সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০১:৪৮:০০

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয়

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয়

স্পোর্টস ডেস্ক: শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে অবশেষে জয় পেল বাংলাদেশ দল। জয়ের জন্য শেষ ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। স্নায়ু চাপের ম্যাচে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তার অসাধারণ বোলিংয়ের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ দল।

বাংলাদেশ: ২৪৯/৭

আফগানিস্তান: ২৪৬/৭

ফল: বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী।

হাশমতকে ফেরালেন মাশরাফি

ফর্মের তুঙ্গে রয়েছেন হাশমতউল্লাহ। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৭ রানের ইনিংস খেলা এ ব্যাটসম্যান বাংলাদেশ দলের বিপক্ষেও অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। আফগান এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান মাশরাফি। অবশ্য তার আগে ৯৯ বলে ৭১ রান করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে এসছেন ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

আসগরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মাশরাফি

জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান। বাজে বোলিং এবং ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ের কারণে আফগানদের লাগাম টেনে রাখতে পারছেনা বাংলাদেশ দল। ২০ রানে দুই উইকেট হারানোর পর খেলায় ফেরে আফগানরা।

চতুর্থ উইকেট হাশমতউল্লাহর সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি গড়েন আসগর আফগান। মাশরাফি মতুর্জার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন আসগর। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৭ বলে ৩৯ রান করেন আফগানিস্তানের এ অধিনায়ক।

বোলিংয়ে এসেই শাহজাদকে ফেরালেন মাহমুদউল্লাহ

দলীয় ২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বসা আফগানিস্তানকে খেলায় ফেরান শাহজাদ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে হাশমতউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে বিভ্রান্ত হওয়ার আগে ৮১ বল খেলে ৮ চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন শাহজাদ।

সেই শাহজাদের ফিফটি

আফগানিস্তানের অন্যতম সেরা ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ। মারমুখি এই ব্যাটসম্যানের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস করেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। ইনিংসের ৩.২ ওভারে নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দেন শাহজাদ। কিন্তু ফিল্ডার মিঠুন ক্যাচটি তালুবন্দি করতে পারেননি। বাতাসে ভাসা বলটি মিঠুনের দুই হাতের ফাক গলে মাথায় আঘাত হানে।

৯ রানে নতুন জীবন পাওয়া পাওয়া শাহজাদ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন আফগানিস্তানের এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

সাকিবের দুর্দান্ত ফিল্ডিং, রান আউট রহমত

সাকিব আল হাসানের অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হয়ে সাজঘরে রহমত শাহ। ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হলেন আফগান এই ব্যাটসম্যান। ৯ বলে ১ রান করেই সাজঘরে রহমত। ৭.২ ওভারে দলীয় ২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চপে পড়েছে আফগানিস্তান।

প্রথম বলেই মোস্তাফিজের উইকেট

আফগানিস্তানের দলীয় ২০ রানে ওপেনার ইহসানউল্লাহর উইকেট তুলে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসেই সাফল্য পেলেন দ্য ফিজ ক্যাত এ পেসার। এই কাটার মাস্টারের বলে পয়েন্টে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন এহসান।

শাহজাদের ক্যাচ ফেলে দিলেন মিঠুন

আফগানিস্তানের অন্যতম সেরা ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ। মারমুখি এই ব্যাটসম্যানের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস করলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ইনিংসের ৩.২ ওভারে নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দেন শাহজাদ। কিন্তু ফিল্ডার মিঠুন ক্যাচটি তালুবন্দি করতে পারেননি। বাতাসে ভাসা বলটি মিঠুনের দুই হাতের ফাক গলে মাথায় আঘাত হানে। ৯ রানে নতুন জীবন পান শাহজাদ।

ইমরুল-রিয়াদের ব্যাটে টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর

১৮ রানে দুই উইকেট পড়ে গেলে হাল ধরেন মুশফিকুর রহিমর ও লিটন দাস। তৃতীয় উইকেটে তারা ৬৩ রান যোগ করেন। এরপর ৬ রানের ব্যবধানে ফেরেন লিটন, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। লিটন-মুশফিকরা ৪১ ও ৩৩ রান করে করলেও শূন্য রানে ফেরেন সাকিব।

৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে থাকা বাংলাদেশ দলকে খেলায় ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের হয়ে ১২৮ রানের রেকর্ড জুটি গড়ার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে বড় অবদান রাখেন তারা।

রিয়াদ ৭৪ রান করে সাজঘরে ফিরলেও ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে যাওয়া ইমরুল কায়েস করেন ৮৯ বলে ৭২ রান। তাদের জোড়া ফিফটিতে ৭ উইকেটে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ২৪৯ রান। জয়ের জন্য আফগানিস্তানকে করতে হবে ২৫০ রান।

জুটির রেকর্ড গড়ে সাজঘরে মাহমুদউল্লাহ

আফতাব আলমকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ তুলে দেন রিয়াদ। সাজঘরে ফেরার আগে ৮১ বল খেলে তিন চার ও দুই ছক্কার সাহায্যে ৭৪ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। তার আগে কায়েসের সঙ্গে ১২৮ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন রিয়াদ।

এর আগে ১৯৯৯ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৩ রানের জুটি গড়েছিলেন আল শাহরিয়া এবং খালেদ মাসুদ পাইলট।

গত ১৯ বছরে তাদের সেই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেননি। রোববার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৮ রানের জুটি গড়েন ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

ইমরুলের ১৫তম ফিফটি

হঠাৎ করেই জাতীয় দলে সুযোগ পান ইমরুল কায়েস। দুবাইয়ে এশিয়া কাপে টাইগারদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে শর্ট নোটিশে খুলনা থেকে উড়িয়ে নেয়া হয় তাকে।

আগের দিন দুবাই পৌঁছানো কায়েস রোববার খেলতে নেমে যান। এদিন ইনিংসের শুরুতে তার ভুল কলে সাড়া দিতে গিয়ে ‍রান আউট হয়ে ফেরেন অসাধারণ খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিম।

এরপর বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করেন ইমরুল কায়েস। ৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১২৪ রানে জুটি গড়েছেন তারা।

মাহমুদউল্লাহর ২০তম ফিফটি

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে হাল ধরেছেন এ অলরাউন্ডার। ৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে গেলে ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন রিয়াদ।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৬০তম ম্যাচে ফিফিটি তুলে নেন রিয়াদ। এই ম্যাচের আগে ১৫৯ ম্যাচ খেলে ৩ সেঞ্চুরি এবং ১৯টি ফিফটির সাহায্যে ৩ হাজার ৪৯০ রান করেন তিনি।

মুশফিকের বিতর্কিত আউট

ইমরুল কায়েসের ভুল কলে সাড়া দিতে গিয়ে রান অাউট হন মুশফিকুর রহিম। দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিমের আউট নিয়ে বিতর্ক আছে।

রিভিউতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, রশিদ খানের হাত স্ট্যাম্পে আঘাত হানার আগেই স্ট্যাম্প ভেঙে যায়। কয়েকদফা রিভিউ দেখেও আউটের সিদ্ধান্ত দেন টিভি আম্পায়ার শন জর্জ। সাবেক এই দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ফের বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

১৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ দলকে খেলায় ফেরান লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ৪১ রান করে লিটন বিদায় নেয়ার পর কোনো রান যোগ করার আগেই ফেরেন সাকিব আল হাসান। শূন্য রানে রান আউট হয়ে সাজঘরে সাকিব।

দুই রানের ব্যবধানে ২ উইকেট নেই

এশিয়া কাপে চরম ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। আগের দুই ম্যাচে আফগানিস্তান এবং ভারতের বিপক্ষে ৭ রান করে আউট হওয়া তরুণ এ ওপেনার আজ আফগানদের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ফেরেন মাত্র ৬ রান করে। আফতাব আলমের গতির বলে রহমত শাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত।দুই রানের ব্যবধানে ২ উইকেট নেই

এরপর দুই রান যোগ করতেই সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৬৩ রান করা মিঠুন নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারছেন না।

আগের দুই ম্যাচে আফগানিস্তান এবং ভারতের বিপক্ষে ২ ও ৯ রান করে আউট হওয়া মিঠুন রোববার বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে ফেরেন মাত্র ১ রান করে। মুজিব উর রহমানের বলে এলবিডব্লিউ হন মিঠুন।

বাদ পড়েছেন মোসাদ্দেক-রুবেল, খেলছেন ইমরুল-অপু

সুপার ফোরের চতুর্থ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার পরিবর্তে দলে ফেরেন ইমরুল। এছাড়া পেস বোলার রুবেল হোসেনের পরিবর্তে দলে সুযোগ পান নাজমুল ইসলাম অপু।

টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত মাশরাফির

এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতে হলে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশে দলের। সুপার ফোরের প্রথম খেলায় ভারতের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় মাশরাফিদের জন্য রোববার বাঁচা-মরার লড়াই।

এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাজমুল ইসলাম অপু।

আফগানিস্তান একাদশ: মোহাম্মদ শাহজাদ, ইহসানউল্লাহ, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহীদি, সামিউল্লাহ সেনওয়ারি, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, আফতাব আলম ও মুজিব উর রহমান।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে