স্পোর্টস ডেস্ক : ঢাকা টেস্টে জয় পেতে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হত জিম্বাবুয়েকে। শেষ দিনে ৭ উইকেটে ৩৬৭ রান করতে হবে জিম্বাবুয়েকে। ঢাকা টেস্টের শেষ দিনে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট তুলে দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় ১৩ রান করা শন উইলিয়ামসকে ক্লিন বোল্ড আউট করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর দলীয় ১২০ রানের মাথায় সেকেন্দার রাজা কে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ আউট করেন তাইজুল ইসলাম। তবে এরপরই বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে ওঠেন পিটার মোর এবং ব্যান্ডেল টেইলার। গলার কাঁটা হয়ে ওঠা এই জুটিকে ভেঙে দেওয়ার আজকের এই ঘটনার নায়ক মিরাজ মেহেদী হাসান মিরাজ।
দলীয় ১৮৬ রানের মাথায় পিটার মুর কে আউট করে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখনই শুরু হয় মেরাজ ভেলকি। দ্রুতই তিনি তুলে নিন আরও দুটি উইকেট। রেজিস চাকাভা (২) ডোনাল্ড তিরিপানোকে (০) রানের প্যাভিলিয়নে ফেরার মিরাজ।
শেষ পর্যন্ত ২২৪ রানে অল আউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ফলে ২১৮ রানের বিশাল জয় পায় টাইগাররা।
মিরাজ একাই নেন ৫ উইকেট ।
বাংলাদেশের হয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। আর মাত্র একটি উইকেট লাভ করলেই মেহেদি হাসান মিরাজ কেটে ফেলতেন তাইজুল ইসলাম।কিন্তু মিরাজ তা হতে দিল না ।
নিজের অভিষেক সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন মেহেদী মিরাজ।
গতকাল চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে জিম্বাবুয়ে ইনিংসের ২৩তম ওভারের শেষ বলে ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে (২৫) মুমিনুলের ক্যাচ বানিয়ে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ৬৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর ২৬ ওভারে বল করতে এসে চতুর্থ বলে আরেক জিম্বাবুইয়ান ওপেনার চারিকে (৪৩) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেছিলেন চারি, কিন্তু থার্ড আম্পায়ারও রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
জিম্বাবুয়েকে ফলো-অনে ফেলে গতকাল ২১৮ রানে এগিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনে শুরুতেই ব্যাটিংয়ে নামে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। দলীয় ১০ রানের মাথায় টপ অর্ডার ৩ ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ।
ইমরুল কায়েস ৩, লিটন দাস ৬, এবং মমিনুল হক ১ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। গত ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম ফেরেন দলীয় ২৫ রানের মাথায়। ৭ রান করে আউট হন তিনি। বিপদে পড়া বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মোহাম্মদ মিঠুন।
৯১ বলে নিজের অভিষেক হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। এই দুজনের ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ ভাঙ্গেন সিকান্দার রাজা। ৬৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর ৫ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন আরিফুল হক। ১২২বলে সেঞ্চুরি করে ৯ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এটি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের টেস্ট ক্রিকেটের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
দ্বিতীয় বাংলাদেশি অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আগে বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ১০১ রান। ৬ উইকেটে ২২৪ রান ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ ১০১ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ২৭ রান করে অপরাজিত থাকেন।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করছে বাংলাদেশ ৫২২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। মুশফিকুর রহিম ২১৯ এবং মমিনুল হক ১৬১ রান করেন। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে করে ৩০৪ রান।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমে
টেস্ট স্কোয়াড: হ্যামিলটন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ক্রেইগ আরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, পিটার মুর, রেজিস চাকাভা, ডোনাল্ড তিরিপানো, কাইল জারভিস, ব্রান্ডন মাভুতা, রিচার্ড এনগারাভা, জন নায়ুম্বু, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, রায়ান বার্ল, টেন্ডাই সাতারা।