রবিবার, ০১ মে, ২০২২, ১১:২৭:৫০

মাত্র ১ টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই!

মাত্র ১ টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই!

এমটি নিউজ ডেস্ক : এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ, এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে নেওয়া হবে মাত্র ১ টাকা! কৃষক বাঁচাতে এমনই উদ্যোগ নিয়েছেন খুলনা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. সফিকুর রহমান পলাশ। এ লক্ষ্যে তিনি কৃষকদের মাঝে ধান কাটা ও মাড়াই করার মেশিনও বিতরণ করেছেন।

এই মেশিনের সাহায্যে খুলনার তেরখাদার আজগড়া বিলের চার হাজার বিঘা জমির ধান কাটবেন কৃষকরা। প্রতি বিঘার জন্য এই টোকেন অর্থ এক টাকা করে দিতে হবে কৃষকদের।

নগর যুবলীগের আহ্বায়ক পলাশ এর আগে কৃষকদের মাঝে নিজ জমির (৩০ বিঘার) ধান বিলি করে দিয়েছিলেন।

খুলনা মহানগর শাখার যুবলীগ নেতারা বলেন, ধান উৎপাদনে বরাবরই এগিয়ে থাকেন খুলনার কৃষকরা। কিন্তু গত দুই বছর ধরে কৃষি শ্রমিক না পাওয়া এবং কৃষি সরঞ্জামসহ জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ধান মাড়াই ও কাটতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। আবার উৎপাদন খরচ বাড়লেও ধানের মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের।

এ অবস্থায় কৃষকের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ খুলনা মহানগর শাখা। বিনামূল্যে তারা কৃষকদের ধান মাড়াই ও কাটার মেশিন বিতরণ করে আসছেন। 

বিগত বছরের মতো এ বছরও তেরখাদায় কৃষকদের মাঝে ধান কাটার মেশিন ও মাড়াই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। ফলে কৃষকদের আগে যেখানে এক বিঘা জমির ধান কাটতে ও মাড়াই করতে এক হাজার টাকা খরচ করতে হতো, এখন সেখানে মাত্র এক টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করা যাবে।

তেরখাদার আজোগড়া বিলের চার হাজার বিঘার জমির মালিক পাঁচশ কৃষক ফসল কাটতে এই যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবেন।

আজোগড়া এলাকার কৃষক আলাল মোল্লা বলেন, গত কয়েক বছর করোনার কারণে ধান কাটার শ্রমিক পাইনি। কালবৈশাখী ঝড়ে ধান নষ্ট হয়ে যেত আমাদের। 

মেশিন দিয়ে ধান কাটতে গেলে যে খরচ হয় তা ধান বিক্রি করে ওঠে না। আমাদের লোকসান হতো। যুবলীগের এই ধরনের উদ্যোগে আমাদের অনেক লাভ হবে।

অপর কৃষক শুনু গাইন বলেন, আমার সাড়ে সাত বিঘা জমি। গত বছর ধান কাটতে ও মাড়াই করতে খরচ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার টাকা। এর সঙ্গে বীজ, সেচ, সার, কীটনাশক খরচ, যানবহন খরচ যোগ করলে যে উৎপাদন মূল্য হয় তা আমরা বাজরে পাই না। ফলে ধানচাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল আমাদের। এখন আমাদের কিছুটা লাভ হবে।

তিনি আরো বলেন, আগে একমণ ধান উৎপাদন খরচ হতো ৭৫০ টাকার মতো। সেখানে বাজারে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ বিক্রি হলে আমাদের কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু বাজারে ধানের মূল্য সাড়ে আটশ টাকার বেশি হয় না। 

বাড়ি বাড়ি এসে যারা ধান কেনে তারা দিতে চায় ৭০০ টাকা মণ। আজ যুবলীগের দেওয়া কৃষি সরঞ্জাম আমাদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভের মুখ দেখাবে।

এ বিষয়ে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, কৃষি আমাদের প্রধান পেশা। খুলনা অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। 

এ কারণেই আমরা করোনার সময় থেকে প্রতি বছরই কৃষকের উপকারে কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ করে আসছি। সেজন্য শনিবার খুলনার তেরখাদার আজোগড়ায় কৃষকদের মাঝে ধান মাড়াইয়ের মেশিন ফুকো কল যার মূল্য দুই লাখ ষাট হাজার টাকা ও ধান কাটা মেশিন এসক্রাব মেশিন যার মূল্য এক লাখ পঁচিশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রলীগ নেতা জহির আব্বাস, ইয়াসিন আরাফাত, মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল, মেহেদী হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিয়েল শেখসহ আরো অনেকে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে