে ৫ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় সে আমার উপর নির্যাতন শুরু করে।

শিক্ষিকা বলেন, আমি বাধ্য হয়ে নিজের আত্মসম্মান বাঁচাতে তাকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তালাকে তাফাউল প্রদান করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমি খালেকের সব নিযাতন সহ্য করে সংসার করতে চেয়েছিলাম শুধু সন্তানের দিকে চেয়ে। সিহাব আমার সন্তান, অথচ আজ সে বখাটে ছেলেদের পাল্লায় পড়ে বিপথগামী।

সিহাবের মা বলেন, এসএসসি পাশের পর তাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে ঢাকায় ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু সে পড়াশোনা শেষ না করেই ফিরে এসে বিদেশ যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। সে কোনো কথাই শুনতো না। সেও মাঝে মাঝে রাত করে বাড়ি ফিরে। প্রতিবেশীরা বলে যে আমার ছেলে শিহাব নেশাগ্রস্ত। আমিও সেটা ধীরে ধীরে তার আচরণে বুঝতে পারি। তাকে কোনো কথা বললেই সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো।

সাফিয়া সুলতানা বলেন, খালেকের পাওনা আমাকে শোধ করতে হবে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার মামা এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে আমার সাথে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেয়াসহ পরে ফেসবুকে অচেনা পুরুষের ছবির সাথে আমার ছবি লাগিয়ে আমাকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করছে। ছবির ওই লোককে আমি চিনি না।

তিনি তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও মিথ্যা অপবাদ থেকে রক্ষা করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় সুফিয়ার বাবা শামছুল হক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২১ নভেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষিকা মায়ের বিরুদ্ধে পরকীয়ার তথ্য ফাঁস হওয়ায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য কর্তৃক মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ করেছিলেন ছেলে সিহাব।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে