শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮, ০৪:৩০:১৩

অতিতের প্রথা ভেঙে উল্টো পথে পেঁয়াজের দাম

অতিতের প্রথা ভেঙে উল্টো পথে পেঁয়াজের দাম

নিউজ ডেস্ক: রোজার মাস আসলেই পেঁয়াজের দাম বাড়বে, কয়েক বছর ধরে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এটি। এবারও রোজার শুরুতে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। তবে অতিতের প্রথা ভেঙে উল্টো পথে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বাজারগুলো রোজা শুরু পর পেঁয়াজের দাম বাড়েনি, বরং কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে।

শুক্রবার (২৫ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি রোজার প্রথম সপ্তাহে দাম কমেছে শশা, গাজার, বেগুনসহ প্রায় সকল সবজির। তবে বয়লার মুরগির দাম কিছুটা চড়া।

পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে দেশি এবং আমদানি করা উভয় পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খরচ কমেছে। ফলে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমেছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ বাজার ও মান ভেদে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা (ভারতীয়) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫০-৫৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫-৩৮ টাকা কেজি।

হাজীপাড়া বৌ-বাজারের ব্যবসায়ী মো. আলামিন বলেন, প্রায় দশ বছর ধরে আলু-পেঁয়াজের ব্যবসা করছি। অতিতে কখনো দেখিনি রোজার ভেতরে পেঁয়াজের দাম কমেছে। এবার প্রথম রোজার ভেতরে পেঁয়াজের দাম কমতে দেখছি। রোজা শুরুর আগে যে দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, এখন তা ৩৫ টাকা বিক্রি করছি।

দাম কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যান্ত। আড়তেও পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। আবার ভারতও পেঁয়াজের দাম কমিয়েছে। ফলে আমদানি করা পেয়াজের দাম কমে গেছে। এর প্রভাবে দেশি পেঁয়াজের দামও কমেছে।

সেগুনবাগিচায় ভ্যানে করে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন মো. আফজাল। তিনি জানান, প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ২০ টাকা। রোজার আগে একই পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছেন। এখন আড়ৎ থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন বলেই কম দামে বিক্রি করতে পারছেন।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম অনেক কম। রোজার আগে যে পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ২০০ টাকা বিক্রি করেছি, এখন তা বিক্রি করছি ১৫০ টাকায়।

এদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি রাজধানীর বাজারগুলোতে কমেছে সবজির দামও। রোজার শুরুতে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া শশা ও গাজার এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেগুন, চিচিংগা, করলা, পটল, ঢেঁড়স, বরবটিসহ প্রায় সকল সবজি।

গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া চিচিংগার দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪০-৪৫ টাকা। বেগুনের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৮০ টাকা। ৮০ টাকায় ওঠে যাওয়া পেঁপের দামও কমে এসেছে। বাজার ভেদে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি।

এছাড়া পটল, বরবটি, ঢেঁড়সে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে বাজারে সব থেকে বেশি দামি সবজি ছিল কাকরল। এ সবজিটির দামও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাকরল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়।

অন্যদিকে সবজির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে শাকের দাম। লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাক আগের সপ্তাহের মতো ১০-১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পুঁই শাক ও লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা আটি।

রোজার প্রথম দিকে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা বাড়লেও তা কমে এসেছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা পোয়ায় (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম এখন ১০-১৫ টাকা। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে কক মুরগির। গত সপ্তাহে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লাল কক মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ২০০-২২০ টাকা। আর সাদা বয়লার মুরগির দাম আগের সপ্তাহের মতো ১৫০-১৫৫ টাকা কেজিতেই বিক্রি হচ্ছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে