নিউজ ডেস্ক : নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি বিমান সোমবার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় পাইলটের ভুলের বিষয়টি উল্লেখ করেছে ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে ইউএস-বাংলা জানিয়েছে, পাইলটের গাফিলতি কিংবা বিমানের ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেনি।
দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি যাত্রী শাহরিন আহমেদ বলেন, বন্ধুর সঙ্গে বেড়ানোর জন্য নেপালে আসছিলাম। যখন বিমানটি অবতরণ করে, ওই সময় বাঁ দিকে হেলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। আমি পেছন ফিরে দেখি আগুন ধরে গেছে।
তিনি অারো বলেন, আমার বন্ধু তাৎক্ষণিকভাবে জানায়, তার সঙ্গে দৌড় দিতে। কিন্তু দৌড় দেওয়ার আগেই আমার বন্ধুর গায়ে আগুন লেগে যায়। তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়।
তিনি আরো বলেন, মানুষের গায়ে আগুন ধরে যাচ্ছিল। তারা সবাই চিৎকার করছিল। তিনজন দেখলাম লাফিয়ে পড়লো। ওই সময় বিমানের ভেতরের দৃশ্য সত্যিই একেবারে বীভৎস ছিল। সেই মুহূর্তে কেউ একজন আমাকে নামিয়ে নিল।
বর্তমানে শাহরিন আহমেদ নেপালের কাঠমান্ডু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেখান থেকেই কাঠমান্ডু পোস্টকে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশি নাগরিক মেহেদি হাসান ছিলেন ওই বিমানে। প্রথমবারে মতো বিমানে করে স্ত্রী, কাজিন এবং তার মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, একেবারে পেছন দিকে আমার আসন ছিল। আগুন লাগার বিষয়টি বুঝতে পেরেই আমার পরিবারের কাছে ছুটে যাই। জানালা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে কয়েকজন এসে অামাদের উদ্ধার করেছে। আমি আর আমার স্ত্রী বের হতে পারলেও আমার কাজিন এবং তার মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
পাণ্ডে নামের নেপালের এক যাত্রী জানান, একদিন আগে তার নেপালে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বাড়তি আরো একদিন থেকে যান তিনি। পরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
তিনি আরো জানান, সামনের দিকে আসন ছিল তার। সেখানে আরো বেশ কয়েকজন নেপালি ছিলেন। এমবিবিএস পড়া শেষ করে কয়েকজন ছাত্রও ফিরছিল। কিন্তু অবতরণের সময় দেখা যায় তা রুট পরিবর্তন করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যখন দেখলাম বিমানটি বাড়িঘর এবং গাছের কাছাকাছি দূরত্বে উড়ছে, ওই সময় যাত্রীদের অনেকেই ভয় পেয়ে যায়।
ওই সময়ই বুঝেছিলাম আমাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে। বিমানটি অন্যদিক থেকে অবতরণের সময়ও মনে হয়েছে আমাদের ভুগতে হবে। তার পরেও অবতরণের মিনিট দুয়েক আগেও আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু যখন অবতরণের পর একটি শব্দ শুনতে পেলাম। তার পর সবাই নিজেদের বাঁচানোর প্রচেষ্টা শুরু করলাম।
তিনি আরো বলেন, পায়ে আঘাতের কারণে আমি বের হতে পারলাম না। চারিদিকে কেবল ধোঁয়া দেখেছি। পরে নেপালের সেনাবাহিনী এসে আমাকে উদ্ধার করে।
এমটিনিউজ/এসএস