সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০১:২৩:৪৬

টরন্টোয় রোহিঙ্গাদের পক্ষে বিশাল সমাবেশ

টরন্টোয় রোহিঙ্গাদের পক্ষে বিশাল সমাবেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে : মিয়ানমারে গণহত্যা ও বিতাড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে টরন্টোয় নানা জাতিগোষ্ঠীর পাঁচ সহস্রাধিক মানুষ এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর অপরাহ্নে কানাডার অন্টারিও প্রাদেশিক পার্লামেন্ট কুইন্স পার্ক প্রাঙ্গণে নানা প্ল্যাকার্ড হাতে তারা প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন।

সরেজমিনে সেখানে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বিষয়টি জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, কানাডার জন্য তা যথেষ্ট উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয়। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিরসনে মিয়ানমার সরকারের উপর সম্ভাব্য চাপ প্রয়োগ করা হবে।

সমাবেশ আয়োজনকারীদের পক্ষে বক্তারা বলেন, অর্ধ শতাব্দী ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ বার্মা, যা বর্তমানে মিয়ানমার, সেখানে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত স্বজাত্যভিমানের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানো হয়েছে। তাতে তারা সকল প্রকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার বঞ্চিত। সরকারি চাকরি, বৈবাহিক সনদ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হওয়া ছাড়াও একই গ্রামে বসবাসে অবরুদ্ধ হয়েছে। সেই বর্ণবিদ্বেষী রাষ্ট্রীয় নীতিমালা গত কয়েক বছরে নৃশংসতা থেকে বিতাড়ন, যা কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদদের গবেষণায় গণহত্যায় পর্যবসিত। একমাত্র গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড পরিচালনা থেকে রক্ষা পেতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে এসে মানবেতর পর্যায়ে আশ্রয় নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তৎপরতায় সবার নজর কেড়েছে।

তবে আয়োজকদের পক্ষে এই প্রতিবেদককে পৃথকভাবে হুয়াইদা পারভেজ-খান, ইমরান খান, আসাদ জালাল, ডলি বেগম, আলম মোরাল, ফিরাজ আল নাজিম ও রোহিঙ্গা নাগরিক ফরিদ উল্লাহ কানাডা সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক ৬ দফা দাবির কথা জানান।

সেক্ষেত্রে বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তত্ত্বাবধানে কানাডা যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্য গড়ায় মুখ্য ভূমিকা নেয়। রাখাইনে সংঘটিত সহিংসতা তদন্তে কানাডা যেন প্রভাব খাটিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনায় মিয়ানমারকে বাধ্য করে। সিরীয়দের মতো রোহিঙ্গাদেরও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে। মিয়ানমারে বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ করে দ্রুত আরাকানে মানবিক সাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা করে। উইরাথু পরিচালিত ‘৯৬৯ আন্দোলন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধ উস্কে দেয়ায় অং সান সুচির কানাডার নাগরিকত্ব বাতিলসহ বিচারের ব্যবস্থা করে।

এ সমাবেশ আয়োজনে সাংগঠনিকভাবে মুখ্য ভূমিকা নেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব টরন্টো অন্টারিও, কানাডিয়ানস অ্যাগেইনস্ট টর্চার, রোহিঙ্গা কমিউনিটি, ওডব্লিউএস ল, ইকনা সিস্টার্স, ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা, সিরিয়ান অ্যাকটিভ ভলান্টিয়ার্স, হেল্প হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, সুফি কাউন্সিল, স্টপ দ্য ওয়ার নাও, প্যালেস্টাইন হাউজ, মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল, হিযবুত তাহরির এবং ইন্টারন্যাশনাল রিফর্মার ফর হিউম্যান রাইটস।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে