শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ১০:৩১:২১

ফের বিতর্ক ডেকে আনলো মামুনুলরা

ফের বিতর্ক ডেকে আনলো মামুনুলরা

স্পোর্টস ডেস্ক : পাঁচ ফুটবলারের কয়েক ঘণ্টার জন্য ক্যাম্প ত্যাগ মানতে পারেননি টম সেন্টফিট। তবে কাল ওই পাঁচ খেলোয়াড়কে অনুশীলনে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের বেলজিয়ান কোচ। যথারীতি দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন মামুনুল, রায়হান, সোহেল, সোহেল রানা ও জুয়েল রানা।

এই পাঁচ ফুটবলার পরশু আন্তঃবাহিনী ফুটবলের ফাইনালে খেলতে গেছেন বাফুফের অনুমতি নিয়ে। ফের বিতর্ক ডেকে আনলো মামুনুলরা। কিন্তু কোচ অনুমতি দেননি বলেই বিষয়টা নিয়ে কথা হচ্ছে অনেক। একই সঙ্গে তাঁরা ক্লাবের খেলোয়াড় হওয়ায় আরেকটি বিতর্কও উঠে এসেছে। সামনে জাতীয় দলের ম্যাচ আছে ভুটানের সঙ্গে। জাতীয় দলের ম্যাচ মানে জাতীয় স্বার্থই আগে। কথাটা সেন্টফিট বারবার বলেছেন। কাল মামুনুল ইসলামও তার সঙ্গে সুর মেলালেন, ‘জাতীয় দলই আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তাহলে জাতীয় দলের ক্যাম্প ছেড়ে পাঁচ ফুটবলার সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাচ খেলতে গেলেন কীভাবে? মামুনুল, রায়হানরা যেহেতু চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়, তাই এই প্রশ্নও আসছে এঁরা আসলে কার? চট্টগ্রাম আবাহনীর, না নৌবাহিনীর?

চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার শাকিল মাহমুদ বলেছেন, ‘ওরা চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়। এক বছরের জন্য চুক্তি। নৌবাহিনীতে ওরা কখন চাকরি নিয়েছে, আমাদের জানা নেই।’

এই খেলোয়াড়েরা বলছেন নৌবাহিনীর ম্যাচ তো সারা বছর থাকে না।  ক্লাবেই তাঁরা সারা বছর থাকেন। আবার বলা হয়, খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার আর কয় দিনের। আগামী দিনের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে ক্ষতি কী! তবে অনেকে এটিকে এত সরলীকরণ করতে রাজি নন। তাঁরা বলছেন, শীর্ষ ফুটবলাররা এমনিতেই ক্লাব থেকে অনেক টাকা পান। কাজেই তাঁরা কেন বাহিনীতে যাবেন? বাহিনীতে যেতে পারেন নিচের দিকের খেলোয়াড়েরা, যাঁরা ক্লাব থেকে সেভাবে টাকা পান না।

ক্লাবে খেলার জন্য বাহিনী ছেড়ে আসার উদাহরণ আছে বাংলাদেশের ফুটবলেই। জাতীয় দলের ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন সেনাবাহিনী ছেড়ে নাম লেখান ক্লাবে। গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাও তাঁকে অনুসরণ করেন। তাহলে এখন মামুনুল-এমিলিদের ক্ষেত্রে কেন উল্টোটা হচ্ছে—এই বিতর্কও আছে।

মামুনুল-এমিলি-জাহিদসহ জাতীয় দলের নয় ফুটবলার নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন ধাপে ধাপে। শুরুটা হয়েছিল ১৬ মাস আগে। এমিলি ও মামুনুল চিফ পেটি অফিসার। বাকিরা পেটি অফিসার। তাঁদের সুবিধা হলো, নৌবাহিনীতে অফিস করতে হয় না, শুধু খেলার সময় খেলা।

বেতনের বাইারে তাঁরা সরকারি সুযোগ-সুবিধাও পান। মামুনুল জানালেন, রেশন-সুবিধা পেলেও তাঁরা নাকি নেন না। থাকার জন্য ফ্ল্যাট আছে, ওটাও নেন না। তবে জাতীয় দলের সঙ্গে বিদেশে গেলে প্রতিদিন ১০০ ডলার বা প্রায় আট হাজার টাকা পান। গত সাফে দশ দিনে আশি হাজার টাকা পেয়েছেন মামুনুল। চোট পেলে চিকিৎসা খরচের বড় একটা অংশও পান নৌবাহিনী থেকে। এবার আন্তঃবাহিনী খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় মামুনুল-এমিলি দুটি ফিতা পাচ্ছেন, আগে ছিল একটি।

হকিসহ আরও অনেক খেলারই শীর্ষ খেলোয়াড়দের নিয়ে নৌবাহিনী শক্তিশালী ক্রীড়াদল গড়ে তুলেছে। তবে মামুনুল বলেছেন, ‘টাকা বা সুযোগ–সুবিধা নয়। নৌবাহিনী আমাদের সম্মান দিচ্ছে। সেটাই বড় আমাদের কাছে।’ জাতীয় দলে খেলে কিছু পান না বলে খেলোয়াড়দের অনেক অনুযোগ শোনা যায় প্রায়ই। তাই এখন ‘জীবনের নিরাপত্তায়’ নৌবাহিনীকে পাশে পেয়ে তাঁরা খুশি।

কিন্তু দ্বন্দ্বটা হচ্ছে অন্য জায়গায়। জাতীয় দলের ক্যাম্প চলার সময় পাঁচ খেলোয়াড়কে অনুশীলনে না পেয়ে কোচ চটেছেন। এটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কলম্বো থেকে মুঠো ফোনে কাল বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বললেন, ‘এ বিষয়টি আমি আবছা-আবছা জানি। তবে পাঁচ খেলোয়াড়কে কোচের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনুমতি আমি দিইনি। ওটা টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার।’

এক খেলোয়াড়ও স্বীকার করেছেন, সালাউদ্দিন অনুমতি দেননি। আজই দেশে ফিরে বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন।-প্রথম আলো
২৬ আগস্ট ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে