সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৬:৪৩:১৬

যে রেকর্ড শুধু ম্যারাডোনার

যে রেকর্ড শুধু ম্যারাডোনার

স্পোর্টস ডেস্ক: ডিয়াগো ম্যারাডোনা, আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর। ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তিদের মধ্য একজন। এখনও কে সেরা- পেলে না ম্যারাডোনা এই নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলে। এখনও অনেকে চোখে ভেসে ওঠে ‘হ্যান্ড অব গড’ কিংবা ১০ জনকে কাটিয়ে করা গোলটি। এই আর্জেন্টাইন ফুটবলারের ক্যারিয়ারে অনেক অর্জনই আছে । কিন্তু আজকের গল্পটা তার বিশ্বকাপের একটি রেকর্ড নিয়ে।

১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ১৯৯৪- চার বিশ্বকাপ খেলেছেন ম্যারাডোনা। এই চার বিশ্বকাপে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ১৬ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন আর্জেন্টিনার। অধিনায়ক হিসেবে ম্যারাডোনার পরে আর কোনো ফুটবলারের এই রেকর্ড নেই। ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার হয়ে শুরুটা হয়েছিল ১৯৭৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে। এরপর ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে ৯১টি ম্যাচ খেলেছেন এই প্লেমেকার। করেছিলেন ৩৪ গোল।

তবে ম্যারাডোনার মনে এখনও ক্ষোভ কেন ঘরের মাটিতে ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপে তাকে নেওয়া হয়নি। সে সময়ের কোচ সিজার লুইস মেনত্তিই কম বয়স বলে ম্যারাডোনাকে দলে নেওয়ার পক্ষপাতি ছিলেন না। কিন্তু এরপরের ১৯৮২ সালের স্পেন বিশ্বকাপ থেকে আর্জেন্টিনা দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। সেবার মোট পাঁচটি ম্যাচ খেলেছিল আর্জেন্টিনা। আর ম্যারাডোনা পাঁচটি ম্যাচই খেলেছিলেন কিন্তু একবারের জন্যও তার বদলি খেলোয়াড় নামানো হয়নি। সেই বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না।

১৯৮৬ সালে মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন ম্যারাডোনা। সেই বার এতটাই ভালো পারফর্ম করেছিলেন যে, ফুটবল বিশ্ব এখনও তাকে এই বিশ্বকাপ দিয়েই মনে রেখেছে। আর তাঁর জন্যই ১৯৮৬ বিশ্বকাপ রঙিন হয়েছিল। বলা এক প্রকার দলকে একা হাতেই ফাইনালে তুলেছিলেন এবং বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন এই ফুটবল জাদুকর। পাঁচ গোল এবং পাঁচ অ্যাসিস্টে জিতেছিলেন ৮৬ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল। অর্থাৎ সেই আসরে আর্জেন্টিনার করা ১৪ গোলের ১০টিতেই তাঁর অবদান ছিলো। এই বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার দুটি গোলই বিশ্বখ্যাত। প্রথমটি হাত দিয়ে করা গোল যা `হ্যান্ড অব গড` আর পরেরটি ৬৬ গজ ড্রিবল করে পাঁচ ইংলিশ খেলোয়াড় ও গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে করা তার দ্বিতীয় গোল। যা শতাব্দীরই সেরা বলে নির্বাচিত হয়েছে। সেবারও আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ৭ ম্যাচ খেলেছেন কিন্তু একবারের জন্যও তার বদলি খেলোয়াড় নামানো হয়নি।

১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপেও দলের অধিনায়ক ছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু এই বিশ্বকাপে অ্যাঙ্কেলের চোটের কারণে নিজের জাদু দেখাতে পারেননি ম্যারাডোনা। তবে এই বিশ্বকাপেও ফাইনালে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ ৪ বছর আগের পশ্চিম জার্মানি। কিন্তু ফাইনালে ১-০ গোলে হেরে যেতে হয় ম্যারাডোনাদের। এই বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার ৭ ম্যাচের প্রতিটিতেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি।

কিন্তু এর পরের ১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ ম্যারাডোনার জীবন ওলট-পালট করে দেয়। ডোপ টেস্টে ধরা পড়ায় তাকে বিশ্বকাপ থেকেই নিষিদ্ধ করে ফিফা। সেই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মাত্র দুই ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। তাছাড়া ডোপ টেস্টের ঘটনায় আর্জেন্টিনার হয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যায়। বিশ্বকাপের অন্যতম সফল তাঁরকাকে অপমান ও অসম্মান নিয়ে মাথা নিচু করে শেষ করতে আন্তর্কাতিক ক্যারিয়ার। কিন্তু এতবছর ও এত ঘটনার পরেও ম্যারাডোনা এখনও সবার মনে জাদুকর হয়েই আছেন। তবে সেটা তাঁর ৮৬ বিশ্বকাপের পারফরম্যন্সের জন্যই।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে