বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮, ১২:৪৩:৩২

‘এই মানুষ আর কখনো পাওয়া যাবে না’

‘এই মানুষ আর কখনো পাওয়া যাবে না’

স্পোর্টস ডেস্ক: ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে বসবাস তার।  পুরোটা সময় মাঠেই কেটেছে।  বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম কিংবা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম- সবখানেই ছিলেন ‘মতি ভাই’।  ৪০ বছরের দীর্ঘ এই পথচলায় আব্দুল মতিন নামের বিসিবির এই হেড গ্রাউন্ডসম্যান (সহকারী কিউরেটর) ওঠা-বসা করেছেন হাজারো ক্রিকেটারের সঙ্গে।  লম্বা ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে তার উপলব্ধি- মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো মানুষ আর পাওয়া যাবে না।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ১০০তম ম্যাচ ছিলো।  এই ম্যাচে মতিনকে স্মরণ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।  টস করার সময় শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের অধিনায়কের পাশাপাশি রাখা হয় তাকেও।  টিভি পর্দায় দেখানো হলো ছলছল চোখে দাঁড়িয়ে থাকা এ প্রৌড়কে।  যেখানে ধারাভাষ্যকার অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল পরিচয় করিয়ে দেন এই মাঠের প্রথম ওয়ানডের হেড গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে কাজ করা মতিনকে।  এমন স্বীকৃতি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা ৫৮ বছর বয়সী আব্দুল মতিন।

কুমিল্লার দেবিদ্বারে জন্ম নেয়া মতিনের ভালো লাগা আরো বেড়ে যায় প্রিয় মানুষ মাশরাফির আলিঙ্গন পেয়ে।  ওয়ানডে অধিনায়কের একটি মামা ডাকই নাকি প্রাণ জুড়িয়ে দেয় তার।  সেই ডাকে ভুলে যান হারভাঙ্গা ক্লান্তির কথা।  মতিনের ভাষায়, ‘মাশরাফি ভাই মামা বলে ডাক দিলে প্রাণ ভরে যায়।  আজকেও দেখা হলো।  হাত মেলালো, কথা বললো।  বললো, “১০০ তম ম্যাচে আপনি হাজির হয়েছেন, আমি খুশি হয়েছি। ” একটা সেলফি তুলে নিয়ে গেছেন। ’

খুব বেশি লেখাপড়া করা হয়নি।  তাই সুযোগ থাকার পরও মতিনের হয়ে ওঠা হয়নি কিউরেটর।  কাজ করে যাচ্ছেন হেড গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে।  কিউরেটর হতে যে মেধার দরকার হয় সেটা তার নেই, এটা তারই সরল স্বীকারোক্তি।  তবে মাশরাফিকে চিনতে যে লেখাপড়ার দরকার হয় না, তার প্রমাণ প্রবীণ এই মাঠকর্মী।  মতিন বলেন, ‘আমি দোয়া করি উনি যেন এ দেশের হয়ে আরও কয়েক বছর খেলেন।  এই মানুষ আর পাওয়া যাবে না।  আল্লাহ যদি তৈরি না করে দেন এমন মানুষ আর পাওয়া যাবে না। ’

বাংলাদেশের ক্রিকেটের হামাগুড়ি থেকে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানো সবই মতিনের নখদর্পণে।  খুব কাছে থেকে দেখেছেন বাংলাদেশের একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া।  আজকের এই বাংলাদেশকে দেখে অজান্তেই তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন তিনি।  বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসাও মতিনকে দেয় অপার আনন্দ, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়েছে দেখে আমার খুব ভালো লাগে।  যত ক্রিকেটার আছে আমি কারো কাছ থেকে কোনোদিন অশোভন আচরণ পাইনি।  সবার কাছে মতি ভাই হয়ে ছিলাম।  সবাই মতি ভাই বলে।  এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া। ’
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে