স্পোর্টস ডেস্ক: কেন তাকে পিএসজি রেকর্ড দামে কিনেছে আর কেনই রিয়াল মাদ্রিদ তার জন্য রোনালদোকে বিষর্জন দিতে রাজি, কেনই বা ম্যানইউ তার জন্য ৫০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে রাজি তার আরেকটি নমুনা দেখাল পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। লিগ ওয়ানে নিজেদের ২১তম ম্যাজে ডিজনকে রীতিমত বিধ্বস্ত করে ৮-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে ফরাসি দলটি। আর এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। দলের ৮ গোলের ৬টিই এসেছে তার পা থেকে। চারটি গোল নিজে করেছেন এবং ২ টি গোলে সহায়তা করেছেন। নেইমার ছাড়া বাকি চার গোলের দুটি এসেছে ডি মারিয়ার পা থেকে। একটি করে গোল করেছেন কাভানি ও এমবাপ্পে।
আগের ম্যাচে হালকা ইনজুড়ির কারনে ছিলনা নেইমার। ফিরলেন ডিজনের বিপক্ষে। তাই এই ম্যাচে ডিজনের উপর দিএ ঝড় বয়ে যাবে এমনটা বুঝাই গিয়েছিল। তবে সেই ঝড়ের তান্ডবে যে মাথার উপরের ছাঁদ টুকুও উড়ে যাবে সেটা কি জানত গিজন? হয়তো জানতই না। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে বিধ্বস্ত হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ঠিকউ উপলব্দি করতে পেরেছে তারা।
পিএসজির মাঠ পার্ক দ্যা প্রিন্সেসে ঝড়ের শুরুটা ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটেই সময়ই। প্রতিপক্ষের ডিবক্সের সামনে এক খেলোয়ারের ভুলে বল পায় পিএসজির এক তারকা। তার থেকে ছোট পাস বল আসে লু সেলসোর কাছে। সেলসোর ব্যাক হিল খুজে নেয় ডি মারিয়াকে। বক্সের বাইরে থেকে ডি মারিয়ায় বাঁ পায়ের দর্শনীয় সেই শট চেয়ে চেয়ে দেখলেন গোলরক্ষক।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি আসে পিএসজির। এবারও গোলদাতা সেই ডি মারিয়া। এবারো প্রতিপক্ষের ভূলে বল পেয়ে ডি মারিয়া বল দেন কাভানিকে। কাভানি সেই বল পুনরায় সামনে বাড়ালে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল যায় নেইমারের কাছে। এরপর ডিবক্সে ঢুকে গোলরক্ষকে বোকা বানিয়ে আলতো শট নেন নেইমার। গোল পোস্টে ঢুকার একটু আগ মূহুর্তে সেই বলে পা ছুইয়ে বল জালে পাঠান আর্জেন্টিাইন উইঙ্গার।
ম্যাচের ২১ মিনিটে এবার গোল ছেড়ে অ্যাসিস্ট করলেন ডি মারিয়া। ডান দিক থেকে উড়িয়ে ক্রস করলেন ডিজনের ডিবক্সের ভেতরে। আর সেখান থেকে হেডে ব্যবধান ৩-০ করেন কাভানি। এই গোলে আবার পিএসজির হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে ইব্রাহিমোবিচের পাশে নাম লেখান কাভানি। তার গোল এখন ১৫৬টি।
প্রথমার্ধের ৪২ মিনিট থেকে এবার শুরু হয় নেইমার তান্ডব। আর প্রথম গোলটিই করেন চোখধাধানো ফ্রিকিকে। ডিবক্সের বাইরে থেকে তার নেয়া ফ্রিকিক জায়গায় দাড়িয়ে শুধু দেখেই গেলেন ডিজন গোলরক্ষক। একটু নড়াচড়ারও সুযোগ পেলেন না তিনি।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে আসে নেইমারের দ্বিতীয় গোল। এবারো সেটা আসে প্রতিপক্ষের ভুলে। পিএসজির এক তারকার বল বাড়িয়েছিলেন নেইমারের কাছে। তবে সেটা চলে ডিজনের এক ডিফেন্ডারের কাছে। কিন্তু সেই ডিফেন্ডার বল থামিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিতে না পারলে তা চলে আসে নেইমারের কাছে। আর সেখানেই বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের ৫ম গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
৭৩ মিনিটে পিএসজির জার্সিতে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ন করেন নেইমার। মাঝ মাঠের একটু সামনে থেকে ডিজনের চার তারকাকে বোকা বানিয়ে সামনে এসে আরো তিনজনকে নিযে ছেলে খেলা করে ডান পায়ের শটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ন করেন নেইমার।
হ্যাটট্রিক হয়েছে তো কি হয়েছে, তান্ডবের যেন শেস নেই। তবে এবার সেই তান্ডবে নাম লিখালেন নেইমার ও এমবাপ্পে। ডি মারিয়ার জায়গায় বদলি হিসেবে নেমে ম্যাচের ৭৭ মিনিটে গোল করেন এমবাপ্পে।
নেইমারের বাড়ানো বলে জোড়ালো শটে ডিজন গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ফরাসি তারকা। লাকি সেভেন হয়েছে। সেটাকে এবার দুই হালীতে রুপান্তর করেন নেইমার।
কাভানিকে ফাউল করলে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় পিএসজি। আর সেখান থেকে সফর স্পট কিক নেন নেইমার। এই গোলেও দর্শক হয়ে যান ডিজন গোলরক্ষক।
এমন বড় জয়ে লিগ ওয়ানে ২১ ম্যাচ শেষে পিএসজির পয়েন্ট দাড়িয়েছে ৫৬। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লায়নের সংগ্রহ ৪৫।
১৮ জানুয়ারি ২০১৮/এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর