সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭, ০৭:৩৯:১১

লণ্ডভণ্ড করার পরও অল্পের জন্য হলো না বিশ্বরেকর্ড!

লণ্ডভণ্ড করার পরও অল্পের জন্য হলো না বিশ্বরেকর্ড!

স্পোর্টস ডেস্ক: উসমান খানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইন। তবে অল্পের জন্য লজ্জার বিশ্বরেকর্ড থেকে তারা রক্ষা পেয়েছে। তবে রক্ষা পুরোপুরি পেয়েছে, তা বলা যায় না। শারজায় টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০৩ রানে অল আউট হয়ে গেছে। ফলে বড় ধরনের অঘটন না ঘটলে পাকিস্তান হোয়াইট ওয়াশ করতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে।

৫টি উইকেটই নিয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং শক্তি শেষ করে দেন উসমান খান। এটা তার দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আগের ম্যাচে এই পাঠানের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল। বাকি চারটি উইকেটের দুটি করে নেন হাসান আলী আর শাদাব খান। উসমান খান প্রথম ২১ বলেই ওই ৫ উইকেট নিয়ে খেলাটিকে একতরফায় পরিণত করেন।

শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন পেরেরা।

উসমান খানের তাণ্ডবের সময় মনে হচ্ছিল একদিনের ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। ওয়ানডেতে সর্বনিম্ন ইনিংসের মালিক জিম্বাবুয়ে। ২০০৪ সালে ৩৫ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। হারারেতে সেদিন স্বাগতিকদের এ লজ্জা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এর আগের বছরই কানাডাকে ৩৬ রানে অলআউট করেছিল ভাস-মুরালির দল। এ তালিকায় তিনে থাকা ঘটনাটি ২০০১ সালের। কলম্বোতে ৩৮ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। সেদিন মুত্তিয়া মুরালিধরন বাগড়া না দিলে (শেষ ২ উইকেট পেয়েছিলেন) কে জানে একটা অবিস্মরণীয় ঘটনাও ঘটে যেত পারত। আগের ৮ উইকেটই যে পেয়েছিলেন চামিন্দা ভাস। ১০ উইকেট পাওয়ার অনন্য ঘটনা ঘটাতে না পারলেও, ওয়ানডের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড (৮/১৯) এখনো এই বাঁহাতি পেসারের।

আজ অবশ্য আরেক বাঁহাতি পেসারই সর্বনাশ করেছেন শ্রীলঙ্কার। ইনিংসের পঞ্চম বলে সাদিরা সামারাবিক্রমকে বোল্ড করে শুরু, উসমান খান থামলেন সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে মিলিন্দা সিরিবর্দনাকে ক্যাচ বানিয়ে। এই ১৭ বলের মাঝেই শ্রীলঙ্কার প্রথম পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন এই পেসার। ২০০১ সালের পর এমন বিধ্বংসী স্পেল মাত্র দুবার দেখা গেছে। ২০০৩ বিশ্বকাপে চামিন্দা ভাস ১৬ বলের মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে আউট করেছিলেন। আর ২০১৩ সালে হল্যান্ডের ফন ডার গুগটেন কানাডার পাঁচ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন ১৯ বলের মধ্যেই। আজ গুগটেনকেও ছাড়িয়ে গেছেন উসমান।

শ্রীলঙ্কার লজ্জা

আর শ্রীলঙ্কার জন্য এমন পরাজয় খুবই বেদনাদায়ক। আজ হারলে নিশ্চিত এক বছরে তৃতীয় হোয়াইটওয়াশ লজ্জা হজম। তাদের একদিনের ক্রিকেটে একটানা হারের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়াবে ১১তে।
চরম সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে আজ শারজাতে পঞ্চম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের মোকাবেলায় মাঠে নামছে ১৯৯৬-এর চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। দল দু’টির মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে। টানা চার ম্যাচের জয়ে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটয়াশের সুযোগ এসেছে পাকিস্তানের সামনে। টেস্ট সিরিজে ২-০তে পরাজিত দলটিও মুখিয়ে রয়েছে ৫-০ ব্যবধানে একদিনের সিরিজের জয়োৎসবের জন্য। ম্যাচের ফেবারিটও সরফরাজ অ্যান্ড কোং। প্রতিটি ম্যাচেই অলরাউন্ড নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছে পাকিস্তান। সাম্প্রতিক সময়ে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তারা দুর্দান্ত খেলছে। সরফরাজের অধীনে দেশটি জিতেছে ১৩ ম্যাচের ১১টিতেই।

চলতি বছরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের কাছে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ লজ্জা ইতোমধ্যেই হজম করেছে শ্রীলঙ্কা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরও তারা ওই দুই সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। হেরেছে সিরিজের পঞ্চম খেলায়।

পাকিস্তান সফরে যাবে না লংকান কোচ
শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মধ্যে আসন্ন তিন টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে লাহোরে। তবে এ ম্যাচে দলের সঙ্গে পাকিস্তান সফরে যাবেন না শ্রীলংকা কোচ নিক পোথাস।

কেবলমাত্র পোথাস নন, লংকান দলের ফিজিও নিরমালান ধনাবলাসিংগাম এবং নিয়মিত সাত খেলোয়াড়ও শেষ টি-২০ ম্যাচটি খেলতে লাহোর সফর থেকে বিরত থাকছে।
টি-২০ সিরিজের দলে থাকতে হলে সকল খেলোয়াড়কে লাহোর সফর করতে হবে বলে আগেই শর্ত দিয়েছিল শ্রীলংকা ক্রিকেট (এসএলসি)। সব খেলোয়াড় এ শর্ত না মানায় বাধ্য হয়ে সাত নতুন মুখ নিয়ে সংক্ষিপ্ত সিরিজের দল ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এসএলসি। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আবু ধাবিতে।

লংকান দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটম্যান পোথাস ক্রিকবাজকে বলেন, ‘এটা আমার পারিবারের সিদ্ধান্ত। আমার পরিবার চায় না যে, আমি পাকিস্তান সফর করি। আমার কাছে আমার পরিবার আগে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রত্যেকেরই নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা আছে। যদি কেউ কোন বিষয় পছন্দ না করে তবে তা নিয়ে কারোরই জবরদস্তি করা উচিৎ নয়। এমন সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ ছিলো না। একে সম্মান করতে হবে।’

বিশ্ব একাদশের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অংশ নেয়ার বিষয়ে পোথাস বলেন, ‘বিশ্ব একাদশের হয়ে গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণের বিষয়টি আমাকে পাকিস্তানের কতিপয় গণমাধ্যম স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। এটা ছিলো তাদের সিদ্ধান্ত। তাদের সিদ্ধান্ত তো আমার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে না। মূলত বোর্ড চেয়েছিল সবাই পাকিস্তান সফর করুক। তবে আমাকে কেউ চাপ সৃষ্টি করেনি।’

আবুধাবির ম্যাচ পর্যন্ত পোথাস দলের সঙ্গে থাকবেন এবং লাহোরের শেষ টি-২০তে অন্য কেউ দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে