শুক্রবার, ০৫ মে, ২০১৭, ০৫:৩২:৪৬

বাঘায় ২০ কোটি টাকার আম নষ্ট হয়েছে

বাঘায় ২০ কোটি টাকার আম নষ্ট হয়েছে

বাঘা (রাজশাহী) থেকে: রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় গত রোববার সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে আম ও বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া শিাপ্রতিষ্ঠানসহ অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, রোববারের কালবৈশাখী ঝড়ে আমের যে তি হয়েছে তার মূল্য পাঁচ কোটি ২৩ লাখ টাকা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলার আমোদপুর গ্রামের অহিদুর রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ১০-১৫ লাখ টাকার আম বিক্রি হতো। আম বিক্রির এ টাকা দিয়েই সারা বছরের সংসার চলে। কিন্তু ঝড়ে আম পড়ে যাওয়ায় কয়েক লাখ টাকার তি হয়েছে। মিলিক বাঘা এলাকার ইদ্রিস আলী জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ২৫ শতাংশ কাঁচা আম পড়ে গেছে। এর আগেও তিন দিনের ঝড়ে উপজেলায় প্রায় কোটি টাকার ওপরে তি হয়েছে।

আম ব্যবসায়ী সুলতান আহম্মেদ বলেন, দেড় টাকা কেজি হিসাবে ঝরে পড়া চার ট্রাক আম কিনেছি। প্রতি ট্রাকে ৩০০ মণ করে আম নেয়া গেছে। সেই আম ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করব। শুধু সুলতান আহম্মেদ নন, তার মতো অনেক ব্যবসায়ী ঝরে পড়া আম কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালান করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগম জানান, এ বছর উপজেলায় ৭৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। গত রোববারের কালবৈশাখী ঝড়ে আমের যে তি হয়েছে তার মূল্য পাঁচ কোটি ২৩ লাখ টাকা হতে পারে। তিনি বলেন, বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যের খরতাপ আর ঝড়ো হাওয়ার গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করে দেবে আমের উৎপাদন।

অভিজ্ঞদের মতে, কালের আবর্তে বদলে গেছে আমের অফ ইয়ার বা অন ইয়ার। প্রতি বছর আম উৎপাদন ভালোই হচ্ছে। এবার অন ইয়ার। ফলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। আধুনিক পদ্ধতিতে নিয়মিত আম বাগান পরিচর্যার কারণে আগের ধারাবাহিকতার বিচ্যুতি ঘটেছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। ফলে কয়েক বছর থেকে এ অঞ্চলে আমের ফলন হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দু’টি পৌরসভা ও সাতটি ইউপি নিয়ে গঠিত বাঘা উপজেলা। এই উপজেলায় আট হাজার ৩৬৮ হেক্টরে আম বাগান রয়েছে।

বানিয়াপাড়া এলাকার আবদুল করিম জানান, আমার নিজের ও কেনা বাগানের আমগাছ থেকে যত আম পড়েছে, তা পূর্ণতা পেলে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি হতো। মওসুমে প্রকারভেদে প্রতি ট্রাক আমের মূল্যে দাঁড়ায় সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা। এক ট্রাকে ৩০০ মণের ওপরে আম চালান দেয়া যায়। তার হিসাব মতে, সম্প্রতি ঝড়ে যে আম পড়ে নষ্ট হয়েছে, মওসুমে তার মূল্য দাঁড়াত প্রায় ২০ কোটি টাকা।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে