শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:৫০:১৪

ইনজুরি নিয়েও সেরা মাশরাফি

ইনজুরি নিয়েও সেরা মাশরাফি

স্পোর্টস ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার সময়ই বয়ে এনেছেন হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। আজ চার ম্যাচ হলো, সেই চোট নিয়েই খেলছেন। বেশ বাজে অবস্থা হ্যামস্ট্রিংয়ের। খেলা ঠিক না, তিনি নিজেও জানেন। কিন্তু খেলবেনই। কুমিল্লার অবস্থা ভালো না।

তার নিজের ভাষায়, দলের বিপদে তিনি ‘পালাতে’ চান না। তা সেই দলটা জাতীয় দল হোক বা কুমিল্লা, আবাহনী হোক বা কলাবাগান, কিংবা পাড়ার একতা যুব সংঘ বা কিছু। দলটাই ভাববেন। উচিত কি অনুচিত, সেটা নিয়ে আপনি-আমি বিতর্ক করতে পারি। তাকে বোঝানোও যেতে পারে। তিনি শুনবেন, বুঝবেন। কিন্ত করবেন নিজেরটাই। দলের জন্য সব করবেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা।

যাই হোক, সেসব নতুন কিছু নয়। আমার লেখার বিষয় অন্যটি। হ্যামস্ট্রিংয়ের এই বাজে অবস্থাতেই আজ বাধ্য হলেন রান আপ শর্ট করতে। মাত্র কয়েক পা দৌড়ে বল করেছেন আজ। ৪ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট। মজার ব্যাপারটা এই বোলিং ফিগার। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, বিপিএল তো বটেই, ঘরোয়া টি-টিয়েন্টিতে ম্যাশের সেরা বোলিং এটাই!

আগের সেরা ছিল ২৪ রানে ৩ উইকেট। সেই ২০১০ সালের এপ্রিলে জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টিতে, সিলেটের হয়ে ঢাকার বিপক্ষে। উইকেট তিনটি ছিল ইমরান নাজির, মাহমুদউল্লাহ ও জিবন মেন্ডিসের। বিপিএলে আগের সেরা বোলিং ছিল এবারই খুলনার বিপক্ষে আগের ম্যাচে ২৬ রানে ৩ উইকেট! আজকের ১৬ রানে ৩ উইকেটের চেয়ে সেরা বোলিং তার একবারই আছে, বাংলাদেশ দলের হয়ে ১৯ রানে ৪ উইকেট।

শেষ নয় এখানেই। আজকে ৩ উইকেট নিয়ে এবারের আসরে ১১ উইকেট হলো ম্যাশের। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, চার আসরের মধ্যে বল হাতে এটিই ম্যাশের সেরা আসর! ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে ২০১২ আসরে নিয়েছিলেন ১০ উইকেট, পরেরবার ৮টি। গতবার কুমিল্লার হয়ে উইকেট ছিল মাত্র ৫টি। তবে গতবারের ব্যারপারটি আলাদা। ইনজুরির কারণে কয়েক ম্যাচে তো ব্যাটিং-বোলিং কিছুই করেননি। শুধু অধিনায়ক কয়েকটি হিসেবেই খেলেছেন। বিশ্ব ক্রিকেটেই এরকম নজীর আদৌ আছে কিনা সন্দেহ। ৫ উইকেট নয়, বরং অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়েছিলেন।

এবার নানা ঝামেলায় দল বিপর্যস্ত। নিজের চোট। চার ম্যাচ ধরে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে খেলছেন। অথচ এবারই সফলতম বিপিএল! আপনি যতোই ভাববেন, মাশরাফিকে নিয়ে আর বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই, মানুষটি আপনাকে নতুন করে বিস্মিত করবে।

আমি ভাবছি শর্ট রান আপের ব্যাপারটিও। ব্যাপারটা অদ্ভূত। ইনজুরির কারণে যতবারই শট রান আপে বোলিং করেছেন মাশরাফি, ততবারই দারুণ হয়ছে বোলিং! গত বিপিএলে দেখেছি, গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দেখেছি, আজকেও দেখলাম। তার রান আপ যখন কমে, গতি যখন কমে, ধার বেড়ে যায়। শর্ট রান আপে তার লেংথ প্রায় নিখুঁত থাকে, কাটারগুলো আরও ভালো হয়। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং, একদম ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট সুইং পায়, দুদিকেই। বল সিমে হিট করে বেশি। অদ্ভূত নয়?

ক্রিকেটীয় ব্যখ্যা থাকতে পারে, আমি ঠিক নিশ্চিত নই। হয়ত রান আপ শর্ট থাকলে সে আরও বেশি ফোকাসড থাকে। লেংথ আরও বেশি ভালো করতে চায়, সিমে হিট বেশি করাতে চায় নিয়মিত। লেংথ থেকে বল লাফায়। ব্যখ্যা অনেক কিছুই হতে পারে।

অবশ্য চোটের কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে অফ স্পিন বোলিং করে আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন যিনি, অফ স্পিনে সনাৎ জয়াসুরিয়াকে আউট করেছেন, অফ স্পিনে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব ম্যাচ হয়েছেন মোহামেডানের বিপক্ষে, তার জন্য শর্ট রান আপ আর এমন কী! তবে সবচেয়ে ভালো ব্যখ্যা আসলে, ব্যখ্যার কিছু নেই। মাশরাফিকে কোনো ব্যখ্যায় ধরা বা বোঝানো যায় না! লেখাটা-আরিফুল ইসলাম রনির ফেসবুক থেকে
০২ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে