শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬, ০২:৩৪:১৮

জেএসসির পর এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেল বাবা রাজমিস্ত্রির জোগালি মরিয়ম

জেএসসির পর এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেল বাবা রাজমিস্ত্রির জোগালি মরিয়ম

নিউজ ডেস্ক : মোসাম্মৎ মরিয়মের বাবা রাজমিস্ত্রির জোগালি। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। তবু দমে যায়নি মেয়েটি। এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

মরিয়মের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার নলী গ্রামে। বাবা আলমগীর হোসেন। কাজ থাকলে দিনে ২৫০ টাকা পান। তাই দিয়ে পাঁচজনের সংসার চালান। মরিয়ম নিম্ন মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পায়।

এরপরও দারিদ্র্যের কারণে বাবা তাকে আর না পড়িয়ে বিয়ে দিতে চান। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আলমগীরের মনোমালিন্য হয়। রাগ করে মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি যান রাজিয়া। তিন মাস বন্ধ থাকে মরিয়মের পড়াশোনা।

পরে মরিয়মের স্কুলের শিক্ষক জান্নাতুন নাহার তাঁর বাড়িতে যান। তিনি মরিয়মকে বিনা বেতনে পড়ানোর কথা বলে স্কুলে নিয়ে যান। সেই মরিয়ম এবার বরগুনা সদর উপজেলার নলী মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

মরিয়ম বলে, ‘কোনো দিন এক বেলা কোনো দিন দুই বেলা না খাইয়্যা স্কুলে গেছি। স্যারেরা বিনা পয়সায় পড়াল্যাহা করাইছে। ভালো ফল অইছে কিন্তু হ্যাতে লাভ অইবে কী! আমার বাপের তো সাধ্য নাই কলেজে পড়ানোর। কলেজে ভর্তি, বইপত্র কত্তো খরচ!’

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কত্তো কষ্ট অইলে বাবা তার সন্তানরে বোঝা মনে করে! সবাই কয় তোমার মাইয়্যা ভালো রেজাল্ট করছে মিষ্টি খাওয়াও। আমি লজ্জা পাই। মানষে জিজ্ঞাস করে মাইয়্যারে পড়াবা কোন কলেজে। আমি জবাব দেতে পারি না।’

মরিয়মের বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন নাহার বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা দিয়ে মেয়েটিকে এই পর্যন্ত এনেছি। এখন সমাজের সবার উচিত ওর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।’ -প্রথম আলো
১০ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে