আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এ ঘটনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তোলপাড়। ভারতের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর টুইটারে ‘ট্রাম্পীয়’ স্টাইলে প্রতিক্রিয়া জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই টুইটে বৈঠক বাতিলের ভারতের সিদ্ধান্তকে ‘নেতিবাচক, উদ্ধত’ বলেই ক্ষান্ত হননি পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাঁর প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।
নরেন্দ্র মোদি দূরদর্শী নন, এমন ইঙ্গিত করে ইমরান বলেন, ‘বড় পদে ছোটলোক’। ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ইমরানের টুইটের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও এটা স্পষ্ট যে, দুই দেশের মধ্যে শিগগিরই সংলাপ শুরুর সম্ভাবনা নেই। ইমরানের টুইটের পর এমন মন্তব্য করেছে ভারতীয় পত্রিকা দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারত। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরদিনই এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে নৃশংসভাবে তাদের নিরাপত্তারক্ষীর হত্যা এবং সম্প্রতি সন্ত্রাস এবং এক সন্ত্রাসীর প্রশংসা করে পাকিস্তানের ধারাবাহিক ‘ডাকটিকেট প্রকাশের প্রেক্ষাপটে’ বৈঠক বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক এই তৎপরতা পাকিস্তানের ‘শয়তানি কর্মসূচি’ এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ‘প্রকৃত চেহারা’ উন্মোচন করেছে। পাকিস্তান সম্প্রতি বুরহান ওয়ানি নামে কাশ্মীরি এক জঙ্গি কমান্ডারের ছবি ব্যবহার করে ডাকটিকিট প্রকাশ করে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় সেনাদের গুলিতে বুরহান ওয়ানি নিহত হয়। পাকিস্তান অবশ্য জানিয়েছে, বুরহান ওয়ানির ডাকটিকিটটি প্রকাশিত হয় ২৫ জুলাইয়ের আগে। তখন ইমরান প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না।
ভারতের বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়াতেই ইমরান ওই টুইট করেন, যা অদূর ভবিষ্যতে দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা সম্ভাবনা একেবারেই নস্যাৎ করে দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারত বৈঠক বাতিলের বিষয়টিকে বিবেচনা করছে আকস্মিক রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে। তাদের মতে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর নির্দেশনাতেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগ নেন ইমরান। বাস্তব পরিস্থিতি দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সরকার।
বৈঠক বাতিলে যে কারণ ভারত উল্লেখ করেছে সে প্রসঙ্গে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন বাজওয়া সম্প্রতি বলেন, এই ঘটনার যথাযথ প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তবে তা অবশ্যই পাকিস্তানের মতো নৃশংস কায়দায় নয়। এর প্রতিক্রিয়ায় গত শনিবার পাকিস্তানের দুনিয়া টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনা মুখপাত্র আসিফ গাফুর বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা শান্তির মূল্য বুঝি। এ কারণেই যুদ্ধের প্রস্তুতি থাকার পরও শান্তির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর