মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৯:০৫:৩৯

মিয়ানমারে সহিংসতা ভারতের হিন্দু আর শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের দায়

মিয়ানমারে সহিংসতা ভারতের হিন্দু আর শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের দায়

জি. মুনীর :মিয়ানমারের রোহিঙ্গা প্রশ্নে এখন প্রায় সবাই বলছে, সেখানে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মগোষ্ঠী ও সেনাবাহিনী। সবার কাছেই স্পষ্ট, রোহিঙ্গা নিধনে সেখানে চলছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। কারণ, সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশে নানা বাধা থাকলেও উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে গণহত্যার নানা তথ্য-প্রমাণ গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে অহরহ প্রকাশিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নানা মানবাধিকার সংস্থা উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে বর্মিদের বর্বরতার নানা চিত্র প্রকাশ করছে। তা ছাড়া মিয়ানমার থেকে সপ্তাহ তিনেকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ শরণার্থী তো এর জায়মান প্রমাণ। ফলে গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ কারো জন্য অবশেষ থাকছে না।

জাতিসঙ্ঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনসহ সুখ্যাত ব্যক্তিরা কোনো রাখঢাক না রেখেই বলছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধনের লক্ষ্যে সেখানে চলছে এক নীরব গণহত্যা। তবে এই গণহত্যা বন্ধে কার্যকর কোনো প্রায়োগিক পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। এমনকি জাতিসঙ্ঘের কিছু প্রায়োগিক পদক্ষেপ দৃশ্যত বাধার মুখে পড়ছে চীনের ভেটোর কারণে। সর্বশেষ জাতিসঙ্ঘের রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাবটি বাধার মুখে পড়ে চীনের ভেটোর কারণে। ফলে অবাধে রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়টি বিশ্বের বিবেকবান মানুষের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে। এরা একের পর এক আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন, অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সমাজ যেন এই অমানবিক হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। তা ছাড়া তারা চান আনান কমিশন রিপোর্টের সুপারিশের আলোকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের সব অধিকার নিশ্চিত করা হোক এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নেয়া হোক।

বাস্তবতা হচ্ছে, মিয়ানমারে এক নীরব গণহত্যা চলছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেশছাড়া ও অস্তিত্বহীন করতে এমনকি গানশিপ হেলিকপ্টার পর্যন্ত ব্যবহার করছে। পলায়নরত রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ ভারী গোলাবর্ষণের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সমাজ নিন্দা ও ঘৃণা জানিয়ে বিবৃতি দিয়ে তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করে এখন পর্যন্ত অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। একমাত্র তুরস্ক ছাড়া ৫৭টি মুসলিম দেশের এ ধ্বংসযজ্ঞে অবিশ্বাস্য ধরনের নীরবতা পালন করছে। জাতিসঙ্ঘও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে মিয়ানমারের প্রতি শুধু সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেই ক্ষান্ত রয়েছে। তা ছাড়া জাতিসঙ্ঘের অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল একটি রিপোর্র্ট প্রকাশ করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বৈধ মর্যাদা দেয়ার যে পরামর্শ দিয়েছে, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে।

কফি আনান কমিশনসহ রাখাইন রাজ্য নিয়ে গঠিত দু’টি কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১৫ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে মিয়ানমার। গত ১২ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার সরকার গঠিত এ কমিটিকে এসব কমিশনের পরস্পরবিরোধী সুপারিশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। আর এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কৌশলে বুঝিয়ে দিচ্ছে, আনান কমিশনের রিপোর্ট দেশটি অগ্রাহ্য করবে।

রাখাইন রাজ্যের জনগণের কল্যাণে জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে অং সান সু চি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে রাখাইন রাজ্যবিষয়ক পরামর্শক কমিশন গঠন করেন, যা আনান কমিশন নামে পরিচিত। সু চি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছিলেন। কমিশন গঠনের এক মাস পর অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-ধর্ষণসহ নানামাত্রিক অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। এরপর এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিতর্কিত সাবেক জেনারেল মিন্ট সোয়ের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যবিষয়ক জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।

মিন্ট সোয়ের কমিশন গত ৬ আগস্টে দেয়া প্রতিবেদনে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। এ কমিশন মূলত তাদের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক অধিকারের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে সেখানকার উন্নয়নের প্রতিই বেশি জোর দিয়েছে। তা ছাড়া এই কমিশন তাদের সুপারিশে নিজেদের ও আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের প্রস্তাব রেখেছে। অপর দিকে, কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশন ২৪ আগস্ট তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ৮৮টি সুপারিশ রেখেছে। এতে রোহিঙ্গা শব্দটি উল্লেখ না করে রাজ্যের সব জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্বসহ কাজের ও চলাফেরার মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

অং সান সু চির উদ্যোগে গঠিত এই কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন গভীর রাত থেকেই তল্লাশি চৌকিতে হামলার অভিযোগ তুলে নিরপরাধ রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সশস্ত্র বাহিনী সহিংসতা শুরু করে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, সীমান্ত চৌকিতে সেনাবাহিনীর লোকেরাই আগুন দিয়ে দোষ চাপাচ্ছে রোহিঙ্গাদের ওপর। সে যাই হোক, রাখাইন রাজ্যের জাতীয় কমিশন ও আনান কমিশনের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বিষয়ে পরস্পরবিরোধী সুপারিশ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে উভয় কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন এক ধরনের চালাকি বৈ কিছু নয়।

এ দিকে রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সাম্প্রতিক মিয়ানমার সফরের সময় এই অমানবিক সমস্যা সমাধানে সু চি বার্মার নেতাদের অবস্থানের প্রতি জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন, যেখানে বহু আগেই সু চি নিজে ‘রোহিঙ্গা’ নামটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলকে। নরেন্দ্র মোদির এই মিয়ানমার সফরের সময়ে এলে তিনি রোহিঙ্গা জাতি নিধনে মিয়ানমারের সহিংসতা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্কেতটিই দিয়ে এলেন। অথচ ভারতের ও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল রোহিঙ্গা প্রশ্নে তিনি বাংলাদেশের অবস্থানকেই সমর্থন করবেন, বিপন্ন রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাশে দাঁড়াবেন।

কারণ, ভারত ও বাংলাদেশ পরস্পরকে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের রোল মডেল হিসেবেই প্রচার করে। কিন্তু এই প্রত্যাশার বিপরীতে তিনি এর উল্টোটিই করলেন। এর মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদি আবারো প্রমাণ করলেন, তিনি ছিলেন মূলত ও অপরিহার্যভাবে একজন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের (আরএসএস) খাস লোক ও এর মুসলিমবিরোধী আদর্শের ধারক-বাহক। এখনো তিনি তার সে অবস্থান ধরে রেখেছেন। আর এ আদর্শ তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

সবচেয়ে অবাক লাগে, যখন দেখা যায় মিয়ানমারে চলমান গণহত্যায় আরএসএসের একটি গোপন যোগসূত্র সক্রিয় রয়েছে। বৌদ্ধধর্ম অহিংস নীতির একটি শান্তিবাদী ধর্ম বলেই সবার মধ্যে প্রচার করা হয়। বিশ্বে এই ধর্মানুসারীর সংখ্যা ৫০ কোটি। ভারতের আরএসএস এখন নেমে পড়েছে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও লাদাখের বৌদ্ধসমাজকে মুসলিমবিরেধী করে তুলতে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরএসএস ও এর সহায়তাকারীরা প্রচার করছে মোগল আমলে বৌদ্ধদের ওপর মুসলমানদের অন্যায়-অত্যাচার চালানোর মিথ্যা ইতিহাস। এ ক্ষেত্রে তিব্বত থেকে স্বেচ্ছানির্বাসিত ও বর্তমানে হিমাচল প্রদেশে বসবাসরত বৌদ্ধসমাজকে কাজে লাগানো হচ্ছে আরএসএসের প্রপাগান্ডা মেশিন হিসেবে। ঘটনাক্রমে তিব্বতের নির্বাসিত সরকার রয়েছে হিমাচল প্রদেশের মেয়িলিওপ গুঞ্জে, যা হিমালয় প্রদেশের একটি হিল রিসোর্ট।

খুব কম লোকই জানেন, আরএসএসের একটি শাখা সক্রিয় রয়েছে বার্মায়। এটি পুরোপুরি উৎসর্গীকৃত ও নিয়োজিত আরএসএসের ভ্রান্ত আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার কাজে। সেখানে এটি পরিচিত ‘সনাতন ধর্ম স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ’ (এসডিএসএস) নামে। এই সংগঠন ঘনিষ্ঠ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে মিয়ানমারের সামরিক স্বৈরশাসকদের সাথে, যারা সব ধরনের সহযোগিতা জোগাচ্ছে মিয়ানমারে উগ্র তথাকথিত ধর্মীয় নেতা অশ্বিন উইরাথোর মতো ব্যক্তিকে। সুপরিচিত টাইম ম্যাগাজিন (২০১৩ সালের ১ জুলাই সংখ্যা) এর এক প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে তাকে ‘বুদ্ধিষ্ট টেরোরিস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে। কারণ, তিনি ধর্মের নামে মিয়ানমারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে শুধু ঘৃণা আর ঘৃৃৃণাই ছড়িয়ে যাচ্ছেন। আর সম্প্রতি তার অপকর্মের তীব্রতা আরো জোরদার হয়েছে।

উল্লেখ্য, অশ্বিন উইবাথো হচ্ছেন ব্যাপক সমালোচিত কট্টর বৌদ্ধদের সংগঠন ‘মা বা থা’র নেতা। সু চি সরকার প্রবল সমালোচনার মুখে বাধ্য হয়ে ছয় মাস আগে এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে এর নেতাকর্মীরা এখন সক্রিয়। সরকারও এদের পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রেখেছে। সে যাই হোক এসডিএসএস নামের সংগঠনটি মিয়ানমারে অবাধে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ ভোগ করছে। সংগঠনটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সাথে কতটুকু ঘনিষ্ঠ, তা আন্দাজ-অনুমান করা যায় ‘অরগানাইজার’-এ ২০০০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ২৩ মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে।

উল্লেখ্য, অরগানাইজার হচ্ছে, আরএসএসের মুখপত্র। এই প্রতিবেদন মতে ‘সম্প্রতি সনাতন ধর্ম স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (এসডিএসএস) ৫০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ইয়াংগুনের মেয়োমা কিয়াং রোডের ন্যাশনাল থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়। ‘স্টেট পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল’র সেক্রেটারি লে. জে. থিন উ এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা ও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও যোগ দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী মেজর জেনারেল ব্রিগে. জেনারেল পিয়ি সোন, সমাজকলাণ ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী মেজর জেনারেল শিন হিতোয়া এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেজর জেনারেল কেট সিন। সংগঠনটির সেক্রেটারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।’

অরগানাইজারে এ রিপোর্ট দু’টি ছবিসহ ছাপা হয়। একটি ছবিতে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা লে. জে. থির ইসহ পাঁচজন জেনারেলকে মঞ্চের মাঝখানে এসডিএসএস নেতাদের সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্য ছবিতে বার্মার সামরিক জান্তার লিডিং লাইটদের অডিটোরিয়ামের সামনের সারিতে বসে থাকতে দেখা গেছে। তা ছাড়া বার্মা আরএসএস ভীতিকর জোট গড়ে তুলেছে শ্রীলঙ্কার আল্ট্রা-অর্থোডক্স বৌদ্ধ সংগঠন Bodu Bala Sena’(BBS)-এর সাথে। এ জোটের লক্ষ্য সাধারণভাবে সংখালঘু নিধন। বিশেষ করে মুসলিম সংখালঘু নিধন। এই মুসলিমবিরোধী সংগঠনের সাথে আরএসএসের সখ্যতার বিষয়টি আন্দাজ করা যাবে ২০১৩ সালের রাম মাধবের ফেসবুক পোস্ট থেকে। উল্লেখ্য, রাম মাধব হচ্ছেনÑ আরএসএসের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যক্তি।

তিনি তার ফেসবুকে উল্লেখ করেন : ‘The Muslim population in Srilanka is growing fast…There are mosques and madrassas sprouting everywhere in the country. A rough estimate suggests that of the 1.2 million Muslim populations, every 50 households have a mosque. In Colombo it self a new magnificent mosque is coming up, so are in many other places. Increasing number of burqa-clad women and skull cap-wearing men can be sited on the streets of Srilankan cities and towns now.’

রাম মাধব আরো উল্লেখ করেন, শ্রীলঙ্কার মুসলমানেরা হালাল পণ্যের পক্ষে প্রচার চালায়। তিনি আরো বলেন, বিবিএস অপরিহার্যভাবে বিদেশী ধর্মের হাত থেকে দেশের বৌদ্ধ সংস্কৃতি সংরক্ষণের কথা বলে। তার এই বক্তব্যের অর্থ হচ্ছে, এরা চেষ্টা করছে খ্রিষ্টান মিশনারিদের হাত থেকে বৌদ্ধদের রক্ষা করতে। কারণ, মিশনারিরা বৌদ্ধদের ধর্মান্তরিত করছে। তিনি এ কথা বলে সুখবোধ করেন, বিবিএস মনে করেÑ তার দেশের হিন্দু ও বৌদ্ধদের উচিত এদের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করা।

অপর দিকে এক টুইট বার্তায় রাম মাধব লিখেন ‘BBS is able to capture the attention of the Buddhist population of Srilanka.’। তিনি উল্লেখ করেন, Bodu Bala Sena (BBS) হচ্ছেÑ শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের একটি আন্দোলনের নাম। এর রয়েছে অনেক কিছু করার ইচ্ছা। তিনি এখন এসব পোস্ট তার সামাজিক গণমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে ডিলিট করে দিয়েছেন।

কারণ, তিনি বুঝতে পারেননি এসব পোস্ট সংরক্ষণের ও পুনরুদ্ধারের নানা উপায় এখন মানুষের হাতে রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ ও আরএসএসের মধ্যকার সখ্যতার পরিমাপ পাওয়া যায় শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী র্যানিল উইক্রেমেসিংয়ের বক্তব্য থেকে। তিনি এই বক্তব্য দেন ২০১৫ সালে তার ভারত সফরের সময়। তিনি একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দিল্লিতে দু’টি অ্যাপয়েন্টমেন্ট আমি কনফার্ম করতে চেয়েছিলাম : একটি প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে, আরেকটি ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের সাথে।’ স্মরণ করা যেতে পারে, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন হচ্ছেÑ দিল্লিভিত্তিক আরএসএসের কৌশলগত থিংকট্যাংক।

আরএসএস মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিষ ছড়াচ্ছে লাদাখি বৌদ্ধদের মধ্যেও। ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল অজয় সুকলা লিখেন : আরএসএসের প্ররোচনায় বৌদ্ধগোষ্ঠীর মাধ্যমে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আইডেন্টিটি পলিটিকস ছড়িয়ে পড়েছে লাদাখে। সেখানকার জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই মুসলমান। বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে লাদাখেও যদি মিয়ানমারের মতো অচিরেই মুসলিম নিধন-বিতাড়ন শুরু হয়ে যায়, তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলমান গণহত্যায় আরএসএস কানেকশন এখন নিশ্চিত একটি বিষয়। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা নিধনে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণসহ কৌশলগত পরামর্শ জোগাচ্ছে ইসরাইল। কারণ, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন দমনে ও জাতিগত নিপীড়নে নানা কৌশল অবলম্বনে তাদের রয়েছে কয়েক দশকের বাস্তব অভিজ্ঞতা। কাশ্মিরের মুসলমানদের বিরুদ্ধেও একই কাজটি করছে ইসরাইল।-নয়াদিগন্ত
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে