সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০২:২৩:৩৩

ম্যাচ শেষে মুস্তাফিজের জাদুকরী ওভার এবং মাহমুদল্লাহকে নিয়ে যা বললেন মাশরাফি

ম্যাচ শেষে মুস্তাফিজের জাদুকরী ওভার এবং মাহমুদল্লাহকে নিয়ে যা বললেন মাশরাফি

স্পোর্টস ডেস্ক: মুস্তাফিজের শেষ ওভারের কারিশমায় উত্তেজনা পূর্ণ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের দেয়া ২৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আফগানদের ইনিংস থেমেছে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রানে।

শেষ ওভারে আফগানদের দরকার ছিল ৮ রান। মুস্তাফিজের করা প্রথম বলে রশিদ ২ রান নেন। এর পরের বলে তাকে কট এন্ড বোল্ড আউট করেন কাটার মাস্টার। তৃতীয় বলে লেগ বাইয়ে ১ রান আসলেও চতুর্থ বলটি ডট দেন মুস্তাফিজ।

পঞ্চম বলে নাইব ১ রান নিলে শেষ বলে আফগানদের দরকার ছিল ৪ রান কিন্তু বলটি সরাসরি জমা পড়ে টাইগার উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে। ফলে ৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

ম্যাচ জিতে মাশরাফি বলেন, শেষ পর্যন্ত মুস্তাফিজ যা করেছিল তা যাদুর মত ছিল। শেষ ওভারে ৮ রান ডিফেন্ড করা খুব কঠিন। সে কঠিন কাজটিই সারলেন মুস্তাফিজ। জয়ের অবদান মুস্তাফিজ। সাকিবের ৪৯তম ওভার বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে দিন শেষে মাহমুদুল্লাহকেও ধন্যবাদ দিতে হবে। মাহমুদুল্লাহ আমাদের লড়াই করার পুঁজি দিয়েছে। এবং কায়েসকেও ধন্যবাদ প্রথম সুযোগ পেয়েই অবদান রাখার জন্য।

মুস্তাফিজকে ১০ ওভার পুরোপুরি না করার কারণ হিসেবে মাশরাফি বলেন, মুস্তাফিজ পায়ে ব্যাথা অনুভব করছিল। আমরা চাচ্ছিলাম সে যেন ১০ ওভার করতে পারে, কিন্তু ব্যাথার জন্য পারেন নি। এই ম্যাচ জয়ে আমরা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে যা পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে কাজে লাগবে।

এর আগে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পরও মিডেল অর্ডারে মাহমুদুল্লাহ ও ইমরুল কায়েসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ দল। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৯ রান।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে দুই আফগান ওপেনার আহমেদ শাহজাদ ও ইহসানউল্লাহ। নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ৮ রান করা ইহসানউল্লাহকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর সাকিবের ডিরেক্ট হিটে রান আউট হয়েছেন রান করা রহমত শাহ।

তৃতীয় উইকেটে হাসমতউল্লাহ শহীদিকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন আহমেদ শাহজাদ। এই দুজনের জুটিতেই দলীয় অর্ধশতক পূরণ হয় আফগানদের। ৫৩ রান করা শাহজাদকে ফিরিয়ে ব্রেক থহ্রু এনে দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

এরপর আসগরকে নিয়ে আফগানদের জুটি গড়েন শহীদি। ৩৯ রান করা আসগরকে আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এরপর ৭১ রান করা শহীদিকে বোল্ড করেন টাইগার অধিনায়ক।

সাকিব শেষের দিকে ঝড় তোলা ৩৮ রান করা নবীকে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন। ৫ রান করা রশিদ খানকে কট এন্ড বোল্ড করে আউট করে মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ দিকে শেনওয়ারি ২৩ ও নাইব কোনো রান না করে অপরাজিত থাকলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি।

এই ম্যাচের শুরুতে টস ভাগ্যটা বাংলাদেশের পক্ষেই গিয়েছিল। টসে জিতে অধিনায়কের সিদ্ধান্ত ছিল ব্যাট করার। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের।

ইনিংসের শুরুতে দেখে শুনে খেললেও পঞ্চম ওভারে এসে আফতাব আহমেদকে উইকেট ছুঁড়ে দেন শান্ত। ৬ রান আসে বাঁহাতি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে।

শান্তর বিদায়ের পর তিন নম্বরে নামা মোহাম্মাদ মিথুনকেও ক্রিজে টিকতে দেন নি আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান। মাত্র ১ রানে তাকে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

আগের তিন ম্যাচের মত এই ম্যাচেও পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। ২ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে নেমেছিলেন মুশফিকুর রহিম।

লিটন এবং মুশফিকের ব্যাটে দলীয় পঞ্চাশ পার করে টাইগাররা। এরপর লিটন ৪১ রান করে রশিদ খানের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। সাকিব কোনো রান তোলার আগেই রান আউট হয়ে আউট হয়েছেন।

এরপর ইমরুলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে আউট হয়েছেন মুশফিকও। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ রান। ষষ্ঠ উইকেটে জুটি বাঁধেন ইমরুল কায়েস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এই দুজনের ব্যাটে দলীয় শতক পূরণ হয় বাংলাদেশের।

৫৯ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭৪ রান করে আফতাব আলমের বলে রশিদ খানকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। মাশরাফি ১০ রান করে আফতাবের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন। এরপর ইমরুল ৭২ ও মেহেদী ৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশের একাদশঃ লিটন দাস, ইমরুল কায়েস , সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মাদ মিথুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল ইসলাম অপু, মেহেদি হাসান মিরাজ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে