শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৫৬:৫৪

রাজনীতিতে আসছে না হেফাজতে ইসলাম

রাজনীতিতে আসছে না হেফাজতে ইসলাম

ঢাকা : নানা গুঞ্জন। আলোচনা-সমালোচনা। হেফাজতে ইসলাম কি রাজনীতিতে আসছে। আগামী নির্বাচনে কি অংশ নেবে কওমি মাদ্‌রাসা-ভিত্তিক এই সংগঠনটি। দৃশ্যত প্রধান দু’টি জোটের মধ্যেই হেফাজতকে কাছে টানার এক ধরনের প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

কওমি সনদের স্বীকৃতি এবং সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের পক্ষে সরকারের অবস্থানে সরকার-হেফাজত সমঝোতার গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে। তবে সরকারের তরফে এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, হেফাজতের সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি।

চার বছর আগে বিপুল আলোচনায় আসা হেফাজতে ইসলাম বরাবরই নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবি করে আসছে। ঈমান-আকিদা রক্ষায় আন্দোলনই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্যে বলে তারা প্রচার করে আসছে। তবে বিপুল সংখ্যক ভোটের হিসাব থাকায় হেফাজতকে রাজনৈতিকভাবেও কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন।

হেফাজতে ইসলাম রাজনীতিতে আসতে পারে এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারে এমন গুঞ্জন সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে। তবে সংগঠনটির নেতারা একবাক্যে এ সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলছেন, হেফাজতে ইসলাম রাজনীতিতে আসছে না। আগামী নির্বাচনেও সংগঠনটির অংশগ্রহণের কোনো ধরনের সম্ভাবনা নেই।

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। রাজনীতি নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহও নেই। আমাদের আমীর আল্লামা শফীর এ ব্যাপারে কোনা চিন্তা-ভাবনাও নেই। ভবিষ্যতেও হেফাজতে ইসলামের রাজনীতিতে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের প্রয়োজন হয়। আমাদের কোনো নিবন্ধন নেই। নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথাও অবান্তর।

মূলত শাহ্‌বাগের কাউন্টার হিসেবে আবির্ভূত হওয়া হেফাজতে ইসলাম বারবারই ছিল আলোচনায়। মূলত সংগঠনটির দাবির মুখে পাঠ্য-পুস্তকে পরিবর্তন আনা হয় বলে আলোচনা রয়েছে। এজন্য অনেকে সরকারি নীতির সমালোচনাও করে থাকেন। তবে অনেক পর্যবেক্ষকই এখন বলছেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও হেফাজতে ইসলাম নিজেদের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে জাহির করতে সক্ষম হয়েছে। ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচির সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যেই হেফাজতে ইসলামের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন। সে সময় দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি হেফাজতের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সম্প্রতি, সরকারি দলের সঙ্গেও হেফাজতের এক ধরনের সখ্য লক্ষ্য করা যায়। জানা যাচ্ছে, হেফাজতের সাম্প্রতিক অবস্থানে বিএনপি’র মধ্যেও এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। দলটির অনেক নেতাই মনে করেন, নির্বাচনের আগে আরো অনেক নাটকীয় ঘটনা ঘটবে।

হেফাজতে ইসলাম রাজনীতিতে না নামলেও ইসলামী দলগুলোকে কেন্দ্র করে নানা রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নিবন্ধন জটিলতার কারণে জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না। এক্ষেত্রে স্থানীয় নির্বাচনের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলটির নেতারা সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। জামায়াত এখনো ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। তবে জোটে দলটির অবস্থান এখন স্পষ্ট নয়। প্রধান শরিক বিএনপি’র সঙ্গে জামায়াতের এক ধরনের দূরত্বই দেখা যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০ দলভুক্ত দলগুলো সক্রিয় থাকলেও জামায়াত সক্রিয় ছিলো না। ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ এরই মধ্যে ২০ দল ছেড়েছে। অন্য কয়েকটি দলও এ ব্যাপারে চাপে রয়েছে বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জোটেও কয়েকটি ইসলামী দল ভিড়তে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। -এমজমিন
২৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে