মঙ্গলবার, ০৫ জুন, ২০১৮, ১০:২৬:৩৯

পানির দামে আম বিক্রি!

পানির দামে আম বিক্রি!

নিউজ ডেস্ক: মিষ্টি সু-স্বাদু আম, বাজারে হলুদ রংয়ের সমারোহ। ক্রেতার আশায় আম বিক্রিতা বসে আছে দির্ঘ সময় ধরে। গরমে পাকা আম আরো পেকে নরম হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে বসেছে। একজনও ক্রেতার দেখা মেলা ভার। আমের ব্যাপারী তো দুরের কথা। একেবারে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে আম।

কথাগুলো কাল্পনিক কিংবা অবান্তর নয়। বাস্তবেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন আমের বাজারে। ক্রেতার অভাবে বিপুল পরিমান মৌসুমী আম নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে এসব এলাকাগুলোতে। বাজারে দু’একজন ক্রেতা মিললেও তাদের নিকট একেবারেই পানির দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতা। বর্তমান বাজার দরে ১৫/২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ক্রেতার দেখা নেই।

সরেজমিন মঙ্গলবার দুপুরে চাটমোহর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও স্টেশনের পশ্চিম পার্শ্বের সমস্ত এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ভ্রাম্যমাণ বাজার। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও আম চাষিরা তার বাগানে উৎপাদিত আম এখানে নিয়ে এসেছেন বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। বিক্রেতারা বস্তা, কাঠা, ঝুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় পাত্রে আম নিয়ে এসে বিক্রি করার জন্য বসে আছে। আশ্চর্য বিষয় হল বিপুল সংখ্যক বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা একেবারেই কম। দু’একজন দুই চার কেজি আম বিক্রি করলেও সেটা পানির দামেই বলা চলে।

উপজেলার হোগলবাড়িয়া গ্রামের আম বিক্রেতা নজিব উদ্দিন বলেন, সেই সকালের দিকে ১০ কেজি আম নিয়ে স্টেশন বাজারে এসেছি। এখন পর্যন্ত কেউ আমের দাম জিজ্ঞেস করলো না। তীব্র গরমে আম পেকে ক্রমশ নরম হয়ে যাচ্ছে আর কিছু সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে আম গুলো ফেলে দেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।

মূলগ্রাম ইউনিয়নের চকউথুলী গ্রামের আম বিক্রেতা শরীফ হোসেন বলেন, আমার আম বাগানের খুব ভাল মানের ১৫ কেজি আম বিক্রি করার জন্য নিয়ে এসে মহা বিপদে পড়েছি। কোন রকম ক্রেতা নেই। একজন ক্রেতার কাছে দুই কেজি বিক্রি করেছি ২০ টাকা কেজি। যেখানে বাজারে এক লিটার পানির দাম ১৫/২০। তাহলে তো দেখছি পানির চাইতেও আমের দাম কম।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, এ বছর বিরুপ আবহাওয়ার মধ্যেও উপজেলা ব্যাপী বিপুল পরিমান আমের ফলন হয়েছে। যা কিনা মানুষের পুষ্টির ও খাদ্যের চাহিদা পুরণ হয়ে অনেক আম বাজারে বিক্রি হবে।

ক্রেতা না থাকার বিষয়ে তিনি জানান, দেশের ফলমূলের বাজারে মানুষের মাঝে এক ধরনের আতংক কাজ করে খাদ্যে কার্বাইড কিংবা ফরমালিনের মিশ্রন নিয়ে। এছাড়া রমজান মাসের কারণেও মানুষের চাহিদা কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে ৮/১০ দিনের মধ্যেই সে পূর্বের ন্যায় আমের চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি জানান।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে