শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০৪:৫৩

“তুমি ধৈর্য ধারণ করো, কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট করেন না”

“তুমি ধৈর্য ধারণ করো, কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট করেন না”

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, “তুমি ধৈর্য ধারণ করো। কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট করেন না”। (সুরা : হুদ, আয়াত : ১১৫)

তাফসির : আগের আয়াতগুলোতে ধর্মের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যথাযথ নিয়মে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছিল। ধর্মের ওপর অবিচল থাকতে গেলে নানা বিপত্তি ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তখন অত্যন্ত ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায় করাও কঠিন কাজ। জীবন-জীবিকার অনিবার্য বাস্তবতা মানুষকে কর্মব্যস্ত করে তোলে।

তাই যথাসময়ে, যথাযথ নিয়মে নামাজ আদায় করা কঠিন। ধর্মীয় আচার ও রীতিনীতি অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করতে অনেক বেগ পেতে হয়। সে ক্ষেত্রে ধৈর্য অবশ্যই প্রয়োজন। আলোচ্য আয়াতে তাই ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, ধৈর্যের সুফল অবশ্যই মিলবে। ভালো কাজের সুফল অবশ্যই পাওয়া যাবে। দৈনন্দিন জীবনে অনেক কঠিন বাস্তবতা রয়েছে, যেখানে ধৈর্য ধারণ করা খুবই প্রয়োজন।

বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। পাপাচার থেকে বিরত থাকতে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। ইবাদত পালনে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। বহু সমস্যার সমাধান হচ্ছে ধৈর্য ও সবর। ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা সবর ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।” (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৪)

সবর না থাকার কারণে মানুষ অনাকাক্সিক্ষত অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়। মুমিনের ধৈর্যের প্রয়োজন জীবনের সব ক্ষেত্রে, বিপদ-আপদে, মুসিবত, কষ্ট ও জটিলতায়। মুমিন ব্যক্তি বিশ্বাস করে, যত সঙ্কটই আসুক না কেন, সব আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে।

ফলে সে বিপদে পড়েও ক্ষোভ, হতাশা ও অস্থিরতা প্রকাশ করে না। নিজের ভাষা ও আচরণ সংযত রাখে। কারণ সে আল্লাহর প্রতি গভীরভাবে বিশ্বাসী। সে তকদিরে বিশ্বাস করে। তকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের ছয়টি স্তম্ভের একটি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “ৃআল্লাহর হুকুম ছাড়া কোনো বিপদ আসে না। আর যে আল্লাহর প্রতি ইমান আনে, তিনি তার অন্তরকে সঠিক পথের সন্ধান দেন”। (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১১)

ইমানদারের জন্য বিপদ-মুসিবত নিয়ামতস্বরূপ। কারণ এতে গুনাহ মাফ হয়। বিপদে ধৈর্য ধারণ করলে তার প্রতিদান পাওয়া যায়। মুমিন বিপদে পড়লে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি কান্নাকাটি করে। আল্লাহর কাছে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে। সৃষ্ট জীব থেকে বিমুখ হয়ে এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। যুগে যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বারবার তাঁর প্রিয় বান্দাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছেন।

সীমাহীন বিপদে আচ্ছন্ন রেখে তাদের ঈমানকে আরো মজবুত করেছেন। হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন তাঁর কোনো বান্দার মঙ্গল চান, তখন দুনিয়াতেই তার (অপরাধের) শাস্তি দিয়ে দেন। পক্ষান্তরে তিনি যখন তাঁর কোনো বান্দার অমঙ্গল চান, তখন দুনিয়ায় তার পাপের শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, যেন কেয়ামতের দিন তাকে পূর্ণরূপে শাস্তি দিতে পারেন। (তিরমিজি শরিফ)-আমাদের সময়
২৮ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে