বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১১:৩০:৫৫

তবে কি বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত? যা জানা গেলো…

তবে কি বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত? যা জানা গেলো…

নিউজ ডেস্ক: এবারের বিশ্ব ইজতেমার স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন ও তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে বসা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও তাবলিগ জামাতের বিবাদমান দুই পক্ষই জানুয়ারিতে পৃথক পৃথক তারিখে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার ঘোষণা দিয়েছিল। ভারতের তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে তাবলিগ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারত যাবে। একাধিক মন্ত্রণালয় ও তাবলিগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ। একইসঙ্গে তাবলিগের জামাতের মধ্যে বিরোধও রয়েছে। এসব বিবেচনায় তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাবলিগের দুই পক্ষের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তারা কোনও জোড় (জমায়েত), ওজহাতি জোড় (স্পষ্টকরণ জমায়েত) কিছুই করতে পারবেন না। এছাড়া একটি প্রতিনিধি দল ভারত যাবে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আলাপ আলোচনা করে সমাধান করবেন।’

বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত প্রসঙ্গে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হলে দুই পক্ষ বসেই তারিখ নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে।’

জানা গেছে, ভারতের তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীরা গত বিশ্ব ইজতেমার পর ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমার জন্য ১১, ১২, ও ১৩ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন। অন্যদিকে ভারতে মাওলানা সাদবিরোধীরা ও হেফাজতপন্থী কওমি আলেমদের নিয়ে সম্প্রতি ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেছিল। একইসঙ্গে দুই পক্ষই পৃথক তারিখে জেলা ভিত্তিক জমায়েতের তারিখ নির্ধারণ করেছিল। আর এই জমায়েতকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে বসা বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এছাড়া তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের মধ্যে শুরা সদস্য মাওলানা যুবায়ের আহমদ ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আলেমদের মধ্যে শোলাকিয়া ঈদগাহর খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্‌দীন মাসঊদ ও গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসানও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নাল আবেদিন, পুলিশের আইজি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ধর্মসচিব, সেতু বিভাগের সচিব, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ।

বৈঠক সূত্র জানায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন যথাসময়ে হলে ইজতেমা করা যাবে। না হলে হয়তো ইজতেমা পেছানো লাগতে পারে। নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচন কমিশন তাই ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত বলে ঘোষণা না করাই ভালো।’

বৈঠকে দুই পক্ষই নিজদের পক্ষে সাফাই বক্তব্য রাখেন। একপক্ষ জানায়, মাওলানা সাদ ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। অন্যপক্ষে দাবি, ন মাওলানা সাদ ভুল স্বীকার করেননি। এ কারণে বিষয়টি পরিষ্কার হতে ভারতে একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবেন। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, মাওলানা ফরীদ উদ্‌দীন মাসঊদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, তাবলিগের আহলে শুরা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মদ যোবায়ের, ধর্মসচিব মো. আনিছুর রহমান ও আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ।

এ প্রসঙ্গে শোলাকিয়া ঈদগাহর খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্‌দীন মাসঊদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি সমাধান হওয়া জরুরি। আলোচনার মধ্যে সমাধান হতেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য একটি প্রতিনিধি দল ভারেত যাবে বলেও তিনি জানান।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে