বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:১২:৩২

কাদের-ফখরুলদের কীভাবে জানতেন বঙ্গবন্ধু?

কাদের-ফখরুলদের কীভাবে জানতেন বঙ্গবন্ধু?

মোস্তফা কামাল : নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে শুধু দেখাই নয়, কুশল বিনিময়ও হলো ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুলের। বড় দুই দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তির সাক্ষাৎ গণমাধ্যমের জন্য মোটেই বড় খবর হওয়ার নয়।

কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটি ব্রেকিং নিউজ। চটকদার শিরোনাম। আমাদের রাজনীতিটা এসে ঠেকেছে এমন দশায়ই। দিনভর একে অন্যের সম্পর্কে সহি-শুদ্ধ কথা বলেন। মিথ্যার ম-ও বলেন না— এমন দুজনের মোলাকাত কি যা-তা ব্যাপার!

রবিবার বিমানবন্দরে দেখা হওয়ার আগে ওবায়দুল কাদের যান রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার হিন্দুদের গ্রাম দেখতে। সেখানে তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কক্সবাজারের রামু, গাইবান্ধার সাঁওতাল পল্লী আর রংপুরের ঘটনা একই ষড়যন্ত্রের অংশ।

অন্যদিকে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের অভিযোগ— নাসিরনগর, রামু, গাইবান্ধা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন ও তাদের সম্পত্তি হাতাচ্ছে আওয়ামী লীগই। কাদের-ফখরুলরা কতটা সত্য বলেছেন তা কেবল তারা নিজেরাই জানেন না। ভুক্তভোগীসহ অনেকেই জানেন।

মানেনও অনেকে। না মেনে যাবেন কোথায়? কারণ কাদের-ফখরুলরা দলের কাছে মান্যবর। আর কথাবার্তাগুলো বাণী-বচনের মতো। মুখে স্বীকার না করলেও দুই দলের নেতা-কর্মীরা ভালোই জানেন সারা দিনই কী পরিমাণ সত্য কথা বলেন ওবায়দুল কাদের, মির্জা ফখরুল, কামরুল ইসলাম, রুহুল কবির রিজভী, হাছান মাহমুদরা।

আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও উচ্চমার্গের। জীবনে কখনো মিথ্যা বলেন না বলে জানিয়েছেন এই প্রবীণ অ্যাডভোকেট। বলার অপেক্ষা রাখে না দলে, সরকারে, রাজনীতিতে এমনকি আমাদের সমাজেও তারা বিশিষ্টজন। তারা মহান, মাননীয়, মহাশয়।

যেসব কারণে চন্দ্রবিন্দু ( ঁ) ছাড়া লিখলে ব্যাকরণসিদ্ধ হয় না তাদের মতো বরেণ্য-বিদগ্ধদের নাম। টেলিভিশনের কল্যাণে মানুষ নিয়মিত দেখছেন-শুনছেন তাদের সত্যাচার। যা বোঝার বুঝছে, জানছেও। গণমাধ্যমকর্মী বিশেষ করে রিপোর্টাররা কখনো কখনো আগেভাগেই জানেন আজ কোন নেতা, কোন ভঙ্গিতে, কোথায় কোন সত্য কথাটি বলবেন।

এ নিয়ে নিউজরুমে বহু মজাদার কথামালা রয়েছে। সত্যচর্চার এই সংস্কৃতি আল্লাহ চাহে তো রাজনীতির মাঠ গড়িয়ে এখন অন্যদেরও পেয়ে বসেছে। মিথ্যা বলেন না কেউ। ফুটপাথের ফেরিওয়ালা-দোকানদার থেকে শুরু করে শিক্ষক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমাম-খতিব থেকে ভিখারি পর্যন্ত। সত্যাচারের সঙ্গে যে যা পারছেন করেও ছাড়ছেন। একটু সাহস করে শুদ্ধাচারের কাণ্ড ঘটিয়ে দিলেই হলো।

শঙ্কার কিছু নেই। মাঝেমধ্যে কিছু কিছু ঘটনার বিচার যে একদম হচ্ছে না, এমনও নয়। এর পরও অঘটনের লাগামে টান পড়ছে না। অপরাধীরা শক্তিধর। তাদের রক্ষাকর্তাও অগুনতি। সেই অনুপাতে ভরসা বা মুরব্বি পায় না আক্রান্তরা। কোনো মালিকই দুর্বল মালের বোঝা নেন না। মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরী ভাতিজিকে পুড়িয়ে মেরে ফেলেন চাচি।

মামুলি অপরাধে শিশু-কিশোরদের গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো, পায়ুপথে বায়ু ঢুকিয়ে আয়ু শেষ করার মতো ঘটনা পশুরাজ্যেও নেই। রোগীর পেটে সুই-সুতা, ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে ফেলেন ডাক্তার। পরে বলেন, তা তেমন ব্যাপারই না। এমনটা হতেই পারে, হয়েই থাকে। আর সম্ভ্রম নষ্টর এখন হরেক রকমফের। মায়ের সামনে মেয়েকে। মেয়ের সামনে মাকে। অথবা মা-মেয়েকে একসঙ্গে।

চলন্ত বাসে-ট্রাকে, ট্রেনেও যোগ হয়েছে। সম্ভ্রম নষ্টর পর হত্যা বা তার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে দেওয়ার ডিজিটাল কর্মও বেশ এগিয়েছে। এ ধরনের কয়েকটি ঘটনায় ক্ষমতাসীনদের সম্পৃক্ততা বেশ আলোচিত। গা শিউরে ওঠা এমন ঘটনার একটার চেয়ে আরেকটায় বেশ আপডেট। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পর প্রায়ই ঘটনা উল্টে যায়। সত্যটা মিথ্যা হয়ে যায়। সেই ফলোআপ খবরগুলো গণমাধ্যমে তেমন প্রচার পায় না। মানুষ ভুলেও যায়।

আসলে সত্য-মিথ্যা, সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ সবই এখন আপেক্ষিকতায় ঠাসা। ভুলেও মিথ্যা বলছেন বলে কারও স্বীকারোক্তি নেই। যে যা বলেন সবই সঠিক, সত্য, উচিত। দশ কথার এক কথার মতো। মুখের সঙ্গে তাদের শরীরী ভাষাও সেই বার্তাই দিচ্ছে। এখানে দুটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হয় রাজনীতিকরা গোটা দেশের বেশির ভাগ মানুষকে তাদের বৈশিষ্ট্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন।

নইলে রাজনীতিকরা মানুষের মতো হয়ে গেছেন। মিথ্যাচার-কপটতার এই প্রতিযোগিতায় কোথাও কোনো বাধা পড়ছে না। বরং তাদের জন্য বরাদ্দ বিশেষ আদর-সমাদর, আদাব-সালাম। তোয়াজও বাড়ে। হিম্মতের প্রমাণ মেলে। রাজনীতির মাঠের এই আচার সমাজেও জেঁকে বসেছে পোক্তমতো।

নিষ্ঠুর, নির্মম, বীভৎস অপরাধের পরও সাহসী-মহাযুক্তিবাদী তারা। পক্ষে রথী-মহারথীও ভূরিভূরি। রাজনীতিকদের মতো থোঁতার জোর আর বিপরীতে ভোঁতা অনুভূতি। এর জের আর কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে? আক্ষেপ করে তাই অনেকেই বলছেন, অনুভূতিকে ভোঁতা না বানালে এখন নিরাপদে থাকা কঠিন। নয় তো আপদের বিপদও নিশ্চিত। হাল নমুনাদৃষ্টে থোঁতার জোরে বলীয়ান হওয়ার চেষ্টা মিতভাষীরাও।

নইলে নাকি আনস্মার্ট হিসেবে চিহ্নিত হতে হয় কর্মস্থলসহ পাড়া-মহল্লায়ও। তাই থোঁতার জোরে বোধকে ভোঁতা করে দিনকেও রাত বানানোর চেষ্টা। গাঁজার নৌকা পাহাড় দিয়ে চালানোর লড়াই। অযোগ্যতাই যোগ্যতা, নীতিহীনতাই নীতির প্রতীক, কাপুরুষদের সুপুরুষের আসনে গেড়ে বসার এ আজব ধারা কি গজবের চেয়েও কম? শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনকে এ গজবে বিবেচনা করলে কিছুটা একতরফা হয়ে যাবে।

মিথ্যাচার-শঠতা, চাতুরী, কথার বিকৃতি অরাজনৈতিক মহলেও অহরহ। এ ক্ষেত্রে সবল-দুর্বল, ক্ষমতাবান বা ক্ষমতাহীন কোনো বিষয় নয়। যে যার সাধ্যমতো চালিয়ে দিচ্ছেন। আপনি আঙ্গুল উঁচিয়ে চাঁদ দেখালেন। আমি চাঁদ না দেখে কেবল আপনার আঙ্গুল দেখছি। আর বলছি, ওই ব্যাটা আমাকে আঙ্গুল নাচিয়ে শাসিয়েছে। ব্যস। বহু সাক্ষী এবং প্রত্যক্ষদর্শী ভিড়বে আমার পক্ষে।

অজগাঁয়ের স্কুল থেকে দেশসেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নৌকার মাঝি থেকে বিমানের পাইলট, ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, এমনকি মহল্লার ছাপড়া মসজিদ থেকে বায়তুল মোকাররম কোথায় নেই এ চর্চা? কেউ কারে নাহি ছাড়ে। কার চেয়ে কম? মানবসভ্যতার এ কোন স্তরে আমাদের বাস?

বঙ্গবন্ধু কি তবে আমাদের এমন গুরুচরণ দশার কথা জীবদ্দশাতেই মালুম করেছিলেন? নইলে তিনি কেন বলে গেছেন— ‘অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোনো দিন একসঙ্গে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়। ’

কোন পরিস্থিতি দেখে বা বুঝে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন দেশের জন্মদাতা? বঙ্গবন্ধুর নামে জিকির তুলে ফিকিরে ব্যস্তদের তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নিম্নোক্ত প্যারাটি মনোযোগের সঙ্গে পড়ার সনির্বন্ধ অনুরোধ। .... ‘আমাদের বাঙ্গালিদের মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হল আমরা বাঙালি”। পরশ্রীকাতরতা আর বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে।

বোধ হয় দুনিয়ার কোনো ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, “পরশ্রীকাতরতা”। পরের শ্রী দেখে যে কাতর হয় তাকে “পরশ্রীকাতর” বলে। ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই পাবেন, সকল জাতির মধ্যেই কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙ্গালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয় না। এই জন্যই বাঙালি জাতির সকল রকম গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।’

ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম মর্যাদা দেওয়ায় সংস্থাটির গুণগানে কোরাস তুলেছি। এ নিয়ে আনন্দভরা মিছিল-সমাবেশ। অঘোষিত ছুটি, ফ্রি ট্রান্সপোর্ট, বিরিয়ানি এবং পকেট ভারীর ব্যবস্থা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানটির গুরুত্বও যেন আরও বেড়ে গেল। এর আগে রামপাল ইস্যুতে আপত্তি তোলায় এই ইউনেস্কোই ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষ রাজাকারের দোসর।

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলায় বিশ্বব্যাংকের জায়গা হয়েছে বিএনপি, জামায়াত, ড. ইউনূস, পাকিস্তানের এজেন্টের কাতারে। আবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রশংসা ও ভবিষ্যতে ঋণ বাড়ানোর ঘোষণায় বিশ্বব্যাংকে ধন্যবাদের বন্যা।

মানবতাবিরোধী অপরাধে কাদের মোল্লা, নিজামী, মুজাহিদ, সাকা চৌধুরীদের ফাঁসির সমালোচনা করায় তুরস্কের পিণ্ডি উদ্ধার। সেই তুরস্ক রামপাল প্রকল্পে সমর্থন দেওয়ায় অবাক করা পরিবর্তন। চারিত্রিক সনদের মতো তুরস্কের সমর্থনকে ফেরি করার সার্কাস মানুষকে বেশ বিনোদিত করেছে। রোহিঙ্গাদের পাশে সবার আগে ছুটে আসায় তুরস্কের ফার্স্ট লেডিকে সে কি যত্ন-আত্তি!

আপেক্ষিকতার কাণ্ডকারখানা এখানেই শেষ নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তনকারী বলায় সিইসি নূরুল হুদার প্রতি কি তুষ্টই না হয়েছে দলটি। তার প্রতি বিএনপির নমনীয়-কমনীয়তা ছিল বিস্ময়ে। এতে আওয়ামী লীগ নেতাদের গোসসা। প্রয়োজনে তাকেও ক্যান্সার বানিয়ে দেশান্তরী করার হুঁশিয়ারির বায়োস্কোপ।

পরে আওয়ামী লীগের ১১ দফাসহ সরকারের কিছু বিষয়ের প্রশংসায় বিগড়ে যায় বিএনপি। রাগে-ক্ষোভে গরম হয়ে যান মির্জা ফখরুলের মতো নরম মানুষও। ধমকালেন সিইসিকে। বললেন, তোষামোদী ছাড়ুন। নিরপেক্ষভাবে কাজ করুন। প্রতিবেশী ভারত প্রশ্নেও বড় দল দুটির আপেক্ষিক ক্রিয়া-কর্ম স্পষ্ট। কিছু দিন আগেও তারা দিল্লি ইস্যুতে কী করেছেন, কী বলেছেন? আর এখন?

সবই ভাগমতো পাওয়ার এই উন্মাদনায় অত্যন্ত স্পর্শকাতর সেনাবাহিনীকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়েও জুতমতো যত কথা। নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনী থাকলে বা না থাকলে কার কেমন লাভ-লোকসান? গত কিছু দিনের বিশেষ কয়েকটি ঘটনায় তাই বঙ্গবন্ধুর ভবিষ্যদ্বাণীর মাজেজা-শানে নজুল উদ্ধারের ব্যর্থ চেষ্টা। কূলকিনারা হাতড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।

কী সব আলামত বুঝে তিনি বাঙালির স্বভাব, নেতৃত্ব, বৈশিষ্ট্য, ভবিষ্যৎ, অত্যাচার সহ্য করার আভাস এভাবে দিয়ে গেছেন? আমাদের ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ এত আপেক্ষিক হয়ে যাবে— এত বছর আগে কীভাবে তা বুঝলেন তিনি? ভাগে বা পক্ষে কম পড়লেই ভালো-মন্দের চূড়ান্ত ফয়সালায় চলে যাচ্ছি সবাই। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই নিজের অনুভূতিটা ভোঁতা করে রাখার বিকল্প কী?

অবস্থার নিরিখে বোধচর্চা ভয়ঙ্কর। সঠিক বা উচিত কথা বললেই বামন বেজার। এই বামনরা টিলা ছাড়া আর কিছু না চেনায় হিমালয় দেখাতে গেলে মাশুল তো গুনতেই হবে। তাই ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন জাগে, এত আপেক্ষিকতায় ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’-এ ফেলে দেওয়া হচ্ছে না তো রাজনীতিসহ গোটা দেশকে? - বাংলাদেশ প্রতিদিন

লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; বার্তা সম্পাদক, বাংলাভিশন।
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে