বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:২৯:১৪

রোহিঙ্গা নিয়ে কী থাকছে চুক্তিতে?

রোহিঙ্গা নিয়ে কী থাকছে চুক্তিতে?

নিউজ ডেস্ক : বিশ্ব চাপে অবশেষে নতি স্বীকার করেছে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো লিডার অং সান সু চি। তার আলোকেই গতকাল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উচ্চপর্যায়ের দুই দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে। গতকাল দুই দেশের কর্মকর্তারা দিনব্যাপী তিনটি বৈঠক করেন। এই বৈঠকের ওপর আশাবাদী উভয় পক্ষ।

গতকাল সকালে প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক। এরপর দুপুরে মিয়ানমার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এরপর বিকালে সেখানেই দুই দেশের কর্মকর্তারা তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলরের দফতরের মন্ত্রী খিও তিন্ত সোয়ে।

বৈঠক শেষে দুই দেশের কোনো কর্মকর্তাই সাংবাদিকদের আলোচনার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। তবে মিয়ারমারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বেশকিছু বিষয় মাথায় রেখেই একটি চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা চলছে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া মসৃণ করতে বিভিন্ন ধারা, শর্ত নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

আজ রাজধানী নেপিডোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে মিয়ারমারের ডি ফ্যাক্টো লিডার অং সান সু চির মধ্যে একটি চূড়ান্ত বৈঠক হবে। সেখানে রোহিঙ্গাদের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত নেওয়ার বিষয়টিই প্রাধান্য পাবে। এ বিষয়ে সেখানেই একটি চুক্তি হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

গতকাল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে এই বৈঠকে একটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ (গতকাল) বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হলে বৃহস্পতিবারই (আজ) চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আশাবাদী। এর আগে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি মন্তব্য করেছিলেন রাখাইন রাজ্যে রাতারাতি শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যেটি করার চেষ্টা করছি তা হলো, একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে যাওয়া শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করা। আসলে অতি দ্রুত কিছুই সম্ভব নয়। যেমন রাতারাতি রাখাইনে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাও সম্ভব নয়। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমরা একটি কার্যকর অগ্রগতি নিয়ে আসতে পারব।’

রাখাইনে শান্তিশৃঙ্খলা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমারকে সব ধরনের সহায়তা করতে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেন সু চি। তিনি সংকট সমাধানের দীর্ঘস্থায়ী পথ গ্রহণের কথাও জানান সংবাদ সম্মেলনে।

এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক উপলক্ষে ইতিমধ্যে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে মিয়ানমার সফর করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। বহুপক্ষীয় এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে গতকাল থেকে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে এই বৈঠক শুরু হয়েছে। জানা গেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অং সান সু চি নন, মিয়ানমারের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে আশ্রয় নেওয়া ৬ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে থাকা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার সবাইকে ফিরিয়ে দেওয়াই এ আলোচনার উদ্দেশ্য। তবে বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের যে ডাটা বাংলাদেশ তৈরি করেছে তা যাচাই বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘকে রাখতে চায়। সেই সঙ্গে ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গেই জাতিসংঘের সরাসরি অংশগ্রহণ চায় বাংলাদেশ। -বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে