রবিবার, ০৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৮:৩১:১৮

টর্চার সেলের সেই কূপ খননে মিলল হাড় ও চুল

টর্চার সেলের সেই কূপ খননে মিলল হাড় ও চুল

বগুড়া থেকে: বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন তৎকালীন এসডিই বাংলোর ভেতরে খনন করা সেই কূপ থেকে হাড় ও চুল পাওয়া গেছে।গত শুক্রবার এবং আজ শনিবার বিকেলে খনন করা কূপটির ৩৫ থেকে ৪০ ফুট গভীর থেকে সেগুলো উদ্ধার করা হয়।

 উদ্ধার হওয়া হাড় ও চুলগুলো একাধিক মানুষের বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছেন। বগুড়ার জেলা প্রশাসক নুরে আলম সিদ্দিকী ওই আলামতগুলোর ডিএনএ টেস্টেের জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদেের বর্ণনা অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধকালীন বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণে ওই এসডিইর (বর্তমানে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী) বাংলোকে পাকিস্তানি সেনারা টর্চার সেলে পরিণত করেছিল। আশপাশের কোয়ার্টারে বসবাসরত রেলওয়ের তৎকালীন বিহারি কর্মচারীরা বাঙালি তরুণ, যুবক ও মুক্তিযোদ্ধাদেের ধরে এনে পাকিসানি সেনাদের হাতে তুলে দিত। পরে তাদের হত্যা করে কূপের ভেতরে ফেলা হতো। লাশগুলো কূপে ফেলার কাজটি করত দশীন জমাদার নামে রেলওয়েতে কর্মরত তৎকালীন এক সুইপারকে দিয়ে। যুদ্ধের শেষদিকে কূপটি মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়।

নৃশংস ওই হত্যাযজ্ঞের খবর স্বাধীনতারপর ১৯৭২ সালে ‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এর পর হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র’ বই-এর অষ্টম খণ্ডে তা স্থান পায়। এর পর থেকেই ওই কূপটি খননের দাবি জানিয়ে আসছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। সম্প্রতি এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪ ডিসেম্বর বাংলোর পাশে ভরাট হয়ে যাওয়া সেই কূপটি খনন শুরু করা হয়। প্রথম দিন প্রায় ১২ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করে দুটি হাড় পাওয়া যায়।  এরপর মাঝে কয়েকদিন বিরতি দিয়ে দুই দফায় মোট ৫ দিনে ২৭ ফুট খনন করা হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার থেকে তৃতীয় দফার খনন কাজ শুরুর পর পরই বেশ কিছু হাড় বেরিয়ে আসে। এরপর গতকাল আবারও কিছু হাড় ও চুল পাওয়া যায়। খবর পেয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক নূরে আলম সিদ্দিকী বিকেলে ঘটনাস্থলে যান।

বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, উদ্ধার হাড়গুলো শিশু ও বয়স্ক মানুষের। তাছাড়া যে চুল পাওয়া গেছে সেগুলো নারীর।

তিনি বলেন, চুলের সঙ্গে একটা ব্যান্ডও পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আলামতগুলোর ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নিয়েছি। ফলাফল পেলে হয়তো আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে