শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ০৮:৫৫:০৭

‘যে ভাবেই হোক মাকে বাঁচাতে হবে’

‘যে ভাবেই হোক মাকে বাঁচাতে হবে’

স্কুলে যে দিন মিড ডে মিলে তাকে ডিম দেওয়া হত, তখনই তা চট করে পকেটে পুরে নিত অমিত। এবং তা সবার অলক্ষ্যে। স্কুল ছুটি হলেই ডিমটি নিয়ে এক ছুটে বাড়িতে এসে মায়ের হাতে তুলে দিত ন’বছরের বালক। সরকারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র অমিত কোড়া। সংসারে তিন বোন আর মা। পরিবারের একমাত্র ছেলে সে। বোনেরা খুবই ছোট। অভাব-অনটন তাদের পরিবারের নিত্যসঙ্গী। বেশির ভাগ দিনই খাবার জোটে না। অমিতের মা পরিচারিকার কাজ করতেন। কিন্তু দু’বেলা খাবার না জোটায় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন তিনি। লোকের বাড়িতে কাজ করাও বন্ধ হয়ে যায়।

চিকিৎসকরা বলেছেন, ভাল খাবার না খেলে এ রোগ সারার নয়। রোজ একটা করে ডিম খেতেই হবে।

অমিতের মা সাবিত্রীদেবী বলেন, ‘দু’বেলা খাবার জোটে না যেখানে, ডিম তো স্বপ্ন!’ চিকিৎসকরা যখন ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন, অমিত সেটা শুনেছিল। আর সেই পরামর্শটা ছোট্ট ছেলেটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছে মাত্র। মাকে বাঁচাতে মিড ডে মিলে পাওয়া ডিমটি লুকিয়ে নিয়ে এসে মায়ের হাতে তুলে দিত সে।

অমিত বলে, ‘মাকে যে ভাবেই হোক বাঁচাতে হবে। মা চলে গেলে কে দেখবে আমাকে। কে আমাকে আদর করে স্কুলে পাঠাবে?’ সে আরও বলে, ‘মা যে দিন সুস্থ হয়ে উঠবে সে দিন ডিম খাব।’

মাদার্স ডে কি অমিত জানে না। শুধু জানে, মায়ের ভালবাসা আর স্নেহ থেকে সে যেন বঞ্চিত না হয়। মাকে ভালবাসতে জানে, মায়ের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য নিজের খাবারটুকুও মাকে তুলে দিতে জানে। ছোট্ট ছেলেটির এত বড় দায়িত্বজ্ঞান দেখে শিক্ষকরাও অবাক।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে