বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭, ১০:২৯:০০

যেভাবে নির্ধারিত হয় মুসলিমদের ঈদের দিন

যেভাবে নির্ধারিত হয় মুসলিমদের ঈদের দিন

ইসলাম ডেস্ক:  রোজার মাস শেষে মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হয়। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের তারিখটি যেভাবে নির্ধারণ করা হয়, তা অনেকের কাছে খুব জটিল বলে মনে হতে পারে।

বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ঈদ হয় কেন? এর প্রধান কারণ, ঈদের তারিখ নির্ধারিত হয় নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলিম ধর্মীয় উৎসব, রীতিনীতি, অনুশাসনের জন্য অনুসরণ করেন ইসলামিক চন্দ্র বর্ষপঞ্জী।

এই চন্দ্র বর্ষপঞ্জীর নয় নম্বর মাস হচ্ছে রমজান। রমজান মাস যখন শেষ হয়ে আসে, তখন সবাই পরিস্কার আকাশে এক নতুন চাঁদের অপেক্ষায় থাকেন। প্রতি বছর রমজান মাস গ্রেগরীয়ন ক্যালেন্ডারের তুলনায় ১১ দিন এগিয়ে আসে।

এর ফলে প্রতি বছর রমজান মাসের অভিজ্ঞতা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা ভিন্নতর। কারণ বছরের বিভিন্ন সময় দিন দীর্ঘ কিংবা ছোট হয়। রমজান মাসে মুসলিমদের সূর্যোদয়ের আগে থেকে সূর্যাস্ত পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা রাখতে হয়।

যদি মুসলিমরা সৌর বর্ষপঞ্জী অনুসরণ করতো, তাহলে রমজানের সময় প্রতি বছর ঠিক একই মৌসুমে হতো। এর মানে বিশ্বের কোন কোন অংশের মুসলিমদের সব সময় গ্রীস্মের সময় রোজা রাখতে হতো, যখন কিনা দিন সবচেয়ে লম্বা। আর কোন দেশে হয়তো শীতের সময় রোজা রাখতে হতো, যখন দিন ফুরিয়ে যায় দ্রুত।

কিন্তু চন্দ্র বর্ষপঞ্জী অনুসরণের সুবিধা হচ্ছে, এটি বিশ্বের সব মুসলিমকে বিভিন্ন মৌসুমে রোজার অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দেয়। প্রতি তেত্রিশ বছরে রমজান মাস ঘুরে ফিরে আবার সৌর বর্ষপঞ্জীর একই সময়ে ফিরে আসে। ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হয় রমজানের পরের মাস শওয়ালের এক তারিখে। বেশিরভাগ মুসলিম দেশে ঈদের তারিখ সরকারিভাবে নির্ধারিত হয়। অনেক দেশে চন্দ্র বর্ষপঞ্জী আগে থেকে নির্ধারিত করা থাকে। ফলে ঈদের তারিখটি আগে থেকেই জানা যায়। কিন্তু অনেক দেশে আকাশে চাঁদ দেখে তারপর ঈদের ঘোষণা দেয়া হয়। এ কারণেই বিভিন্ন দেশে ঈদ হয় ভিন্ন ভিন্ন তারিখে।

যেমন সৌদি আরবের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ ঈদের তারিখ ঠিক করে খালি চোখে ঈদের চাঁদ দেখেছেন এমন মানুষদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে। অনেক মুসলিম দেশও একই পদ্ধতিতে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইরানে সরকারই নির্ধারণ করে ঈদের তারিখ। ইরাকে শিয়া এবং সুন্নীরা ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় ঈদের তারিখ ঠিক করে।

ইরাকে শিয়াদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় নেতা হচ্ছেন গ্রান্ড আয়াতোল্লাহ আলি আল সিসতানি। তিনি সাধারণত ঈদের ঘোষণা দেন। অন্যদিকে সুন্নিরা নির্ভর করে তাদের ধর্মীয় নেতাদের ঘোষণার ওপর। গত বছর অবশ্য বহু বছর পর একই দিনে ঈদ পালন করে ইরাকের শিয়া এবং সুন্নিরা। তুরস্ক সরকারিভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। সেখানে অ্যাস্ট্রনমিক্যাল বা জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেব-নিকেষের ভিত্তিতে ঈদের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা তাদের স্ব স্ব সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ঈদ পালন করে। সাধারণত তারা যেসব দেশ থেকে অভিবাসী হয়ে ইউরোপে এসেছে, সেসব দেশের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করে।-বিবিসি
এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে