শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭, ০২:০১:০৯

‘এটা শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়’

‘এটা শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়’

রুদ্র মিজান : সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুই বিশিষ্ট নাগরিক। তারা বলছেন, ভবিষ্যতে এরকম আরো দাবি উঠতে পারে। ভোটের জন্যই সরকার এটি করেছে বলে মনে করেন এই দুই বিশিষ্ট ব্যক্তি।

গতকাল সন্ধ্যায় তাৎক্ষণিকভাবে মানবজমিনের সঙ্গে কথা বলেন বিশিষ্ট লেখক, শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।  

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ভাস্কর্য  অপসারণের বিষয়টি খুবই খারাপভাবে দেখছি। আমাদের দেশটা তো এমনি এমনি হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে হয়েছে। ৩০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। শহীদরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, এটা সেই বাংলাদেশ নয়। কথা ছিল সেই বাংলাদেশে একজন মানুষ ভাস্কর্য তৈরি করতে পারবে, ছবি আঁকতে পারবে, কবিতা লিখতে পারবে, গান গাইতে পারবে। কিন্তু আমরা দেখছি, বাংলাদেশ সৃষ্টিতে যাদের কোনো অবদান নেই, সেই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকার তাদের কথা শুনে কাজ করছে।

এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না জানিয়ে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, আশা করি বাংলাদেশের মানুষ এর প্রতিবাদ করবে। এরকম বাংলাদশের জন্য মানুষ জীবন দেয়নি। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই বাংলাদেশ এবং সেই বাংলাদেশের অধিকার আমাদের দিতে হবে।

ভাস্কর্য অপসারণের কারণ সম্পর্কে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, সরকার নির্বাচনে ভোট পাওয়ার জন্য এসব করছে। কিন্তু আমাকে যদি ভোট পাওয়ার জন্য দেশটা সেক্রিফাইস করতে হয়। ভোট পেয়ে সরকারে গেলাম কিন্তু দেশ আমার আগের দেশ নেই। তাহলে সেই ভোট দিয়ে আমি কী করব।

একইভাবে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ অত্যন্ত ভুল কাজ হয়েছে। ভাস্কর্য সরানোর আন্দোলনকে সরকারের মদত দেয়া ঠিক হয়নি। ভাস্কর্য অপসারণের এ আন্দোলন তো শুরু করেছিল কয়েকটা ইসলামি সংগঠন। তারপর রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্যটা সরানো হলো। এটা সরকার ভোটের জন্য করেছে।

তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, ভাস্কর্য অপসারণ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। এটা নাকি সুপ্রিম কোর্ট করেছে। কিন্তু জনগণের কাছে তো তাদের দায়বদ্ধতা আছে। ধর্মের নামে ভুল কাজ হয়েছে এটা। আজ এটা সরিয়ে ফেলা হলো, ভবিষ্যতে এধরনের নতুন নতুন দাবি আসবে; যা জাতির জন্য ক্ষতিকর হবে। -এমজমিন

২৭ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে