বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭, ০১:২৬:৩৯

তাপসেই আস্থা আ.লীগে, বিএনপিতে রবিউল না অসীম!

তাপসেই আস্থা আ.লীগে, বিএনপিতে রবিউল না অসীম!

মাহমুদ আজহার ও রফিকুল ইসলাম রনি : রাজধানীর অন্যতম অভিজাত সংসদীয় আসন ঢাকা-১০ গঠিত ধানমন্ডি, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ এলাকা নিয়ে। এটি সংসদীয় আসন-১৮৩। দেশের অন্য আসনগুলোর মতোই এই অভিজাত এলাকায়ও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। পোস্টার, লিফলেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের জানান দিতে শুরু করেছেন।

স্বাধীনতার পর এই আসনটি কোনো দলের জন্য নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক না হলেও টানা দুই মেয়াদে রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয় চায় ক্ষমতাসীন দলটি। সেজন্য প্রার্থী মনোনয়নে এ আসনের বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসেই আস্থা রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা নেই।

অন্যদিকে বিএনপিও চায় হারানো আসনটি পুনরুদ্ধারে। অন্য কোনো দলের প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি এ আসনে। এই আসনে বিএনপিতে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তবে তিনজন আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিপরীতে বিএনপিতে শেখ রবিউল আলম রবি, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম ছাড়াও দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দুর নামও নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

এর মধ্যে মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম কয়েক বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমদ। তাকে পরাজিত করে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দশম জাতীয় নির্বাচনেও দ্বিতীয় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হন শেখ পরিবারের অন্যতম এ উত্তরাধিকার।

এ আসনের প্রার্থী পর্যালোচনায় দেখা যায়, পঞ্চম থেকে নবম পাঁচটি জাতীয় ও একটি উপনির্বাচন মিলিয়ে বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে পাঁচবার। অন্যদিকে অনেকটাই স্থিতিশীলতা রক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী তিনি। নির্বাচনী এলাকা ধানমন্ডি-কলাবাগান আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মজবুত ঐক্য সৃষ্টি ও তা ধরে রাখতে পেরেছেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতিতে তার প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নহীন।

আগামী একাদশ নির্বাচনে তাই এ আসনে ক্ষমতাসীন দল থেকে কেউ বিকল্প প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছে না। সবারই এক কথা, প্রার্থী হবেন ব্যারিস্টার। দলমত নির্বিশেষে সর্বমহলেই তার গ্রহণযোগ্য প্রশ্নাতীত। নির্বাচনী আসনের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের তিনি আপন করে নিয়েছেন। তার সততা, সরলতা, যোগ্যতা, উদারতা আর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সর্বোপরি জনসাধারণের মাঝে গ্রহণযোগ্যতাকেই মূল্যায়ন করছে দলটি। এ আসনটিতে দলের হ্যাটট্রিক জয়ের জন্য তাপসকেই বেছে নেবে আওয়ামী লীগ।

গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমদ। তার অবর্তমানে আগামী নির্বাচনে ধানমন্ডির মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তরুণ নেতা শেখ রবিউল আলম রবি সাংগঠনিকভাবে হাল ধরেছেন।

বিগত ১৮ বছর ধরে ধানমন্ডি থানা বিএনপির কমিটি না থাকায় সেখানে যাবতীয় সাংগঠনিক কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৬০টিরও বেশি রাজনৈতিক মামলার খড়গ মাথায় নিয়ে এই শেখ রবিউল আলম। তবে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীমও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন। তিনিও মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে প্রায় ৫ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন বলেও নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে।

তবে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দুর পক্ষেও নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ কাজ করে যাচ্ছেন। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এ ছাড়াও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক কমিশনার আবদুল লতিফ ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায়ও মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন। বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে