সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:৪৬:৩৬

‘ফেভারিট’ বাংলাদেশের দাপুটে শুরু

‘ফেভারিট’ বাংলাদেশের দাপুটে শুরু

স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যাচ শেষে নেপাল কোচ গঙ্গা গুরুং এক বাক্যে স্বীকার করে নিলেন টুর্নামেন্টে সবচেয়ে শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। ভুটান কোচ সুন জি লিও বলেছিলেন একই কথা। আগের দুই হারের অভিজ্ঞতা থেকে ভারত কোচ ময়মল রকি আসর শুরুর আগে বলেছিলেন বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ভালো করছে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ মাঠে গড়ানোর আগেই তিন দলের দৃষ্টিতে ফেভারিট বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছে বেশ দাপুটে। নেপালি মেয়েদের এদিন ফুটবল শিখিয়েছে বাংলাদেশ। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নেপালের জালে গুনে গুনে ছয়টি গোল দিয়েছে মারিয়া-মার্জিয়ারা।

হ্যাটট্রিক করেছেন তহুরা খাতুন। অনুচিং মোগেনির পা থেকে এসেছে দুই গোল। অপর গোলটি করেছেন মনিকা চাকমা। একই ভেন্যুতে দিনের অপর ম্যাচে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করেছে ভারত।
প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টে ফেভারিটের তকমা লাগিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। এনিয়ে কিছুটা ভয়ে ভয়ে ছিলেন স্বাগতিক দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ‘ফেভারিট ফেভারিট এ কথা থেকে মেয়েরা আবার চাপ নিয়ে নেয় কিনা? ম্যাচ শেষে সেটা না হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস কোচের চোখেমুখে। কৌশলগত দিক দিয়ে নেপালের চেয়ে ঢেড় এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচ শেষে তাই বলছিলেন নেপালের কোচ গঙ্গা গুরুং। ‘ম্যাচে পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিলো বাংলাদেশের হাতে। আক্রমণভাগ কিংবা মিডফিল্ড সবক্ষেত্রেই ছিলো স্বাগতিকদের আধিপত্য। আমি বলবো বাংলাদেশ যোগ্য দল হিসেবেই আমাদের সহজেই হারিয়েছে’- বলছিলেন নেপাল জাতীয় দলে খেলা সাবেক এই ফুটবলাররা। ম্যাচের প্রথমার্ধে একের পর আক্রমণে গোল বের করে এনেছে আনুচিং-মনিকারা। এই অর্ধে গোল হয়েছে চারটি। খেলার ৪ মিনিটেই শামসুন্নাহার শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষক কারিনা রুখে দেন সেই শট। তিন মিনিট পর মার্জিয়ার শট ক্রস বারে লেগে ফিরে আসে। তবে ১১ মিনিটে সফল হয় বাংলাদেশ। কর্নার থেকে মনিকা চাকমার বক্সের বাইরে থেকে নেয়া জোরালো শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে পোস্টে ঢুকে স্কোর হয় ১-০। ১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। মার্জিয়ার কর্নার থেকে পাওয়া বল আঁখি নামিয়ে দিলে আনুচিং মারমার সাইড ভলিতে জালে বল জড়ায়। এরপর ৩২ মিনিটে স্কোর দাঁড়ায় ৩-০। তহুরা খাতুন একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক কারিনাকে ডানদিক দিয়ে পরাস্ত করেন। বিরতির ঠিক আগে তহুরার পাস থেকে গোল করে স্কোর ৪-০ করেন আনুচিং মারমা। বিরতির পর বাংলাদেশের খেলায় ছিল ধীরগতি। তারপরও এই অর্ধে দুটি গোল এসেছে। ৫৭ মিনিটে মনিকা চাকমার শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দিয়েছিলেন। ৫৯ মিনিটে আনুচিংয়ের শট এক ডিফেন্ডার ফিরিয়ে দিলে তহুরা জোরালো শটে করেন ৫-০। ৭২ মিনিটে আনুচিংয়ের বাড়ানো বলে বাঁ পায়ের জোরালো শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তহুরা খাতুন। আর তাতেই ব্যবধান দাঁড়ায় ৬-০। নেপাল দু-একটি প্রচেষ্টা চালালেও স্বাগতিকদের ডিফেন্স ভেদ করা সম্ভব হয়নি।
গত বছর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক পর্বে এই নেপালকে ৯-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। গতকাল এর চেয়েও বেশি গোল হতে পারতো। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে  মেয়েদের ব্যক্তিগত গোল করার নেশায় পেয়ে যাওয়ায় আর সেটা সম্ভব হয়নি। এরপরেও মেয়েদের খেলায় বেজায় খুশি দলটির কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ‘আসলে আমি যেমন চেয়েছিলাম মেয়েরা ঠিক তেমনি খেলেছে। আমার টার্গেট ছিলো ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে ওদের চাপে রাখতে আমরা তাই করেছি। আশা করছি সামনের ম্যাচ দুটিতেও এই খেলা বজায় থাকবে আমাদের’- বলেন তিনি। ম্যাচের হ্যাটট্রিক কন্যা তহুরা ম্যাচ শেষে বলেন, ম্যাচে গোল করাটাই আমার কাজ। সেটা আমি করতে পেরেছি বলে খুশি লাগছে। আনুচিং, মনিকারা আরো বেশি গোল করতে পারলে আরো বেশি ভালো লাগতো। আগামীকাল ভুটানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে