বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:৩৬:১৬

মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক মুহাম্মদ (স.)

মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক মুহাম্মদ (স.)

মাওলানা নাসির উদ্দিন: একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠার জন্য যেমন একজন সুদক্ষ ও নীতিবান পরিচালকের প্রয়োজন তেমনি এ সমাজ পাঠশালাটিকে নৈতিক বিচারে উৎকৃষ্টতার মডেল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন ছিল একজন সুদক্ষ, বিচক্ষণ, উৎকৃষ্ট নীতি নৈতিকতার অধিকারী হৃদয়বান অভিভাবকের ও একজন আদর্শ শিক্ষকের। মহান আল্লাহ তায়ালা এ গুরুদায়িত্ব দিয়েই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেছেন।

সাধারণত একজন শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য হল, শিষ্যের প্রতি তার দয়া ও স্নেহ, আন্তরিকতা, কল্যাণকামিতা ও নম্র ব্যবহার।

তাই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘‘ এটা আল্লাহরই রহমত যে আপনি মানুষের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করে থাকেন। যদি আপনি কঠোর হৃদয়ের হতেন তবে তারা আপনার নিকট হতে ছিটকে পড়ত।’’ (সুরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৫৯)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যদের মতো এমন শিক্ষক ছিলেন না যে, কেবল একটি বই পড়িয়ে দিয়ে বা নির্ধারিত কোনো বিষয়ে পাঠদান করেই নিজ দায়িত্ব পূর্ণ করেছেন মনে করে বসে থাকবেন, বরং তিনি নিজের শিষ্যদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি স্তরে প্রবেশ করতেন এবং তাদের সকল দুঃখ-বেদনায় শরিক হতেন। প্রতিটি মুহূর্তে তাদের কল্যাণ কামনায় চিন্তিত থাকতেন।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘‘ তোমাদের মধ্য হতে এমন একজন রাসূল আগমন করেছেন যাকে তোমাদের দুঃখ-কষ্ট ব্যথিত করে এবং যিনি তোমাদের জন্য অনেক বেশি হিতাকাঙ্ক্ষী এবং তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু ও স্নেহশীল। ( সুরা তাওবা, আয়াত: ১২৮)

এ সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘ আমাকে (উম্মতের) একজন শিক্ষক হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে ।’’ ( সুনানে ইবনে মজা শরীফ)

অন্য এক হাদিসে তিনি উম্মতদেরকে বলেন, ‘‘ তোমরা ছয়টি কাজ করার দায়িত্ব নাও, আমি তোমাদের জান্নাতের দায়িত্ব নেব। তোমারা যখন কথা বল তখন সত্য বলবে, যখন কোনো ওয়াদা কর , তা পূর্ণ করবে। তোমাদের কাছে আমানত রাখা হলে তা যথাযথভাবে আদায় করবে, অবৈধ কর্ম থেকে তোমাদের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করবে, তোমাদের দৃষ্টিকে অবনমিত রাখবে, তোমাদের হাতকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখবে।’’ ( মুসনাদে আহমদ শরীফ)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষিপ্ত সময়ে যে বিস্ময়কর বিপ্লব সাধন করেছেন তার অপ্রতিরোধ্য গতি ও ব্যাপকতা দেখে ওই সকল লোকও বিস্মিত ও চিন্তিত হয়েছে যারা তার ও তার এই কল্যাণময় মিশনের ঘোরে বিরোধী ছিলে। এটা তার শিক্ষারই আশ্চর্যজনক প্রভাব ছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল ক্ষেত্রেই মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। তারা শিক্ষার যে পরিপূর্ণ ফলাফল জগৎবাসী প্রত্যক্ষ করল, দুনিয়ার ইতিহাসে এর কোনো দৃষ্টান্ত নেই।

আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন। ( আমিন)
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে