রায়হান মাসুদ: ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের একটি নারী ক্রিকেট দল ইডেন গার্ডেনসে ক্রিকেট খেলে। স্থানীয় দলের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাংলাদেশের দলটির হয়ে খেলেন পারভিন নাসিমা নাহার পুতুল।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে 'পুতুল আপা' নামেই পরিচিত এই নারী অ্যাথলেট ও সংগঠক।
১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পুতুল বাংলাদেশে বিভিন্ন নারী ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন।
তৎকালীন সময়ে নারীদের খেলাধুলায় আসার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করতে হয় বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন পুতুল।
তিনি বলেন, আমাদের বেড়ে ওঠায় প্রতিকূলতা ছিলনা বললে একেবারেই ভুল হবে। নারী স্বাধীনতা যে প্রয়োজন সেটা তখনই আমরা সোচ্চার ছিলাম। আমরা ছাত্র রাজনীতি করতাম খেলা-ধুলা করতাম।
তার ভাষ্যে, "বাবা সংস্কৃতিমনা ছিলেন। তিনি চাইতেন যাতে নাচ, গান শিখি। আমার আগ্রহ ছিল খেলা। মা সবসময় বলতেন, যেটা তোর মন চায় সেটাই করবি।"
তখন খেলাধুলা চালিয়ে যাওয়ার সময়েও মানুষের সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে নারীদের। তবে পারভিন পুতুল মনে করেন, খারাপকে স্বাগত জানালেই সফল হওয়া যায়।
"মন্তব্য তো আসবেই, মন্তব্য প্রয়োজন। জীবনে সফল হতে হলে এসব শুনেই হতে হবে। সমালোচনা, তির্যক কথা মানুষের মধ্যে জয়ের তাগিদ দেয়। এখন যেসব নানাভাবে হেয় হচ্ছেন কটু কথা শুনছেন, তাদের উচিৎ দমে না গিয়ে আরো পরিশ্রম করা।"
শুধু ক্রিকেট নয় বাংলাদেশের প্রথম মহিলা হকি দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত হকি খেলেছেন পারভিন পুতুল।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে হ্যান্ডবল, রাগবি এসব ফেডারেশনের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।
পারভিন পুতুল একাধারে খেলোয়াড়, ক্রীড়া সাংবাদিক ও ক্রীড়া সংগঠক
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেন পারভিন পুতুল। সালমা খাতুন, খাদিজাতুল কোবরা, জেসিকার মত ক্রিকেটার যারা জাতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের অন্বেষণে ভূমিকা পালন করেন তিনি।
পারভিন পুতুল ক্রীড়া সাংবাদিকতাও করতেন।
তিনি বলেন, "আমি যখন সাংবাদিকতায় আসি তখন বেশিরভাগই ছেলে ছিল। আমার সাথে তাদের বোঝাপড়া ভাল ছিল। নব্বইয়ের দশকে তো খুব বেশি মেয়ে সাংবাদিকতায় আসতেন না।"
পরবর্তীতে পারভিন পুতুল ক্রীড়া সংগঠকের ভূমিকায় মনোনিবেশ করেন। বাংলাদেশ হ্যান্ডবল রেফারী অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ রাগবি ইউনিয়ন, ঢাকা জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে যুক্ত আছেন তিনি।-বিবিসি