বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮, ১০:৩৩:২০

ইউএনওকে অপসারণের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আল্টিমেটাম

ইউএনওকে অপসারণের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আল্টিমেটাম

যশোর থেকে : মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমানের অসৌজন্য মূলক আচরণের কারণে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা এবং ৩০ মার্চের মধ্যে তাকে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কেশবপুরের লাল মুক্তিবার্তা ভূক্ত মুক্তিযোদ্ধারা।

বুধবার সকালে কেশবপুর প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী।

লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মননা অনুষ্ঠানে আসন বিন্যাসের ব্যাপারে তিনি আমাদের দাবী পূরণ না করায় আমরা ওই অনুষ্ঠান বর্জন করি।

এদিন উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের সম্মননা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে মঞ্চ তৈরি করেন। কিন্তু অনুষ্ঠানটি পন্ড করার জন্য আগের দিন রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতকারীরা মঞ্চটি ভাংচুর করে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

উপরোন্ত এর কয়েক দিন পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান বয়বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমান, আব্দুস সাত্তার দফাদার, শাহাবুদ্দিন সরদারসহ কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে চরম অসৌজন্য মূলক আচরণ করে তাদেরকে তার অফিস থেকে বের করে দেন।

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্র, যুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হালীম, বাম সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য অসাম্প্রদায়িক মানুষের চেষ্টায় ও তাদের অর্থে ৬০ দশকের শেষের দিকে কেশবপুর পাবলিক ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।

কিন্তু বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অক্ষত ওই শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে একই স্থানে নতুন করে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও ২১ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করে উদ্বোধকের নাম ফলক স্থাপন করে পূর্বের শহীদ মিনারকে অস্বীকার করা হয়েছে। যা কেশবপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের সামিল এবং সরকারি অর্থের অপচয় মাত্র।

এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান কেশবপুরের কর্মজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবীসহ সকল স্তরের মানুষের সাথে দূর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আতংক সৃষ্টি করে চলেছে। এসব কারণে লাল মুক্তিবার্তা ভক্ত মুক্তিযোদ্ধারা আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়েজিত অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমানকে অপসারণের দাবী করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাকে অপসারণ না করা হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শেখ কাইয়ুম উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম খোকন, লিয়াকত আলী, ফজলুর রহমান, আব্দুল ফকির, রশিদুল হক, আব্দুর রহমান, মনিমোহন ধর প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা। আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি অ্যাড. মিলন মিত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সকল আন্দোলনে একত্বতা ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান বলেন, আমি কেশবপুরের কোন মানুষের সাথে দূর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করিনি। কেশবপুরের কোন মানুষই আমার শত্রু বা প্রতিদ্বন্দি নয়। আমি সরকারি চাকুরী করতে এসেছি। সকলকে সাথে নিয়ে সম্মিলিত ভাবে পথ চলার জন্য। এটা আমার বিরুদ্ধে একটা গভীর ষড়যন্ত্র।

শহীদ মিনারের বিষয়ে তিনি বলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের একান্ত প্রচেষ্টায় জেলা পরিষদের অর্থায়নে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ কাজটা আমি শুধু দেখেছি।  

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে