শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৯:৩৭:০৩

নো বল দিতে গিয়ে কেন হাত নামিয়ে ছিলেন ‘লেগ অ্যাম্পায়ার’!

নো বল দিতে গিয়ে কেন হাত নামিয়ে ছিলেন ‘লেগ অ্যাম্পায়ার’!

স্পোর্টস ডেস্ক: মুস্তাফিজুর রহমান রান আউট হয়ে ফিরছেন। ৪ বলে চাই ১২ রান। ম্যাচ অপেক্ষায় শেষ নাটকের। তবে তার আগেই মাঠে হয়ে গেল আরও বড় নাটক, যে নাটকের একটি অঙ্কে ম্যাচ ছেড়েও দিতে পারত বাংলাদেশ। উত্তেজনার শুরু একটি ‘নো’ বলকে ঘিরে, যেটি আর টিকে থাকেনি। ম্যাচ শেষে সেই বল নিয়ে দুই দল বলছে দুই রকমের কথা।শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১২ রান। প্রথম বলটি ছিল বাউন্সার। রান নিতে পারেননি মুস্তাফিজ। পরের বলও বাউন্সার, আবারও রান নেই। মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দিতে গিয়ে রান আউট মুস্তাফিজ।

টি-টোয়েন্টিতে একটির বেশি বাউন্সার দিলে ‘নো’। মুস্তাফিজ যখন ফিরছেন, মাহমুদউল্লাহ লেগ আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আম্পায়ার ‘নো’ বলের সংকেত দেন।এবার প্রতিবাদ লঙ্কানদের। তারা আম্পায়ারকে ঘিরে ধরেন। লেগ আম্পায়ার গিয়ে মূল আম্পায়ারের সঙ্গে আলোচনা করে ‘নো’ তুলে নেন। এবার প্রতিবাদ করেন মাহমুদউল্লাহ। মাঠের বাইরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাকিব। চতুর্থ আম্পায়ার তাকে বারবার আটকাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন।

এর মাঝেই সাকিব ইশারা দেন দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্টকে। তিনি রিপ্লে দেখে সাকিবকে জানান বল কাঁধের ওপর ছিল। এবার সাকিবের সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দলের সবাই।
আম্পায়াররা নো বল দিতে রাজি নন। সাকিব ইশারায় দু্ই ব্যাটসম্যানকে ডেকে মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলেন। মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল মাঠের বাইরে প্রায় চলেই গিয়েছিলেন। দুই দলের অন্য ক্রিকেটারদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। কথার লড়াই তো ছিলই, প্রায় হাতাহাতির উপক্রম। বাংলাদেশ দলের বেঞ্চে থাকা নুরুল হাসানের সঙ্গে লেগে যায় কুসল মেন্ডিসসহ লঙ্কানদের বেশ কজনের। ভরা গ্যালারি ফুটছিল তীব্র উত্তেজনায়। শব্দে কান পাতা ছিল দায়।

তখন ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলান ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ। ব্যাটসম্যানদের বলেন খেলা চালিয়ে যেতে। সাকিব ক্ষোভ নিয়ে ঢুকে যান ড্রেসিং রুমে। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহর বীরত্বে অসাধারণ জয়।ম্যাচ শেষে দুই দলের সংবাদ সম্মেলনে সবচেয়ে আলোচিত প্রসঙ্গ শেষের ওই উত্তেজনা। যদিও দুই দলের প্রতিনিধিরা বললেন সামান্যই। কুসল পেরেরার হয়ে মিডিয়া ম্যানেজার শুরুতেই বলে নিলেন, ওই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হবে না। তবে পরে বারবার প্রশ্নে বললেন, তাদের দৃষ্টিতে বলটি ছিল বৈধ।

বলতে চাননি সাকিবও। তবু প্রশ্নের মেলায় মুখ খুলতেই হলো কিছুটা। সাকিব জানালেন, আম্পায়ার সিদ্ধান্ত ঘুরিয়ে নেওয়াতেই যত বিপত্তি।“যেটা হয়েছে যে স্কয়ার লেগ আম্পায়ার ওটা নো বল ডেকেছিল, এর পর তারা আলোচনা করে ওটা বাতিল করেছেন, যেটা আমার কাছে মনে হয়নি সঠিক সিদ্ধান্ত। আমি জানি না, প্রথমটা বাউন্সার কল করেছিল কিনা। তবে দ্বিতীয়টার পর নো ডেকেছিল। এটাই হয়েছে।”

সিদ্ধান্ত দিয়েও তুলে নিতে হলে চাই উপযুক্ত কারণ। আম্পায়াররা নো বল বাতিল করে দেওয়ার পেছনে কি যুক্তি দেখিয়েছিলেন? সাকিব জানালেন, কারণ জানেন না তিনি।
“আম্পায়ার বলতে পারবে কেন তুলে নিল। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের আর কথা হয়নি। কারণ আমি মাঠে যাইনি। আম্পায়াররা কেন সিদ্ধান্ত বদলালেন, তারাই বলতে পারবেন। ম্যাচের পর আর ওটা নিয়ে কথা বলতে চাইনি।”

জয়ের পর সবকিছুই স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছেন সাকিব। আম্পায়ারের দায়, কিংবা নিজের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ, সবকিছুতেই ফেলতে চাইছেন পেছনে।“সবাই মানুষ, সবারই ভুল হতে পারে। আমাদের উচিত সামনে তাকানো।”
এমটিনিউজি/ এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে