বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:৩৬:০৫

ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ, বোলিংয়ে ধূসর বাংলাদেশ

ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ, বোলিংয়ে ধূসর বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: টেস্টের লজ্জা পর্ব শেষ। সাদা পোশাকের যা পারফরম্যান্স, তাতে আশার সলতেটাও মুষড়ে পড়েছে। সলতের সেই নিবুনিবু আলোটা দপ করে হয়ত জ্বলে উঠবার নয়, আবার জ্বলে না ওঠারও কোন কারণ নেই। সেজন্য ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে করা চাই দারুণ কিছু। কিন্তু রঙিন পোশাকে নেমে পড়ার আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে খুব আশা দিতে পারল না বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ প্রদর্শনীর পর যদিও লড়াই করার পুঁজি জমা করা গেছে, বোলিংয়ে সেটি আরও ধূসর। মিলেছে ৬ উইকেটের বড় পরাজয়ই।

টস জিতে ব্যাটিং না নেওয়ার হাহাকার সঙ্গী ছিল টেস্ট সিরিজজুড়ে। ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতিতে মাশরাফী ব্যাটিংই নিলেন, কিন্তু রানের হাহাকারটা মিটল না। ব্লুমফন্টেইনে সাকিব-সাব্বিরের ফিফটির দিনে পুরো ৫০ ওভারও ব্যাটিং করা যায়নি। ১১ বল আগে গুটিয়ে যাওয়ার সময় ২৫৫ রানের পুঁজি বাংলাদেশের। জবাবে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১ বল অক্ষত রেখেই প্রস্তুতি সারা মার্করাম-ভিলিয়ার্সদের।

টেস্টে অভিষেকেই আলো ছড়ানো এইডেন মার্করাম ও ম্যাথু ব্রিটজকে উদ্বোধনীতেই আসলে ম্যাচ শেষ করে দেন। দুজনে গড়েন ১৪৭ রানের জুটি। যা ভাঙতে অপেক্ষা করতে হয় ২৬তম ওভার পর্যন্ত। ৮ চার ও এক ছয়ে ৬৪ বলে ৮২ করা মার্করামের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসির।

সেখান থেকে ২৭ রানের জুটি। যাতে সঙ্গী অধিনায়ক জেপি ডুমিনিকে রেখে ফিরে যান ব্রিটজকে। ১৮ বছর বয়সী উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে প্রথম সাফল্য পান মাশরাফী। ৯ চারে ১০০ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে এই ডানহাতি জানিয়ে গেলেন, সাউথ আফ্রিকা তাদের ব্যাটিং তূণে দারুণ কিছু যোগ করতে যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে।

ডুমিনি অবশ্য বেশিদূর এগোতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহর বলে স্টাম্পিং হয়েছেন ৩৪ রানে। মাহমুদউল্লাহ পরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়েছেন ২ চার ও এক ছয়ে ৫০ বলে ৪৩ করে প্রস্তুতি সারা এবি ডি ভিলিয়ার্সকেও। অনেকদিন ক্রিকেটের বাইরে থাকলেও এবির ব্যাটে যে মরচে পড়েনি সেটি ভালোভাবেই জানান দিলেন এই প্রোটিয়া তারকা।

ধূসর প্রদর্শনীর দিনে মাশরাফী এক উইকেট নিলেও ৯ ওভারে খরচ করেছেন ৪৭ রান। মোস্তাফিজ ৭ ওভারে ৪৩ ও রুবেল ৮ ওভারে ৪১ রান দিয়ে তো উইকেটের দেখাই পেলেন না। সাকিব ৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩০ রানে উইকেটহীন। মাহমুদউল্লাহর ২ উইকেট ৪ ওভারে ১৩ রানে। নাসির সেখানে এক উইকেট নিতে ঢেলেছেন ৯ ওভারে ৫২ রান।

আগে পুরো সিরিজের মত শুরুটা বাজেভাবেই করেছে বাংলাদেশ। দলীয় সংগ্রহ ৬৩তে পৌঁছাতেই টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান সাজঘরে। ইমরুলের সঙ্গে ৩১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ৩ রানের অবদান রেখে ফেরেন রানখরায় থাকা সৌম্য সরকার। পরের বলেই ২৭ রান করা ইমরুল কায়েসও একই পথে। ৬ চারে ৩১ বলের ইনিংস তার।

তিনে প্রমোশন পাওয়া লিটন দাসও বেশিক্ষণ থাকেননি। এক চারে ১৩ বলে ৮। আশা জাগিয়ে ৩ চারে ২২ রানে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম।

সেখান থেকেই আসে প্রথম প্রতিরোধ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও টেস্ট বিশ্রামের ছুটির পর স্কোয়াডে যোগ দেওয়া সাকিব আল হাসানের কল্যাণে। জুটি ৫৭ রানের। ২১ রান করা রিয়াদের বিদায়ে ভাঙে আশার প্রতিরোধ।

সাকিব আরও খানিক সময় থাকেন। টেস্ট সিরিজে ব্যর্থ সাব্বির রহমানকে নিয়ে অনেকটা পথও এগোন। দুজনের জমে ওঠা জুটি ৭৬ রানের। ফিফটি তুলে নিয়ে সাকিব থামেন ৬৮ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ অবদান তার ৯ চারে ৬৭ বলে সাজানো।

সাব্বির পরে ফিফটি ছুঁয়েছেন স্বভাবসুলভ ঢঙে ব্যাটিং করেই। ৫২ রানের ইনিংসটি ২ চার ও ৩ ছয়ে ৫৪ বলে সাজানো।

শেষদিকে নাসির হোসেন ১২, অধিনায়ক মাশরাফীর একটি করে চার-ছয়ে ১৩ বলে ১৭ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনের অপরাজিত ১৩ রানে আড়াইশ পেরিয়ে যায় সফরকারীরা।

টেস্টের মত ওয়ানডেতেও সাউথ আফ্রিকার সামনে যে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে বাংলাদেশকে, প্রস্তুতি ম্যাচ সেই বার্তাটাই দিয়ে গেল। এখন দেখার মাশরাফি-সাকিব-নাসিরদের ফেরার সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নিজেদের গত দুবছরের পারফরম্যান্সটা কতটা মাঠে টেনে আনতে পারে টাইগাররা।
এমটি নিউজ/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে