স্পোর্টস ডেস্ক: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচটা দাপটে জিতল বাংলাদেশ। এবার শ্রীলঙ্কার পালা। আগামী কাল হাথুরুকে বধ করতে মুখিয়ে আছে মাশরাফি-সাকিবরা। তাই সেরা দল নিয়ে মাঠে নামবে টিম টাইগাররা।
সাবেক কোচ হাথুরু বিপক্ষে এটাই প্রথম ম্যাচ তাই খুব সাবধানতার সাথে আগেতে চায় বাংলাদেশ দল। এদিকে দলে সবাই ফর্মে থাকায় একাদশ সাজাতে যেন একটু বেগে পেতে হচ্ছে। যদিও পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী দল একাদশ নির্বাচন করবে ম্যানেজমেন্ট।
বাংলাদেশের সহকারী কোচ রিচার্ড হ্যালসাল তো জানিয়ে দিলেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলে যেমন খেলোয়াড় তাতে বিলাসিতার স্বাধীনতাও আছে। তবে এ মূহুর্তে বিলাসিতা নয়, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তার টাইগার দলটা আসলে ব্যাটিং লাইন আপ দাঁড় করাতে চাইছে।
তাই মাশরাফির সাফ কথা, সাব্বির রহমানকে তিনে চেষ্টা করা হয়েছে। সে আপাতত হচ্ছে না। কারণ সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতা ওই তিনের সমস্যা দূর করতে পারে। তাই সাকিব তিনেই স্থায়ী করুক নিজের জায়গা, সময় লাগলে লাগুক। সাব্বির নিচের দিকেই পারফর্ম করে একদিন উঠে আসুক ওপরের দিকে। এখন সাত-আট নিয়ে যত চিন্তা মাশরাফিদের।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। পাশাপাশি শিরোপায় এখন চোখ বাংলাদেশের। তাই তাড়াহুড়ায় বিশ্বাসী নয় মাশরাফি। তিনি চান, সময় লাগলে লাগুক। 'সাকিবকে তিনে ব্যাটিং করানোর পিছে আমার যুক্তি এটাই যে, গত তিন চার বছরে অনেক খেলোয়াড়কেই বদল করা হয়েছে। সাকিব গত ১০/১২ বছর ধরে পারফরম্যান্স করছেন। আমি নিশ্চিত যে, ওর চেয়ে বেশি ওর পারফরম্যান্স নিয়ে কেউ উদ্বিগ্ন হবে না। ও যদি একটা দুইটা তিনটা ম্যাচে ব্যর্থও হয় আমি নিশ্চিত ও’ই একমাত্র খেলোয়াড় যে কামব্যাক করতে পারবে। '
মিরপুরে বৃহস্পতিবার সাকিবকে নিয়ে বলেছেন, 'কারণ তার নিজস্ব একটা ভাবমূর্তি বিশ্ব ক্রিকেটে আছে। তাই সংশয়ের বদলে ওর ভাবনাটাই বেশি থাকবে। '
তাই মাশরাফি ব্যাটিং লাইন আপ যে ভাবে সাজাতে যাচ্ছেন। তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। তারপর বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব। মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহর মতো পরীক্ষিত পারফর্মার তারপর। এই হিসেব থেকেই যে কোনো ম্যাচ জেতার প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামেন মাশরাফি, 'পাঁচ জনের মধ্যে যদি দুই জন ৪০ বা ৪৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে পারে আমরা যে কোন উইকেটে জয়ের রানের কাছাকাছি পৌঁছে যাবো। পাশাপাশি রুম্মন (সাব্বির) আছে, ওর ভালো কিছু ইনিংস আছে। ওই সময় যে ইনিংস খেলতে হয় সে সামর্থ্য ওর আছে। '
সাব্বিরকে নিয়ে মাশরাফি বলেছেন, সাব্বিরকে তিনে অনেক দিন চেষ্টা করলেন। দারুণ ক্রিকেট মাথার মানুষ মাশরাফি ব্যাখ্যা করেন, 'আমার কাছে মনে হয়েছে ওর জন্য এই জায়গাটা (ছয়-সাত) সব সময় ভালো। কারণ ওর ক্যারিয়ার শুরু মাত্র। স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করে। ও যদি ৮-১০-১২-১৪ ওভার পায় তাহলে হিসেব করা সহজ। আমার মনে হয় ও এখন তার সেরা পজিশনে আছে। আর সময়ের সাথে ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে আরও ওপরে উঠে আসবে। যেটা অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রেও হয়েছে। '
সাব্বিরের ৬। মাশরাফির চিন্তা ৭ ও ৮ নম্বর জায়গা নিয়ে। 'যারা অলরাউন্ডার আছে যারা দলে সুযোগ পেয়েছে তাদের জন্য বড় সুযোগ। ' 'সাকিব তিনে আসায় ওই সুযোগ তৈরি হয়েছে। ' মাশরাফি এই কথা বলে এটাকে দলের মধ্যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা হিসেবেও উল্লেখ করেন। শীর্ষ ৫ ব্যর্থ হলে বড় রান হবে না মেনেই তখন নেতার বিশ্বাস ও আস্থার হাত ৬, ৭, ৮ নম্বরের ব্যাটসম্যানের ওপর, 'এখানে যে ধারাবাহিক থাকতে পারবে সে দলে তাড়াতাড়ি খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। '
'সাতে নাসির খেলছে নিশ্চিত, শেষ ম্যাচেও খেলেছে। আমি বলছি আটের জায়গাটা...। ' নাসিরের জায়গাতেও হিসেব নিকেশ আছে। একজন বোলার যদি ব্যাট হাতে ওই জায়গাটা পূরণ করে দিতে পারে তাহলে ওয়ানডের মতো টি-টুয়েন্টিতেও লাভ। কারণ মাশরাফির ভাষায়, নাসিরের মতো মারকুটে কাউকেই দরকার, যে দ্রুত ২০ বলে ৩৫ করে আসতে পারবে। তবে আসল প্রতিযোগিতা যে সাত-আটে সেটা স্পষ্ট অধিনায়কের কথায়, 'ওই জায়গাতে যদি ভালো কোনো খেলোয়াড় পাই, এখন যেমন আবুল হাসান রাজু আছে, সাইফ উদ্দিন আছে, মিরাজও দলে এসেছে বেশি দিন হয়নি। এদের দায়িত্ব এখানে কীভাবে খাপ খাইয়ে নেবে, শট খেলার সামর্থ্য সেটা ঠিক করা। এদের সবার বোলিং খুব ভালো, কিন্তু ব্যাটিং নিয়ে উন্নতি কিভাবে করছে সেটা ওদের ওপর নির্ভর করছে। '
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি