শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১, ০৫:০৩:১১

দাদির করা মামলায় মা কারাগারে, মুক্তির দাবিতে অসহায় দুই সন্তান রাস্তায়

দাদির করা মামলায় মা কারাগারে, মুক্তির দাবিতে অসহায় দুই সন্তান রাস্তায়

পারিবারিক কলহের জের ধরে দাদির দায়ের করা মিথ্যে মামলায় মা কারাগারে। বেসরকারি চাকরিজীবী বাবার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। কোনো উপায় না পেয়ে ছোটভাইকে নিয়ে মায়ের মুক্তি চেয়ে অবস্থান কর্মসূচি করেছে ১২ বছর বয়সী আলিফ।

আজ শনিবার সকালে বরগুনা শহরের টাউনহল এলাকার অগ্নিঝরা একাত্তরের পাদদেশে অসহায় দুই সন্তানের এ অবস্থান কর্মসূচি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। অবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই।

ভুক্তভোগী শিশু আলিফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার চাকরির সুবাদে তারা গাজীপুরে বসবাস করত। সে সেখানকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মেধাবী শিক্ষার্থী আলিফ ইংল্যান্ডে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। তার ভিসাও প্রস্তুত। করোনার কারণে তার ইংল্যান্ড যাওয়া বিলম্বিত হয়েছে। অথচ এমন একটি সময়ে তার দাদির দায়ের করা মিথ্যে মামলায় কারাগারে রয়েছে তাদের মা আনিতা জামান। 

শিশু আলিফ আরো জানায়, তার বয়স এখন ১২ বছর। অথচ মিথ্যে মামলায় তার বয়স ১৮ বছর দেখিয়ে তাকেও আসামি করা হয়েছে।

আলিফের দাবি, আলিফের নানা বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। বরগুনায় তার দাদিবাড়ির স্বজন ছাড়া আর কোন স্বজন নেই। তার ফুফুদের যোগসাজশে তার দাদী তার মা-বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গত বৃহস্পতিবার তার মাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওদিকে বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মামলায় ঘটনার যে সময় দেখানো হয়েছে সে সময় আলিফের বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল তার কর্মস্থলে ছিলেন।

 সেখানে ডিজিটাল হাজিরায় তার হাজিরা রয়েছে। অথচ মিথ্যে তথ্য দিয়ে সেই মামলায় তার বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েলকে আসামী করা হয়েছে। তার নামে ওয়ারেন্ট রয়েছে। এ মিথ্যে মামলা থেকে মায়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছে অসহায় দুই শিশু আলিফ ও গালিফ।

এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. নজরুল ইসলাম সিকদার জানান, ‘ভুক্তভোগী দুই শিশু আলিফ, গালিফের চাচা ও ফুফুদের ভেতরকার পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অসহায়ত্বের শিকার হয়েছে ছোট ছোট দুই শিশু। দুগ্ধপোষ্য শিশু ও এবং করোনাকালে একজন নারীর অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত জামিন না মঞ্জুর করেছেন। আগামিকাল আবারও আসামিপক্ষে জামিন আবেদন করা হবে।'

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মিসকাত সাজ্জাদ জানান, করোনাকালে গত দুই তিনমাস ধরে শিশু আালিফ ও গালিফের বাবা-মা বরগুনায় থাকছেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিকভাবে আলিফ ও গালিফের বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েল ও তার মা-বোনদের মাঝে কলহ চলছে। আলিফের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ দাদিকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে