নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আছেন সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা বিধৌত চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নের মেধাবী প্রকৌশলী রকিবুল হাসান ঝন্টু (২৯)। সোমবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখনও কান্নার রোল চলছে বাগুটিয়ার বিনানই গ্রামে রকিবদের বাড়িতে। আর মেধাবী এই প্রকৌশলীকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান চৌহালীবাসীও।
রাকিবুল হাসানের স্ত্রী ইমরানা কবীর হাসি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। তাকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমা কাটাতে গিয়েছিলেন নেপালে। বিধ্বস্ত উড়োজাহাটিতে ছিলেন তারা। দুইজনেই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও রাকিবুল মারা যান। ইমরানা কবীর হাসি আইসিইউতে আছেন।
বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও শম্ভুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাহহার আকন্দ জানান, ছোটবেলা থেকেই রকিব ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তার বাবা প্রয়াত রবিউল করিম ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী স্কুলশিক্ষক। একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় রকিবের বাবা মারা যান। কিন্তু এর পরও রকিব থেমে থাকেননি। মেধা ও শ্রম দিয়ে নিজের জীবন গড়ে তুলছিলেন। রাজশাহী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে একটি বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। বিনয়ী আচরণের কারণে তাকে এলাকার লোকজনও খুব ভালোবাসত। গ্রামে এলেই তিনি আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীর সঙ্গে দেখা করতেন। গত বছর বন্যার সময় রকিবুল ও তার স্ত্রী এলাকার মানুষকে অনেক সাহায্য-সহযোগিতা করেন। এমন নিরহংকারী মানুষকে হারিয়ে এলাকার প্রতিটি মানুষ হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।
চাচাতো ভাই বাবু জানান, দু'বছর আগে টাঙ্গাইল জেলার হাজারীঘাট এলাকার ইমরানা কবির হাসিকে বিয়ে করেন রকিব। হাসি রাজশাহী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাকে সঙ্গে নিয়ে ১৫ দিনের ছুটিতে রকিব নেপাল বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন রকিব না থাকলেও আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন হাসি। রকিবের একমাত্র বোন রুমা আক্তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। বৃদ্ধ মা ছেলের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। তাই ছেলের মৃত্যুতে তিনিও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি