যশোরের কেশবপুরে শিশুকে (৯) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ধর্ষণ চেষ্টায় চিৎকার করায় নাক-মুখ চেপে ধরে হত্যা করে নানা (শিশুটির বাবার মামা) ইসমাইল হোসেন। এরপর ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে দেয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
সোমবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন (৩২)।
তিনি কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল সরদারপাড়ার কালাচাঁদ সরদারের ছেলে। তাকে রোববার রাতে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জবানবন্দিতে ইসমাইল জানিয়েছেন, শিশুটির পিতা জাহিদুল ইসলাম তার নানার বাড়িতেই বসবাস করেন। জাহিদুল ইসলাম সন্দিগ্ধ অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেনের আপন ভাগ্নে এবং শিশুটি তার নাতনি। অর্থাৎ আসামি ও ভিকটিম সম্পর্কে নানা-নাতনি।
গত ২১ নভেম্বর বিকাল ৫টার দিকে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন তার অসুস্থ পিতাকে দেখার জন্য জাহিদুলের বাড়িতে আসেন। ওই সময় বাদীর মেয়ে বসতঘরে একা বসে টিভি দেখছিল। অভিযুক্ত ইসমাইল ঘরে প্রবেশ করে শিশুকে ঘরের ভেতর একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন শিশুটি (৯) চিৎকার দিতে গেলে অভিযুক্ত ইসমাইল ভিকটিমের নাক-মুখ চেপে ধরে। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত ইসমাইল তখন ঘটনাকে ভিন্ন রূপ দেওয়ার জন্য ঘরে থাকা ওড়না গলায় পেঁচিয়ে শিশুকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। পরবর্তীতে সে কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, গত ২১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশুর নিজ ঘরের বাঁশের আড়ার সঙ্গে তার ব্যবহৃত ওড়নায় ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ওই দিন কেশবপুর থানার অপমৃত্যু মামলা হয়। পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ভিকটিমের পিতা জাহিদুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা আসামি করে কেশবপুর থানার মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মামলাটি পিবিআই তদন্ত শুরু করে। রোববার রাতে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সহায়তায় কলাপাড়া থানা এলাকা থেকে ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সোমবার তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।