শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ০৪:৩১:১৩

সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে নেওয়ার বার্তা দেবেন জন কেরি

সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে নেওয়ার বার্তা দেবেন জন কেরি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বকে আরও জোরদারের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, যাতে করে বৈশ্বিক বিষয়ে কৌশলগত ভূমিকা নিতে পারে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তার দেশের ক্ষমতার পালাবদলের সন্ধিক্ষণে ২৯ আগস্ট ঢাকায় এই বার্তা পৌঁছে দেবেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে।

বাংলাদেশে এক দিনের সফরে জন কেরি কী বার্তা নিয়ে আসছেন, জানতে চাইলে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট গত বুধবার সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

ওই দিন দুপুরে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস—বিস) দপ্তরে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে সফরের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। ওই আলোচনার পর বিস প্রাঙ্গণে তিনি কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে সফরের বিষয়ে কথা বলেন।

এ বছরের ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির পক্ষে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক গত বুধবার ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান, জন কেরি ঢাকা সফরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে দুই দেশের সহযোগিতার পাশাপাশি গণতন্ত্র, উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার বিষয়ে দুই দেশের অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার ওপর জোর দেবেন।

এক দিনের ঢাকা সফরে জন কেরি কী বার্তা নিয়ে আসছেন জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘আমাদের অংশীদারত্ব সম্পর্ক বেশ শক্তিশালী এবং এর পরবর্তী ধাপটা এমন যে, এই সফরে তিনি শুধু বর্তমান প্রশাসনেরই প্রতিনিধিত্ব করবেন না, বরং পরবর্তী প্রশাসনের সঙ্গে সেতুবন্ধ হিসেবে আসছেন। আমাদের সরকার এবং নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। তিনি ওই পরিবর্তনের অংশ হবেন।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মতে, দুই দেশের সম্পর্ক ইতিমধ্যেই কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর বিভিন্ন স্তরে সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়। নিরাপত্তা ও বাণিজ্য নিয়ে যখন আমরা কথা বলি, তখন শুধু বর্তমান নিয়ে কিংবা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে সব করে ফেলবে, এটা বলছি না। আমরা এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা কী হবে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেমন হবে—এসব নিয়ে কথা বলি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আপনাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। কাজেই এটা কীভাবে সম্প্রসারিত করা যায়, কীভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে, সেটিই কৌশলগত বিষয়।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মতে, দুই দেশের অংশীদারত্ব একমুখী নয়। দুই পক্ষই এই অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এটাকে কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, কীভাবে একে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারে, এ নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনায় রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘোষণা: এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক এলিজাবেথ ট্রুডো গত বুধবার ওয়াশিংটনে জন কেরির ঢাকা সফরের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি এদিন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ নিয়ে কথা বলেন।

এলিজাবেথ ট্রুডো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দীর্ঘমেয়াদি ও বিস্তৃত সম্পর্ক আরও জোরদারের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ সফর করবেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে দুই দেশের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া গণতন্ত্র, উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার বিষয়ে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপক্ষীয় অংশীদারত্ব আরও শক্তিশালী করার ওপরেও তিনি জোর দেবেন।’

এলিজাবেথ ট্রুডো বলেন, ২৯ থেকে ৩১ আগস্ট জন কেরি দিল্লি সফর করবেন। এ সময় তিনি সেখানে ভারতের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ৩০ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি প্রিৎস্কার যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের দ্বিতীয় কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সংলাপে (স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল ডায়ালগ—এসঅ্যান্ডসিডি) যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন। ভারতের পক্ষে ওই আলোচনায় যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারাম। - প্রথম আলো
২৬ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে