শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৪:১৭:৫৭

'বিশ্ব সংবাদমাধ্যমেও এই জয় ‘শ্বাসরুদ্ধকর’

'বিশ্ব সংবাদমাধ্যমেও এই জয় ‘শ্বাসরুদ্ধকর’

স্পোর্টস ডেস্ক: আগে একটা সময় ছিল, যখন কোনো ম্যাচ জিতলেই বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের ‘প্রশংসাবাণী’ শোনার আগ্রহ থাকত। সেই দিন গত হয়েছে বেশ আগেই। সাকিব-মাহমুদউল্লাহদের জয় এখন এতটাই স্বাভাবিক বিষয় যে তাতে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে কী লেখা হলো, তা নিয়ে আগ্রহী হওয়ার খুব বেশি মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু কাল রাতের অবিস্মরণীয় জয়টা সেই আগ্রহটা আবারও ফিরিয়ে আনল।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই জয় নিঃসন্দেহে শ্বাসরুদ্ধকর, রোমাঞ্চকর। কিন্তু ম্যাচটা ছিল বারুদে ঠাসা, পরতে পরতে ছিল আগুনের উত্তাপ। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মাঠের মধ্যেই আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পারলে বেরিয়ে আসেন আরকি! প্রায় ম্যাচ বয়কটের পরিস্থিতি। জয়ের পর ড্রেসিংরুমের কাচ ভাঙার খবরও এসেছে। তাই এই জয়কে বিশ্বের নানা সংবাদমাধ্যম কোন চোখে দেখে, সেই আগ্রহ তো থাকতেই পারে!
টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতের বহুল প্রচারিত ও প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম। তারা বাংলাদেশের এই জয়কে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ বলেছে। শেষ ওভারে আম্পায়ারের টানা দ্বিতীয় বাউন্সারকে ‘নো বল’ দেখাননি মূল আম্পায়ার। অথচ লেগ আম্পায়ার কিন্তু ‘নো বল’ দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন! টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্য উত্তাপ ছড়িয়েছে বাংলাদেশ শিবিরে’।

ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, ম্যাচের শেষ দিকে বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। এমনকি বাংলাদেশের অতিরিক্ত ফিল্ডারকেও লঙ্কান ফিল্ডারদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। পত্রিকাটি মজা করে লিখেছে, যদি এই ম্যাচের ধারাভাষ্যকক্ষে বিল লরি (বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ভাষ্যকার) থাকতেন, তাহলে নিশ্চিত করেই বলতেন, ‘ইটস অল হ্যাপেনিং হেয়ার!’ উত্তেজনার মুহূর্তে লরি সব সময় এ কথা বলেই পরিস্থিতি বর্ণনা করতেন।

ম্যাচের উত্তেজনাময় পরিস্থিতির বিশদ বিবরণ দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও লিখেছে, ‘প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চিও ছাড় দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না তাদের (বাংলাদেশ দল)।’

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি নিউজের প্রতিবেদনে প্রথম কথাই ‘শেষ হাসি বাংলাদেশেরই’। ম্যাচের উত্তেজনাময় পরিস্থিতির বিবরণ দেওয়ার সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ঠান্ডা মাথার প্রশংসাও করেছে তারা। শ্রীলঙ্কার আরেক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর অবশ্য ম্যাচের উত্তেজনাময় পরিস্থিতিকে এত স্বাভাবিক চোখে দেখেনি। তাদের শিরোনাম, ‘বাংলাদেশের নাটকীয় জয় ছাপিয়ে কুৎসিত চিত্র’। তবে ‘নো বল’ না ডাকায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটা যে বিতর্কিত ছিল, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে লিখেছে এই সংবাদমাধ্যম। ‘বিখ্যাত সর্পনৃত্য’ দিয়ে বাংলাদেশ দল এই জয়ের উদ্‌যাপন সেরেছে—এ কথাও লিখেছে ডেইলি মিরর।
তবে আরেকটি প্রতিবেদনে ড্রেসিংরুমের কাচ ভাঙার সমালোচনা করে সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ‘একটা ম্যাচ, যেখানে আগ্রাসী শরীরী ভাষা, চিৎকার, আঙুল তোলা—এসব ব্যাপার তুঙ্গে পৌঁছেছে ড্রেসিংরুমের দরজা ভাঙার মাধ্যমে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দিকেই অভিযোগের তির, গোটা সিরিজেই তাঁদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ।’

এএফপি কিংবা রয়টার্সের মতো সংবাদ সংস্থা অবশ্য ম্যাচে উত্তাপ জাগানিয়া মুহূর্তের বর্ণনা দিলেও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু লেখেনি। এএফপি তাদের প্রতিবেদনে এক জায়গায় শুধু লিখেছে, ‘ড্রেসিংরুমের কাচ ভাঙার পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল উদ্‌যাপনের অভিযোগ করেছেন স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ড স্টাফরা। তবে দল এই অভিযোগের জবাবে কিছু বলেনি।’
এমটি নিউজ/ এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে