স্পোর্টস ডেস্ক: ৬ বলে ১২ জিতে হলে করতে হবে বাংলাদেশ দলকে। ক্রিজে আছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে কূল ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও মোস্তাফিজ। নিদাহাস ট্রফির অঘোষিত সেমি ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্ক। শ্রীলঙ্কা টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান করে।
বাংলাদেশ ১৬০ রানে লক্ষে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান করে তখনি শুরু হয়ে নাটক। আম্পায়ার ভুল সিদ্ধান্ত ও শ্রীলঙ্কান খেলোয়াদের গায়ে পড়ে ঝগড়া করার দায় পড়লো সাকিবের উপর। জয়ের জন্য শেষ ৪ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। এ সময়ই মৃদু উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ম্যাচে। নো-বল না দেওয়া ও ধাক্কা দেয়ার ঘটনার কারণে সাকিব মাঠ থেকে দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেনকে উঠে আসতে বলেন।
সাকিবের এ আচরণ মানতে পারছেন না অনেকেই। বিশেষ করে ফাইনালে বাংলাদেশর প্রতিপক্ষ ভারতীয় সমর্থকরাই বেশি বেজার সাকিবের ওপর। টুইটারে তারা মেতে উঠেছে সাকিব ও বাংলাদেশের নিন্দায়। অথচ তারা ভুলে গেছে নিজেদের খেলোয়াড়দের নানা কুকীর্তির কথা।
ওই ঘটনায় শাস্তি পেতে হয়েছে সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানকে। তাদের ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ কেটে রাখাসহ দু’জনকেই একটি করে ডিমেরিটস পয়েন্ট দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি।
অথচ, ভারতের খেলোয়াড়দের নানা কুকীর্তির কথা এখন ভোলেনি ক্রিকেট ভক্তরা। বেশী দিনের নয় এই সেদিনই ভারতীয় অধিনায়ককে ‘ভাঁড়’ বলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার পল হ্যারিস।
সাবেক ক্রিকেটার পল হ্যারিস বলেছেন, মাঠে কোহলি ভাঁড়ের মতো আচরণ করছিল। আজ যে শ্রীলঙ্কার পক্ষ হয়ে ভারতীয়দের কুমির কান্না, সেই লঙ্কানদের বিপক্ষে গত বছরের জুলাইয়ে গল টেস্টে ফিল্ডিং করার সময় বল ধরতে না পেরে বলবয়ের হাতেই লাথি মারতে যান কোহলি। এছাড়া আম্পায়ারের সাথে বাজে আচরণের জন্য জরিমানাও গুনতে হয় কোহলিকে।
আর ২০১১ সালে গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের অশ্লীল ভঙ্গিতে ‘মধ্যমা’ দেখিয়ে তো সুনীল গাভাস্কার ও শেন ওয়ার্নের মতো তারকাদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কোহলি।
শুধু তাই নয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সতীর্থ খেলোয়াড়ের সঙ্গে মারামারি করে শাস্তি পেতে হয়েছিল ভারতের সাবেক ওপেনার গৌতম গম্ভীর। আর দুই ভারতীয় বোলার শ্রীশান্ত ও হরভজন সিংয়ের চড় মারামারির ঘটনা তো ইতিহাসই হয়ে আছে। এরকম আরো অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে আছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নাম।
অথচ, সেইসব ভুলে সাকিব আর বাংলাদেশের পেছনে লেগে আছে ভারতীয়রা। এতে বোঝা যায় ফাইনালে তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল টাইগাররা। দুর্বল লঙ্কানদের হারিয়ে নিদাহাস ট্রফি ঘরে নেয়ার স্বপ্ন যে ভেঙ্গে গেল তাদের। হয়তো টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং ক্রিকেটের সামনে ভারতের সামর্থ্যে সংশয় থেকেই ভারতীয়দের এ বাংলাদেশ বিদ্বেষ।
এদিকে সাকিবের এমন আচরণের কারণে আইসিসির কাছে সাকিবের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে নালিশ করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তী সুনীল গাভাস্কার। তিনি বলেন, ‘সাকিব অতি আবেগি হয়ে অন্যায় করেছে তার সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়া উচিত।’ কারণ সাকিব নিষেধাজ্ঞায় পড়লে তো ফাইনালে সাকিবকে ছাড়াই ভারতের মুখোমুখি করতে হবে বাংলাদেশের।
তবে সাকিবের এমন আচরণ বিবেচনার আগে দাদা সুনিল গাভাস্কার নিজের চেয়ারা অন্তত একবার হলেও আয়নাতে দেখা উচিত। কারণ ১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলার সময় আম্পায়ারের এলবিতে আউট হয়ে যাওয়ায় দাদা সুনিল তার দল নিয়ে ওয়াকআউট করেছিলেন। কই তখন তো কিছু হয়নি। তবে এবার কেন?
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি