রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ০১:৫৬:৫০

আমাদের প্রেম খাঁটি ছিলো, শুধু একদিন কাইয়ুমের হাত ধরেছি; বলে গেলেন রুমা

আমাদের প্রেম খাঁটি ছিলো, শুধু একদিন কাইয়ুমের হাত ধরেছি; বলে গেলেন রুমা

এমটি নিউজ ডেস্ক : আমার মুত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা ও মা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাইয়ুমকে ভালোবাসি, আমাদের প্রেম খাঁটি ছিলো- এমন সুইসাইড নোট লিখে রুমা (১৬) নামের দ্বাদশ শ্রেণির এক কলেজশিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।  

গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে তালতলী থানা পুলিশ উপজেলার শিকারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মোল্লার বসতঘর থেকে তার কন্যা ও তালতলী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।

এ সময় পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। ওই ঘটনার পর থেকে প্রেমিক কাইয়ুম পলাতক রয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তালতলী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমা একই গ্রামের হাফিজুর রহমান হাওলাদারের পুত্র কাইয়ুমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক করে আসছিল। বিষয়টি উভয় পরিবার জানতে পেরে ওই সম্পর্ক ভেঙে দিতে উভয়কে চাপ দেয়। কিন্তু ওই সম্পর্ক না ভাঙতে এবং ওই ছেলেকে বিয়ে করতে অনড় থাকেন রুমা।  

এদিকে, রুমাকে বিয়ে দিতে পরিবারের লোকজন উঠেপড়ে লাগে। শনিবার বিকেলে রুমার জন্য পাত্র দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। পরিবারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি রুমা। ওইদিন সকালে প্রাইভেট পড়া শেষে তিনি বাড়িতে ফিরে এসে বাবা মায়ের সাথে ভাত খান। কিছুক্ষণ পরে রুমার বাবা-মা মাঠে ধান শুকানোর কাজে যান। ওই সুযোগে সুইসাইড নোট লিখে রুমা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বসতঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেন। বাবা-মা মাঠ থেকে ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে মেয়েকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন তারা বসতঘরের দোতালায় রুমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ ও একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ওইদিন বিকেলে পুলিশ তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেন।

সুইসাইড নোটে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা-মা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাইয়ুমকে ভালোবাসি, আমাদের প্রেম খাঁটি ছিলো। শুধু একদিন বাজার থেকে গাড়িতে করে বাড়িতে আসার পথে আমি কাইয়ুমের হাত ধরেছি। এছাড়া আমাদের ভেতরে আর কোনো সর্ম্পক হয়নি। ভালো থেকো বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

স্থানীয়রা জানায়, কলেজশিক্ষার্থী রুমা একই গ্রামের কাইয়ুম নামের একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে আসছিল। ওই সম্পর্ক উভয় পরিবার মেনে নেয়নি। রুমার পরিবার অন্য একটি ছেলের সাথে রুমাকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে অভিমান করে রুমা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত রুমার বাবা আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, আমার মেয়ে গলায় ওড়না পেছিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। কেন করেছে তা আমি জানি না?

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে