রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৮, ০১:২৩:০৪

আগ্রাসী ক্রিকেটই খেলবে টাইগাররা

আগ্রাসী ক্রিকেটই খেলবে টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক: অনুশীলনে চনমনে, প্রাণবন্ত মাহমুদুল্লাহ। অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে দলকে উঠিয়েছেন ফাইনালে, শিরোপার মঞ্চে আজ তুলির শেষ আঁচড় টানার অপেক্ষায়।

ঘষা কাচের মতো লেগে আছে দাগটি। ভেজা কাপড়ে বারবার মুছলেও যায়নি সেই দাগ! নতুন আয়না না এলে যে পুরনোটাও ভেঙে ফেলা যাচ্ছে না। আজ প্রেমাদাসায় ভারতের বিপক্ষে সে নতুন আয়নাতেই নিজেদের প্রতিচ্ছবি দেখতে চায় টাইগাররা। ভাঙতে চায় ব্যাঙ্গালুরু, মিরপুরের সব আক্ষেপ আর অধরা ট্রফির। আর একটি বার এই রবি শাস্ত্রীর সামনে সেলিব্রেশন করতে চায় গোটা ড্রেসিংরুম। ভারতের এই কোচ মিরপুরে এশিয়া কাপের ফাইনাল জিতে বলেছিলেন- বাংলাদেশিদের বুনো উল্লাস তারা থামাতে জানেন। তারপর ব্যাঙ্গালুরুতেও একবার খোঁচা দিয়েছিলেন তিনি। আজ প্রেমাদাসায় থাকা আরেক ভারতীয়কেও একটি জবাব দেওয়ার আছে সাকিবদের। যিনি আগের ম্যাচে টাইগারদের সেলিব্রেশন দেখে নাক সিটকেছেন!

তবে এ একটি ব্যাপারে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম এখন জয়ের মন্ত্র খুঁজে পেয়েছে। আর তা হলো 'মাস্তানি'! শুধু ব্যাট-বল হাতেই এই মাস্তানি নয়, ম্যাচের মধ্যে ছোট ছোট বিষয়গুলোতেও প্রতিপক্ষকে রাগিয়ে দেওয়ার এক সূক্ষ্ণ কৌশল কাজে লাগাচ্ছেন রিয়াদ-তামিমরা। এই যেমন ব্যাটসম্যানকে কিছু বলে রাগিয়ে দেওয়া, আম্পায়ারের কাছে ওয়াইড-নো নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করা। বোলারকে বিভ্রান্ত করতে রানিং শুরুর করার পর স্ট্রান্স থেকে সরে গিয়ে বিভ্রান্ত করা।

সোজা কথায় মাঠে যেন কোনোভাবেই প্রতিপক্ষ বুঝতে না পারে যে, ভেতরে ভেতরে সে কতটা ঘাবড়ে আছে! আর আজকের ফাইনালের মতো বিগ ম্যাচে এ মাস্তানিটাই হতে পারে টাইগারদের গুপ্ত অস্ত্র। কেননা ভারতীয় দলকে ছুরির নিচে কেটে ছিঁড়ে বিশ্নেষণ করলেও দেখা যাবে তাদের শক্তি-সামর্থ্য বেশি। তাই এ ধরনের দলের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই সফলতা এনে দিতে পারে। 'শ্রীলংকার বিপক্ষে আমাদের যে আগ্রাসী ও আক্রমণাত্মক খেলা দেখেছে সবাই, ভারতের বিপক্ষেও আমরা তেমনই আক্রমণাত্মক খেলাটাই খেলব।'

বলার সময় চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছিল দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের। মাত্র দু'দিন হলো দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিনি। তবে এসেই বুঝে গেছেন, তার এই দল ঘাবড়ে যাওয়া ভিতু ছেলেদের দল নয়। অতীত রেকর্ড কী হয়েছে, কেন আগে কখনও ভারতের সঙ্গে টি২০ জয় নেই- সংবাদ সম্মেলনে এসব উত্তর দেওয়ার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব দেখেন না সাকিব। তিনি বরং মাঠের বাইরে শান্ত ভাব রেখে ম্যাচের মধ্যে ক্ষিপ্রতা দেখাতে চান।

আর সে কারণেই ২৫ শতাংশ জরিমানা কিংবা একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়ার মধ্যে তিনি হাহাকারের কিছু দেখেন না; বরং সেদিনের ওই ঘটনার পর যে ম্যাচটি জিতেছিল দল, তাতেই খুশি সাকিব। ভারতীয় সাংবাদিকদের কেউ কেউ এদিন চেষ্টা করছিলেন বটে, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তার মুখ থেকে কিছু একটা বলাতে।

কিন্তু সাকিব প্রলোভনে পা দিয়ে ভুল করার ছেলে নন। আপনাকে তো ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হলো, আপনার কি মনে হয় না, শ্রীলংকার কাউকেও সেটা দেওয়া উচিত ছিল? তীরের মধ্যে বিষ মেখেই সংবাদ সম্মেলন তা ছোড়া হয়েছিল সাকিবের দিকে।

উত্তরের সাকিবের সে একই কথা- 'যেটা হয়ে গেছে সেটা হয়ে গেছে। আমরা এখন শুধুই ফাইনাল নিয়ে কথা বলতে পারি।' বোকা বনে গিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক। বুঝে গিয়েছিলেন, বড় ম্যাচের জন্য এখন অনেক বেশি পরিণত, অনেক বেশি কৌশলী এই বাংলাদেশ।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে