মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮, ১০:৫২:০৯

অনিকের দুই ছক্কায় বিফলে আশরাফুলের সেঞ্চুরি

অনিকের দুই ছক্কায় বিফলে আশরাফুলের সেঞ্চুরি

স্পোর্টস ডেস্ক: বল হাতে ৬ উইকেট নিয়ে কলাবাগানের রানের লাগাম টেনে ধরেছিলেন মোহামেডানের কাজী অনিক। আশরাফুলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও দলটি ২৬০ রানে আটকে যায় এই তরুণের কারণেই। জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরুর পরও সেই রান তুলতে ঘাম ছুটে গেল মোহামেডানের। হারের চোখ রাঙানি থেকে সেই অনিকই দলকে উদ্ধার করলেন দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে। বিকেএসপিতে রোমাঞ্চকর ম্যাচটি ২ উইকেটে জিতেছে মোহামেডান।

মোহামেডানের দলীয় ১০০ রান চলে আসে ১৭.৩ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে। ৫৭ রানের ইনিংস খেলা এনামুল হক জুনিয়র দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন সাজঘরে ফেরেন দলের রান তখন ১২৭। পরের ওভারে রনি তালুকদারও (৫১) সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে মোহামেডান। খানিক পরেই স্কোর হয়ে  যায় ৫ উইকেটে ১৫৫। ২৮ রানের মধ্যে চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় মোহামেডান। ছোট দুটি জুটিতে ২০০ রানের কোটা পেরোয় সাত উইকেট হারিয়ে।

তখন আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলছিলেন সাদা-কালো শিবিরের অধিনায়ক শামসুর রহমান শুভ। ৩৮ রান করে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরলে হারের চোখ রাঙানিতে পড়ে মোহামেডান। জিততে হলে তখনও দরকার ২৭ রান। জয়ের আশা দেয় তাইজুলের ব্যাট। শেষ ওভারে ১০ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ। অভিজ্ঞ স্পিনার নাবিল সামাদের প্রথম দুই বলেই খেলা শেষ। ব্যাক টু ব্যাক ছক্কা হাঁকিয়ে অনিক জানান দেন ব্যাটিংটা ভালই জানেন।

তাইজুল ৩২ বলে ৩৪ ও অনিক ৬ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

সঞ্জিত সাহা নিয়েছেন তিন উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মাহমুদুল হাসান ও নাহিদ হাসান। নাবিল সামাদ নিয়েছেন একটি উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ২৬০ রানের পুঁজি গড়ে কলাবাগান। ১২৪ বলে ১২৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ছিল ১৩টি চার ও তিনটি ছয়ের মার।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি আসরে আশরাফুলের এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চার মৌসুম পর লিগে ফেরা আশরাফুল আগের দুটি সেঞ্চুরিও বিকেএপিতে। প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ১০৪ ও অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

লিগে আশরাফুল ছাড়া একাধিক সেঞ্চুরি পাওয়া ব্যাটসম্যান কেবল দুজন-লিটন দাস ও জহুরুল ইসলাম অমি। দুটি করে সেঞ্চুরি করেছেন তারা।

আশরাফুল তৃতীয় সেঞ্চুরিটি তুলে নেন মোহামেডানের স্পিনার তাইজুল ইসলামকে ছক্কা মেরে। ৯০ রান নিয়ে যখন খেলছিলেন তখন বোলিংয়ে আসেন তাইজুল। এ বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম বলে মারেন বাউন্ডারি। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদলান। তাইবুর রহমান আবার সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক পেয়ে ছক্কা মেরে তিন অঙ্কে পৌঁছান। শেষ দুই বলে মারেন আরো ‍দুটি চার। ইনিংসের ৪০তম ওই ওভার থেকে আসে ২০ রান।

সেঞ্চুরির পর আরো বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন আশরাফুল। চার-ছক্কার পসরা সাজিয়ে দ্রুত রান তুলতে মনযোগী হন। ১২৭ রানের মাথায় সেই তাইজুলের বলেই অবশ্য এলবিডব্লুউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

আশরাফুল এদিন ফিফটি পূর্ণ করেন ৭১ বলে। তিন অঙ্কে পৌঁছান ১১২ বলে। শেষ ১২ বলে ২৬ রান করেন। আশরাফুল ঝড় থামার পর পথ হারায় কলাবাগান। দ্রুত উইকেট হারিয়ে ২৬০ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা। অথচ আশরাফুল যেভাবে রানের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে যান, তাতে অনায়াসে তিনশ’র দিকে ছুটতে পারত দলটি।

দারুণ বোলিং করে কলাবাগান ইনিংসে ধস নামান কাজী অনিক। এ বাঁহাতি পেসার তুলে নেন ৬ উইকেট। ৮.৫ ওভারে ৪৪ রান দেয়া অনিকের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২.১ ওভার আগে অলআউট হয় কলাবাগান।

সাভারের বিকেএসপিতে ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল নয়টায়। কিন্তু ঢাকা থেকে রওনা হয়ে দুই দল মাঠে পৌঁছায় নয়টা বাজার মিনিট ১৫ আগে। ট্র্যাফিক জ্যামে পড়ে ম্যাচ অফিশিয়ালরাও পৌঁছান দেরিতে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ১৫ মিনিট দেরিতে শুরু হয়।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে