মো: মোশারফ হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভারতেশ্বরী হোমসের আবাসিক হোস্টেলের টয়লেটে সুুমি আক্তার(১৪) নামে এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সে ভারতেশ্বরী হোমসের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী।২০১৭ সালে তার জেএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।একই সময় সায়লা নামে নবম শ্রেনীর অপর এক ছাত্রী আত্মহত্যা করতে গিয়ে আহত হয়েছে।তবে হোমস কর্তৃপক্ষ দাবী করেছে, সে আতংকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আহত হয়েছে। তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার ভারতেশ্বরী হোমসের আবাসিক হোস্টেলের নিচ তলার ড্রাইনিং রুমের ট্রয়লেটের এ ঘটনাটি ঘটেছে।নিহত সুমীর পিতার নাম মো.শহিদ মিয়া, বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১১ নং আজগানা ইউনিয়নের চিতেশ্বরী গ্রামে। ঘটনার পর কুমুদিনী কমপ্লেক্সসহ ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরেছে।
জানা গেছে, সুমি ভারতেশ্বরী হোমসের আবাসিক ভবনের চার তলা ভবনে থাকতো। আজ শনিবার দুপুরের পর কোন এক সময়ে সুমি ট্রয়লেটের ভিতরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। জানা গেছে, গতকাল ৪ আগস্ট শুক্রবার ছিল অভিভাবকদের সঙ্গে ছাত্রীদের দেখা করার দিন। সুমিকে দেখার জন্য তার বাবা মা এসেছিলেন। সুমি তার ও ভারতেশ্বরী হোমসের নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে তার বাবা মাকে অনুরোধ করেছিল তাকে এখান থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্ত তারা তার সমস্যার কথা না বুঝে সুমিকে জোর করে হোস্টেলে রেখে চলে যান ।শেষ পর্যন্ত অভিমান করেই না কোন প্রেম ঘটিত কারনে সুমি আত্মহত্যাযা করেছে তা এখনো রহস্য জনক বলে তার সহপাঠীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন ছাত্রী ও তাদের অভিভাবক অভিযোগ করেন, ভারতেশ্বরী হোমস ছাত্রীদের জন্য সম্পুর্ন আবাসিক হলেও এখানে রয়েছে অভ্যন্তরিন নানা সমস্যা। বহিরাগত অভিভাবকরা ভিতরে ঢুকে সহজেই তাদের সমস্যা বুঝতে পারেন না। ইতিপুর্বেও এই ছাত্রী হোস্টেলে দুই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছিল। কিন্ত সঠিক কোন তদন্ত না হওয়ায় সমস্যার রহস্যই রয়ে গেছে।
সুমির পিতা শহিদ মিয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, হোমসের হোস্টেলের ভিতরে কয়েকজন ছাত্রী ও শিক্ষক তার সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করে আসছিল। এ কথা সে তাদের কাছে বলেছিল। কিন্ত কেন যে সুমি আত্মহত্যা করেছে তারাও তা বুঝতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষা প্রতিভা রানী হালদার সাংবাদিকদের বলেন, কি কারনে সুমি আত্মহত্যা করেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে সে অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাইন উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস