বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ০৮:১০:২০

সেই নিশীথ এখন নির্বাসনে

সেই নিশীথ এখন নির্বাসনে

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের আরচারির সঙ্গে তার পথা চলা দীর্ঘদিনের। এ দেশকে ভালোবেসে বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন। তার অধীনেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশের আরচাররা। অভিমানে আরচারি থেকে দূরে একাকী জীবন কাটাছেন সেই নিশীথ দাস। আরচারি ছেড়ে কী করবেন তা-ও জানেন না এই ভারতীয় কোচ। বিয়ে করার সুবাদে থাকছেন খুলনায় স্ত্রীর সঙ্গে। তবে এখন কী করবেন তা জানাতে পারেননি নিশীথ। সেই নিশীথ এখন নির্বাসনে।

২০০২ সালে বাংলাদেশের আরচারির পথচলা। ওই সময়ে ভারতীয় কোচ নিশীথ দাসই হাল ধরেছিলেন দেশের আরচারির। একে একে গড়ে তুলেছেন ইমদাদুল হক মিলন, আবুল কাশেম মামুন, তামিমুল ইসলাম, শ্যামলী রায়দের। এভাবেই তিনি বাংলাদেশের আরচারির সঙ্গে কাটিয়েছেন ১৪টি বছর। যদিও এর মধ্যে আরও তিনজন বিদেশি কোচও এসেছিলেন আরচারদের উন্নততর প্রশিক্ষণ দিতে। তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজের কাজ করে গেছেনও তিনি। ঢাকা সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের জন্য ২০০৮ সালে ঢাকায় উড়িয়ে আনা হয়েছিল ব্রিটিশ কোচ রিচার্ড জন প্রিয়েস্টম্যানকে। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে দলের সঙ্গে কোচ হিসেবেই ছিলেন নিশীথ দাস। তবে গৌহাটি এসএ গেমসের আগের বছর ফের জাতীয় আরচারি দলকে তুলে দেয়া হয় দক্ষিণ কোরিয়ার মেউন কুন পার্কের হাতে। ছয় মাস পর তাকে বদলে এসএ গেমসের জন্য আনা হয় তার স্বদেশি হেগ ইয়ং কিমকে। পরবর্তীকালে অবশ্য রিও অলিম্পিকে সেই নিশীথের ওপরেই ভরসা করেন কর্মকর্তারা। এতদিন ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কী হলো কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি তিনি।

গত ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের আগে থেকেই আরচারি ফেডারেশনের সঙ্গে সম্পর্কের ফাটল ধরতে শুরু করে তার। টুর্নামেন্ট শেষেই তিনি ফেডারেশনে পদত্যাগপত্র দিয়ে চলে যান খুলনায়। গত ৩০শে জানুয়ারি মাকে হারান নিশীথ। এবার বাংলাদেশের আরচারিকেও হারালেন। লেভেল-৩ কোচিং লাইসেন্সধারী জানান, ‘১৪ বছর বাংলাদেশের আরচারিতে ছিলাম। বলতে গেলে আমার হাত ধরেই এদেশের আরচাররা পথ চলতে শুরু করেছে। এই সময়ের মধ্যে আন্তজার্তিক আসরে ১১টি স্বর্ণ এবং তিন থেকে চারটি রুপা এনে দিয়েছি। সর্বশেষ ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপেও সর্বোচ্চ ব্রোঞ্জ মেডেলে খেলেছে বাংলাদেশ। এটাই ছিল এশিয়ান আরচারিতে বাংলাদেশের সেরা ফল। তার পরও যদি আমাকে চলে যেতে বলা হয়, তাহলে তো আর কিছুই বলার থাকে না। এছাড়া আমার আর কিছুই বলার নেই।’

কোনো কিছু খোলাসা না করলেও একটি সূত্র জানিয়েছে ফেডারেশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কারণেই টিকতে পারেননি নিশীথ দাস। তার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছিল না জাতীয় দলে। যে কারণেই আরচারি ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেছেন নিশীথ দাস। যদিও জার্মান কোচ ফ্রেডরিক মাটিনের সঙ্গে চুক্তির সময়ে নিশীথ দাসকেও রাখার কথা জানিয়েছিলেন ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জার্মান কোচের সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজ করবেন নিশীথ দাস। তবে ফেডারেশন ডাকলে তিনি সাড়া দেবেন কি না সেটা এখন দেখার বিষয়।
এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে