রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১৮, ১১:৪১:৩৬

ওল্ড ইজ গোল্ড

ওল্ড ইজ গোল্ড

স্পোর্টস ডেস্কঃ ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’- এই অতি পুরাতন প্রবাদ্য বাক্যটি তামিম-সাকিব নতুন করে আবার প্রমান করলেন। পুরাতন চাল ভাতে বাড়ে-সেটা প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামের ২২ গজি উইকেটে দেখিয়ে দিলেন বাংলাদেশের দুই তারকা। ৪৪.৩ ওভাওে ২০৭ রানের তামিম-সাকিবের পার্টনারশীপে চড়ে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ২৭৯। তামিম সেঞ্চুরির স্বপ্ন সফল হলেও সাকিব সেঞ্চুরির স্বপ্ন পূরণ হলে না। মিস হলো সাকিবের সেঞ্চুরি, পূরণ হলো তামিমের ১০ম সেঞ্চুরি। ৪৪.৩ ওভার অবদি তামিম-সাকিবের জুটির গড়া ২০৭ রানের পার্টনারশীপ বিশাল স্বপ্ন দেখিয়েছে। আর তামিম-মুশফিকের শেষ দিকে মারকুটে ব্যাটিং বাংলাদেশকে এতো দূর টেনে নেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের টার্গেট ২৮০।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে হারের পর আজ প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামের উইকেটে টস জিতে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে অধিনায়ক মাশরাফি ব্যাটিং বেছে নিলেন। বাংলাদেশের শুরুটা দেখে আর স্বাগতিক দলের বোলিং তোপ দেখলে যে কেউ বলে দেবে মাশরাফির সিদ্ধান্ত ভূল ছিল। উইকেটের সুবিদা আদায় করে শুরুতে দাঁড়াতেই দেয়নি অতিথি দলের ব্যাটসম্যানদের। ১.৩ ওভারে শূন্য রানে ওপেনার এনামুল হক স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলে ওপেনার তামিমের সঙ্গে তখন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশে স্কোর যখন নি¤œগামী তখন কান্ডারির ভূমিকায় তামিম-সাকিবের জুটি। এরপর তামিম-সাকিবের লড়াই শুরু হয়। ১.৩ ওভার থেকে ৪৪.৩ ওভার পর্যন্ত তামিম-সাকিবের ২০৭ রানের পার্টনাশীপে লড়াই করার ভিত্তি খুঁজে পায় বাংলাদেশ। ২১ ওভার শেষে বাংলাদেশ পানি বিরতিতে যায়। বিরতির পর তামিম-সাকিবের জোড়া ফিফটি স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। 

বাংলাদেশ প্রথম ৪.৪ ওভারে সংগ্রহ ১ উইকেটে ১০ রান! এতেই বোঝা যায় উইকেট বোলারদের কতটা পক্ষে সাপোর্ট দিয়েছে। বৃস্টির আক্রমনে ম্যাচ আপাতত বন্ধ। বৃস্টি থেমে গেলে আকাশ হেসে উঠে, সঙ্গে তামিম-সাকিবের ব্যাটও হেসে উঠে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আর স্পিন আক্রমন দ্ইু অভিজ্ঞ তারকা অভিজ্ঞতা দিয়ে সামাল দিলেন। স্কোর ২১ ওভার শেষে ৮২, ১ উইকেট! দুই জন মিলে রাসেল আর হোল্ডারের জোড়া আক্রমন সামাল দিয়েছেন। ব্যাটিং উইকেটে লড়াই করছেন দুই অভিজ্ঞ তারকা। দেখে শুনে পেসার রাসেল-হোল্ডার, স্পিনে নূরসি, জোসেফ আর বিশুকে সামলিয়েছেন। এক পর্যায়ে স্কোর তামিম ৩৬ আর সাকিব ৪০ রানে ব্যাট করছেন। দুই তারকাই ফিফটির দিকে এগিয়ে চলেছেন। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া ফিটি হাঁকিয়ে এই দুই তারকা বাংলাদেশকে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন।

স্কোর তখন ১ উইকেটে ২৬ ওভারে ১১০। তামিম ইনিংসের একমাত্র ছক্কাটি হাঁকিয়ে জানিয়ে দিলেন লড়াই হবে। ৩৯ থেকে ৪৫ রানে যাওয়া তামিম ৪২তম ওয়ানডে ফিফটির অপেক্ষায়। আর সাকিব ৩৮তম ফিফটির অপেক্ষায়। ৮৬ বলে ৪টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা দিয়ে তামিম ৪২তম ফিফটির দেখা পেয়ে গেলেন। সাকিব ৫ রানের অপেক্ষায়। এক রান নিলেন সাকিব, এরপর সোজা হিসেবের মতো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫০ পূরণ করলেন সাকিব। পা রাখলেন ৩৮তম ওয়ানডে ফিফটির ইতিহাসে। কিন্তু আরো অনেক কিছু পাওনা ছিল সাকিবের। 

কারণ তিনি যদি আর একটু ধৈর্য্য ধারণ করতেন তাহলে ক্যারিয়ারে ৮ম সেঞ্চুরির দরজায় দাঁড়িয়ে ৯৭ রানে (১২১ বলে) ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিতেন না। সাকিব আর একটু টিকে থাকলে বাংলাদেশের ৫ম উইকেট জুটিতে গড়া ২০১৭ সালে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর গড়া ২২৪ রানে রেকর্ড পার্টনারশীপ ভেঙ্গে যেত। সাকিব ৯৭ রানে সেঞ্চুরি মিস করলেও তামিম ক্যারিয়ারের ১০ম সেঞ্চুরি স্পর্শ করতে ভূল করলেন না। ১৪৬ বলে ৭টি বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় তামিম সেঞ্চুরির মালিক হলেন। সাকিব ফেরত গেলে ২ উইকেটে দলীয় স্কোর যখন ২০৮, তখন ক্রিজে এলেন সাবিবর রহমান। মাত্র ৩ রানেই সাঁজ ঘরের পথে সাব্বির, মুশফিক এলেন তামিমকে সঙ্গ দিতে। ৩ বাউন্ডারি ২ ছক্কার মারে ১০ বলে ৩০ রান সংগ্রহ করে ঝড়ো ব্যাটিং দিয়ে মুশফিক দলীয় রান বহুদূর টেনেছেন। শেষ দিকে তামিম ১৩০ রানে অপরাজিত থাকলেন, যা বাংলাদেশের ওপেনারের ইতিহাসে দ্বিতীয় ঘটনা। মাহমুদুল্লাহ ৪ রানে অপরাজিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর 
টস বাংলাদেশ 
বাংলাদেশ ব্যাটিং (২৭৯/৪, ৫০ ওভার)
তামিম ইকবাল ১৩০ অপরাজিত, এনামুল হক ১, সাব্বির রহমান ৩, মুশফিকুর রহিম ৩০, সাকিব আল হাসান ৯৭।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে