শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ১২:৪৯:৪৭

উপরের পদের বেতন নিচের চেয়ে কম

উপরের পদের বেতন নিচের চেয়ে কম

নিউজ ডেস্ক: উপরের পদের কর্মকর্তা হয়েও ২৭ বছর ধরে দুই ধাপ নিচে বেতন পাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কর্মরত কয়েকজন ল্যাব. ইন্সট্রাক্টর ও লেকচারার। আর দুই ধাপ নিচের পদে চাকরি করে উপরের গ্রেডে বেশি বেতন পাচ্ছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা।

১৯৯০ সালে একটি সরকারি আদেশের বলে এই বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। এ সমস্যা সমাধানে মোট ছয়বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েও ফল পাননি ভুক্তভোগীরা।

জানা যায়, বেতন কম থাকায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ১৯৯০ সালে এক আদেশের মাধ্যমে তাদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু এ ক্ষেত্রে উপরের পদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি। ফলে দুই ধাপ উপরের পদের চেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। এ ঘটনার শিকার হয়েছেন ঢাকা ও রাজশাহী ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি-আইএইচটিতে কর্মরত লেকচারার ও ইন্সট্রাক্টররা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা ৭৫০-১,৫৫০ টাকা স্কেলে ১৫ নং গ্রেডে বেতন পেতেন। সে সময় ল্যাব. ইন্সট্রাক্টরদের বেতন স্কেল ছিল ১৪ নম্বর গ্রেডে ৮০০-১,৬৩০ টাকা এবং লেকচারারদের বেতন স্কেল ছিল ১২ নম্বর গ্রেডে ৯০০-২,০৭৫ টাকা। ১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সরকারি আদেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ১১ নম্বর গ্রেডে উন্নীত করে ১,০০০-২,২৮০ টাকা স্কেলে বেতন নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু টেকনোলজিস্টদের চেয়ে এক ধাপ উপরের পদের ল্যাব. ইন্সট্রাক্টর এবং দুই ধাপ উপরের লেকচারারদের গ্রেড ও স্কেলের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এমনকি ২০১৫ সালে সরকার যে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করে, সেখানেও এই সমস্যার সমাধান করা হয়নি।

এই পে-স্কেল অনুসারে টেকনোলজিস্টদের ১১ নম্বর গ্রেডে ১২,৫০০-৩০,২০০ টাকা স্কেলে, লেকচারারদের ১২ নম্বর গ্রেডে ১১,৩০০-২৭,৩০০ টাকা স্কেলে এবং ইন্সট্রাক্টরদের ১৪ নম্বর গ্রেডে ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা স্কেলে বেতন নির্ধারণ হয়।

অর্থাৎ সর্বশেষ বেতন কাঠামোতেও বৈষম্য থেকে গেছে। অথচ ঢাকা ও রাজশাহীর পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে আরও ছয়টি আইএইচটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইন্সট্রাক্টর ও লেকচারাররা যথাক্রমে ১০ নম্বর ও ৯ নম্বর গ্রেডে বেতন ও সুবিধাদি পেয়ে আসছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়নে ১৯৬৩ সালে ঢাকায় এবং ১৯৭৭ সালে রাজশাহীতে একটি করে আইএইচটি স্থাপন করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্নকারীরা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে হাসপাতাল ও আইএইচটির চাকরিতে যোগদান করেন।

এরাই এসব ল্যাব. ইন্সট্রাক্টর ও লেকচারারদের কাছে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করেন। যারা আইএইচটিতে যোগদান করেন তারা প্রথম ধাপে পদোন্নতি পেয়ে ল্যাব. ইন্সট্রাক্টর এবং দ্বিতীয় ধাপে পদোন্নতি পেয়ে লেকচারার পদে উন্নীত হন।

সরকার এই নিয়মের পরিবর্তন না করলেও অজ্ঞাত কারণে বেতন বৈষম্য নিরসন করছে না। এ প্রসঙ্গে রাজশাহী আইএইচটির বৈষম্যের শিকার লেকচারার মো. মাহফুজুল হক যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা ও রাজশাহী মিলিয়ে ১০ লেকচারার এবং চারজন ইন্সট্রাক্টর এই বৈষ্যমের শিকার।

এ সমস্যা সমাধানে অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে ১৯৯২, ১৯৯৫, ২০০০, ২০০১, ২০০৬, ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ছয়বার লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি অধিদফতরে এমন কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।-যুগান্তর
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে